ভারত একদিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চলমান সম্পর্ককে ভালো করতে চাইছে। অন্যদিকে, সীমান্তের শূন্যরেখায় কাঁটা তারে বেষ্টনী দিচ্ছে। ফলে উত্তেজনা ও সম্পর্কের টানাপড়েন নতুন এক মোড় নিতে যাচ্ছে কি?
আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দিল্লির সঙ্গে ঢাকার সম্পর্ক ভালো করতে হলে ভারতকেই আগে এগিয়ে আসতে হবে। এখানে বাংলাদেশের দিক থেকে আগ বাড়িয়ে কিছু করার নেই। প্রতিবেশী দেশের বন্ধুত্বের শর্ত মানতে হবে প্রত্যেককেই।
৫ আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশের মানুষের ভারত বিরোধী মনোভাব জোরালভাবে প্রকাশ পেতে থাকে। সেই পালে হাওয়া দেয় ভারতীয় গণমাধ্যমের নানা মিথ্যা ও অতিরঞ্জিত সংবাদ। পাশাপাশি দুই দেশের রাজনীতিবিদদের পাল্টাপাল্টি বক্তব্য আবার সীমান্তে কাঁটাতারের বেষ্টনি নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি করেছে।
আপাতদৃষ্টিতে বিভিন্ন ইস্যুতে গত পাঁচ মাসে দুই দেশের সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে বলেই মনে হচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্ক কি আসলেই অবনতি হয়েছে? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাংলাদেশ বরাবরই বন্ধু। রাষ্ট্রের সকল শর্তই মেনে এসেছে। বরং নিজেদের স্বার্থরক্ষার ক্ষেত্রে অনেক সময় নমনীয় ছিল। এখন দিল্লিতে পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে হবে।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক অধ্যাপক ড. ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘যেহেতু একটা বড় ধরনের সমালোচনা আছে যে বিগত সরকারের সময় যে সব চুক্তিগুলো হয়েছে, সেটা একতরফা হয়ে। সেটা বাংলাদেশ আমার মনে হয় গবেষণা করে রীতিমতো বার করা। সেই হোম ওয়ার্ক যত তাড়াতাড়ি করা যায় তাহলে দিল্লি ও বুঝতে পারবে যে, হ্যাঁ, এই ব্যাপারে একতরফা হয়েছে এবং পরিবর্তনটা কি হতে পারে?’
তিনি বলেন, ‘যখন দিল্লি একটা কোর্স কারেকশন করে একটা জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক হবে কোনও বিশেষ দলের সাথে না। সেটা কিন্তু তারা কিছুটা বুঝতে চেষ্টা করেছে যখন তাদের পররাষ্ট্রসচিব এসেছে এই বৈরী সম্পর্ক রেখে বিশেষ কিছু গোষ্ঠী লাভ হতে পারে। কিন্তু সাধারণ মানুষের লাভ হবে না।’
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিশ্লেষক সাহাব এনাম খান বলেন, ‘মিডিয়া ডোমেস্টিক পলিটিক্সের জন্য ভালো। কিন্তু ডোমেস্টিক পলিটিক্স এর বাইরে রিজিওনাল পলিটিকস বলেন, গ্লোবাল পলিটিক্স বলেন সে সব জায়গায় হাস্যস্পদ একটা এন্ট্রি হিসাবে পরিণত করেছে। সবকিছু মিলিয়ে ভারতের পক্ষ থেকেই বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে জোরদার করতে হবে। কারণ, বাংলাদেশের কাছে থেকে এমন কিছু পায়নি, যেটার জন্য ভারতের অস্বস্তি তৈরি হতে পারে।’
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারতে পালিয়ে আশ্রয় নেওয়া এবং আওয়ামী লীগকে নিঃশর্তভাবে অন্যায় সমর্থন দেওয়া সম্পর্কের অবনতির মূল কারণ। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দিল্লি এখন ঢাকার সেঙ্গে সম্পর্ক ভালো করতে চাইছে।
সূত্র: ৭১টিভি। https://www.youtube.com/watch?v=ye1v9wUy-PE