ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৮ মাঘ ১৪৩১

অর্থনীতি বিভাগের সব খবর

মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা নীতি

মার্কিন বৈদেশিক সহায়তা নীতি

ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দ্বিতীয়বার হোয়াইট হাউসে প্রবেশের প্রথম দিকেই তাঁর প্রশাসন প্রায় সব বিদেশী সহায়তা কর্মসূচি স্থগিত করেছে। এই সিদ্ধান্ত সামগ্রিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের বৈদেশিক সহায়তা পর্যালোচনা ও সম্ভবত সংস্কারের পরিকল্পনারও ইঙ্গিত। প্রাথমিক কাটছাঁট ও স্থগিতাদেশের অংশ হিসেবে হোয়াইট হাউস বাংলাদেশেও যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত সব    প্রকল্প অবিলম্বে বন্ধ বা স্থগিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। প্রাথমিকভাবে এই সহায়তা স্থগিতাদেশ ৯০ দিনের জন্য কার্যকর থাকবে। তবে সহজেই অনুমেয় যে, এটি দীর্ঘায়িত হতে পারে। কারণ, ট্রাম্প প্রশাসনের বৈদেশিক সহায়তার প্রতি অনীহা রয়েছে এবং ৯০ দিনের মধ্যে সব সহায়তা কর্মসূচির বিস্তৃত পর্যালোচনা সম্ভব হবে না। তবে কক্সবাজারে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমার থেকে আসা বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের জন্য দেওয়া সহায়তা এই স্থগিতাদেশের আওতার বাইরে রাখা হয়েছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রপন্থি আন্দোলনকারীরা গত বছর সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করেছে এবং অন্তর্র্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূস সত্যিকার অর্থেই সংস্কার ও পুনর্গঠনে নিবেদিত। এখন সহায়তা বন্ধ হলে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ সাফল্যকে বাধাগ্রস্ত করতে পারে। উল্লেখ্য, বিদেশে মার্কিন সহায়তা স্থগিত করতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের প্রভাব অন্যান্য  দেশের মতো বাংলাদেশেও পড়তে শুরু করেছে। ইতোমধ্যেই দেশটির অর্থায়নে চলমান প্রকল্পের কাজ বন্ধ বা স্থগিত করা হয়েছে, কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মীদের হোম অফিস করার নির্দেশ দিয়েছে বলে জানা  গেছে। কর্মসূচির ব্যাপ্তি ও বিপুল কর্মী সংখ্যার কারণে বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি ও অলাভজনক উন্নয়ন সংস্থা হিসেবে পরিচিত ব্র্যাক। বাংলাদেশভিত্তিক সংস্থাটির কাজ রয়েছে বিশ্বের কয়েকটি  দেশে। যুক্তরাষ্ট্রের  ঘোষণার পর বাংলাদেশসহ  মোট চারটি দেশে নয়টি কর্মসূচি স্থগিত করেছে সংস্থাটি। ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক বলেছেন, বাংলাদেশে মার্কিন অর্থায়নের ছয়টি প্রকল্প স্থগিত করেছেন তারা। ‘এর মধ্যে তিনটি প্রজেক্ট সরাসরি আমরা বাস্তবায়ন করি, তিনটি অন্য এনজিও দিয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছিল। এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়া, আফগানিস্তান ও লাইবেরিয়াতে ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের চলমান তিনটি প্রজেক্টও আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। ‘ডাইভারসিটি ইনক্লুশনের (বৈচিত্র্যের অন্তর্ভুক্তি) প্রজেক্ট থাকলে বন্ধ করতে বলা হয়েছে। আমাদের নির্দিষ্টভাবে ডাইভারসিটি ইনক্লুশনের  প্রোগ্রাম নাই। ফলে একেবারে বন্ধ বা বাতিল করতে হয়নি। কিন্তু ডিরেক্ট ফান্ডের প্রজেক্টগুলো আপাতত স্থগিত রাখতে হয়েছে। এসব প্রকল্প থমকে যাওয়ার কারণে অন্তত পঁয়ত্রিশ লাখ মানুষ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন বলে জানান তিনি। ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক মনে করেন, যদি পর্যালোচনার পর প্রকল্পগুলো স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায়, সেটি ছোট এনজিওগুলোর জন্য একটা বড় ধাক্কা হবে। যুক্তরাষ্ট্রের তহবিলের ওপর নির্ভরশীল আরেকটি উন্নয়ন সংস্থার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, তাদের দুটি প্রকল্প আপাতত বন্ধ রাখা হয়েছে। বিশ্বজুড়ে বৈদেশিক সহায়তায় পরিমাণের দিক থেকে যুক্তরাষ্ট্রের অবদান সর্বোচ্চ। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের বৈদেশিক সহায়তা সংক্রান্ত ওয়েবসাইটের তথ্য বলছে, ২০১৮ সাল  থেকে বাংলাদেশকে প্রতি বছর দেওয়া সহায়তার পরিমাণ ৫০০ মিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি। এর আগের বছরগুলোতে আড়াইশ’  থেকে তিনশ’ মিলিয়ন ডলারের মার্কিন সহায়তা পেয়েছে বাংলাদেশ। সর্বশেষ ২০২৪ সালে এই সংখ্যাটা প্রায় ৪৯০ মিলিয়ন ডলার। ইউনাইটেড স্টেটস্ এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল  ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএইড)-এর তথ্য বলছে, এই অর্থ  যেসব খাতে ব্যবহৃত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে খাদ্য নিরাপত্তা ও কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, গণতন্ত্র ও শাসন ব্যবস্থা, পরিবেশ ও জ্বালানি এবং মানবিক সহায়তা। অর্থনৈতিক দিক থেকে বাংলাদেশকে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের তৈরি পোশাক শিল্পের বৃহত্তম বাজার। কিন্তু ট্রাম্পের প্রশাসনের  লেনদেনভিত্তিক নীতির ফলে বাণিজ্য শর্তাবলিতে পরিবর্তন আনার আশঙ্কা রয়েছে। যদি মার্কিন বাজারে প্রবেশাধিকার বা শুল্কনীতি রাজনৈতিক শর্তের ওপর নির্ভরশীল হয়, তবে এটি বাংলাদেশের রপ্তানি খাতকে অস্থিতিশীল করতে পারে। এ পরিস্থিতি বাংলাদেশের জন্য নতুন বাণিজ্য অংশীদার খুঁজে বের করার একটি সুযোগ হতে পারে, তবে এটি বাস্তবায়ন করতে সময় এবং  কৌশলের প্রয়োজন। আর্থিক এবং  কৌশলগত সম্পর্কগুলো পুনর্গঠন করা এবং বিকল্প আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। বাংলাদেশকে অবশ্যই উন্নয়ন নীতিতে দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন আনতে হবে, যাতে কোনো একক দাতা দেশের ওপর নির্ভরতা কমে আসে। একই সঙ্গে, যুক্তরাষ্ট্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক বজায় রাখা এবং তাদের শর্তের সঙ্গে ভারসাম্য রক্ষা করা হবে বাংলাদেশের জন্য একটি কঠিন কিন্তু অপরিহার্য পদক্ষেপ। উন্নয়ন, কূটনীতি এবং কৌশলগত সিদ্ধান্তের এই চ্যালেঞ্জিং পরিবেশে বাংলাদেশের নেতৃত্বের দায়িত্ব হবে দেশের স্বার্থকে রক্ষা করা, বৈশ্বিক প্রভাবের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা এবং দেশের আর্থ-সামাজিক স্থিতিশীলতার জন্য দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করা। এই প্রক্রিয়া জটিল হলেও, সঠিক পরিকল্পনা ও কার্যকর বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের জাতীয় স্বার্থকে সুরক্ষিত  রেখে এই প্রতিকূলতাকে সম্ভাবনায় রূপান্তর করতে সক্ষম হবে।

ফুল বাণিজ্য

ফুল বাণিজ্য

বিশুদ্ধতার প্রতীক ফুল। প্রকৃতির চারপাশে প্রতিনিয়ত ফোটে নানা জাতের ফুল। রজনীগন্ধা, গোলাপ, চন্দ্রমল্লিকা, হাসনাহেনা, বেলি, গাঁদা বিভিন্ন নামের পরিচিত ফুলের পাশাপাশি বিদেশী ফুলও এখন দেশের মাটিতে ফোটে। বিদেশী ফুলের মধ্যে চাহিদার প্রথমেই রয়েছে দৃষ্টিনন্দন টিউলিপ ফুল। তবে বিক্রির দিক থেকে গোলাপ সবার আগে। ফুলের রানী বলে কথা! এ ছাড়া ফুলের দোকানে গ্লাডিওলাস, জিপসি, চায়না গোলাপ, কসমস, চেরিসহ আরও কয়েক জাতের ফুল বিক্রি হতে দেখা যায়। সারা বছর দিবস ছাড়াও বিয়ে, জন্মদিন, পার্টি বা যে কোনো আনন্দ আয়োজনে ফুলের বাণিজ্য থাকে রমরমা। রাজনৈতিক প্রোগ্রাম ও অন্যান্য অনুষ্ঠান ফুল ছাড়া প্রায় অচল। এক সময় ফুল কেবল শৌখিন মানুষের বাগানে বা টবে চাষ হতো। শখ করেই ফুলগাছ রোপণ করত। সেই শখ এখন অর্থ উপার্জনেরও পথ তৈরি করেছে। অর্থাৎ ফুল এখন একটি অর্থকরী ফসল। যা অবদান রাখছে দেশের অর্থনীতিতে। দেশের গণ্ডি পার হয়ে ফুল যাচ্ছে বিদেশেও। ফুলের চাহিদা বাড়ায় সারাদেশে ফুলের দোকানের সংখ্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। তরুণ প্রজন্মও ঝুঁকছেন ফুল চাষ ও বিপণনে। বিদেশে রয়েছে ফুলের বিশাল বাজার। তাই ফুলের রপ্তানি বাড়াতে সক্ষম হলে সংশ্লিষ্ট অর্থনীতি হবে আরও বিস্তৃত। ইতোমধ্যে আমাদের ফুল মধ্যপ্রাচ্য, মালয়েশিয়া, ব্রিটেন, পাকিস্তান, ভারত, ইতালি, চীন, সিঙ্গাপুর, রাশিয়া ও ফ্রান্সে রপ্তানি হচ্ছে। বছরের অন্য সময়ের তুলনায় বসন্ত এলেই ফুলের বাজার হয় চাঙ্গা। এ ছাড়াও ডিসেম্বর থেকে মার্চ এই চার মাসে বিভিন্ন দিবস থাকায় ফুলের ব্যবহার বাড়ে ব্যাপকভাবে। বসন্ত, ভালোবাসা দিবস এবং আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে পাড়া-মহল্লাতেও অস্থায়ীভাবে গড়ে উঠে ফুলের দোকান। বর্তমানে ফুল বিক্রি করেই চলে বহু মানুষের জীবন ও জীবিকা। সে কারণেই ফুল এখন পরিণত হয়েছে একটি শিল্পে। বছরে প্রায় ৮০০ কোটি টাকার ফুল দেশে উৎপাদন হচ্ছে। আমরা জানি, ফুলের রাজধানী হিসেবে পরিচিত পেয়েছে গদখালী ইউনিয়ন। যা বাংলাদেশের যশোর জেলার ঝিকরগাছা উপজেলার অন্তর্ভুক্ত। এই ইউনিয়নে ১৯৮২ সালে বাণিজ্যিকভাবে ফুল চাষ শুরু হয়। বর্তমানে দেশের মোট ফুলের ৭০ শতাংশ উৎপাদন হয় গদখালীতে। যা থেকে বছরে আয় হচ্ছে প্রায় ৫শ’ কোটি টাকা। ডিসেম্বর-জানুয়ারিতে উৎপাদন হয় বেশি। আর ফেব্রুয়ারিতে বিক্রয় বেশি। চলতি মাস উপলক্ষে ফুল চাষে সরব হয়ে উঠেছেন গদখালীর ফুলের চাষিরা। কারণ হাতে রয়েছে আর মাত্র কয়েক দিন। এ তিন দিবসে অন্তত শত কোটি টাকার ফুল বিক্রির আশা করছেন স্থানীয় চাষিরা। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, যশোরে প্রায় ৬০০ হেক্টর জমিতে ফুলের চাষ হয় এবং এ ব্যবসার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে লক্ষাধিক মানুষ জড়িত। আসন্ন বসন্ত, ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ব্যাপক ফুল বিক্রি হলে চাষিদের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতি হবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন। নাভারণ ও পানিসারা ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে রয়েছে নানা জাতের ফুল। এই অঞ্চলের কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে চাষ করছে গোলাপ, জারবেরা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, গাঁদা, লিলিয়াম, জিপসি, চন্দ্রমল্লিকাসহ অন্তত ১৩ ধরনের ফুল। হঠাৎ গরম পড়ায় ফুল ফুটে যাওয়ায় বাজারে ফুলের জোগানও বেশি। অন্যান্য ফুলের দাম কিছুটা কম হলেও ঊর্ধ্বমুখী গোলাপের দাম। মাত্র দুদিনের ব্যবধানে ফুলের দাম বেড়েছে দ্বিগুণ। যে গোলাপ বিক্রি হয়েছে ৫ টাকা দরে। আজ সেই গোলাপ বিক্রি হচ্ছে ৮ খেকে ১০ টাকায়। জারবেরা প্রতি পিস প্রায় ১০ টাকা, রজনীগন্ধা স্টিক প্রতি পিস ৮ থেকে ১০ টাকা, জিপসি আঁটি প্রতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, গাঁদা প্রতি হাজার ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা, গ্লাডিওলাস রং ভেদে ৮ থেকে ১২ টাকা, চন্দ্রমল্লিকা প্রতি পিস প্রায় ৫ টাকা বিক্রি হচ্ছে। তবে উৎসব যত ঘনিয়ে আসছে ফুলের দাম ততই বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবে, ২০২২ সালে ৩২ হাজার টনের বেশি ফুল ফুটেছে আমাদের দেশে। বাংলাদেশ ফ্লাওয়ার্স সোসাইটির তথ্য বলছে, দেশে দেড় হাজার কোটি টাকার ফুলের বাজার রয়েছে। দেশের ফুলের চাহিদার বেশিরভাগ আসে যশোর ও ঝিনাইদহ জেলা থেকে। যশোরের গদখালী তো ফুলের জন্যই ব্যাপক পরিচিত এলাকা। তবে ফুল চাষ, সংরক্ষণ ও বিপণনে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধান করতে পারলে এ বাজার আরও সম্প্রসারণ করা সম্ভব। সার্বিকভাবে ফুল শিল্পের বিকাশের অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে- ফুল চাষ ধান ও শাকসবজির তুলনায় অনেক বেশি লাভজনক। এ ছাড়াও ফুলের চাহিদার ব্যাপক বৃদ্ধি, হেক্টরপ্রতি অধিক লাভ, ফুলের নতুন জাত ও প্রযুক্তি গ্রহণ, অর্থনৈতিক উন্নতি, অন্যান্য জেলায় ফুলের চাষ বৃদ্ধির সুযোগ এবং মানুষের মধ্যে ফুল ক্রয়ের অভ্যাস ও উৎসাহ বেড়ে যাওয়া। ঢাকার শাহবাগ ও আগারগাঁওয়ে পাইকারি ফুলবাজার রয়েছে। এখান থেকে খুচরা বিক্রেতারা ফুল কিনে ঢাকা শহরে ছড়িয়ে পড়েন। কেন্দ্রীয় ফুলবাজার নির্মাণের দাবি বহু আগে থেকেই করে আসছেন ফুল বিক্রেতারা। ফুল উৎপাদন আরো বাড়াতে হলে প্রযুক্তির ওপর ব্যাপক প্রশিক্ষণের আয়োজন করতে হবে, ফুলের বীজ ও চারা আমদানির ওপর শুল্ক মওকুফ, ঢাকাসহ বড় বড় শহরে ফুলের স্থায়ী পাইকারি বাজার স্থাপন, পরিবহনকালে ফুল জাতে বিনষ্ট না হয় তার জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত পরিবহন ব্যবস্থা চালু, যশোরে ফুলের জন্য বিশেষায়িত হিমাগার স্থাপন এবং দক্ষিণাঞ্চলের ফুল উৎপাদনকারী এলাকাগুলোতে বাজারের অবকাঠামোগত উন্নয়ন করা দরকার। এ ছাড়াও বাংলাদেশ ব্যাংক, বেসরকারি ব্যাংক ও ক্ষুদ্র ঋণদান সংস্থা কর্তৃক ঋণের সুযোগ বৃদ্ধি এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে একটি জাতীয় ফুলনীতি প্রণয়ন একান্ত প্রয়োজন।

আমদানি নির্ভরতা কমাবে সরিষা

আমদানি নির্ভরতা কমাবে সরিষা

রবিশস্যখ্যাত রঙিন ফসল সরিষা। এখন ভরা মৌসুম। গ্রামে গেলেই চোখে পড়বে সবুজ মাঠজুড়ে হৃদয়কাড়া হলুদের অপরূপ শোভা। সরিষা সবচেয়ে রঙিন ফসল। সরিষার রঙিন হলুদ ফুল প্রকৃতির সবুজ মাঠকে রাঙিয়ে দেয় হলুদের রঙে। শীত প্রধান বাংলাদেশে সরিষার ফলন হয় ব্যাপক। খেতের আলে আলে আঁকাবাঁকা পথ ধরে হলুদ-সবুজের অবারিত প্রান্ত শহরের নাগরিকদের হাতছানি দিয়ে ডাকে। গ্রাম প্রেমিক মানুষেরা শীতকালে গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে গেলে সরিষা খেতে গিয়ে ছবি তোলেন। প্রকৃতির নির্মল বাতাসে ভেসে আসে সরিষা ফুলের মাতাল করা ঘ্রাণ। যা দুর্নিবার কাছে টানে মৌমাছি ও প্রজাপতিদের। দেশে তেলবীজ হিসেবে সরিষা ব্যবহারের ইতিহাস অনেক প্রাচীন। এই ফসলটির বিশেষত্ব হলোÑ সরিষা খেতে হলুদ রঙিন ফুলে ছুটে আসে রঙিন প্রজাপতি। এরা যেন প্রকৃতির এই সৌন্দর্যকে আরও ঐশ্বর্যমণ্ডিত করে তোলে। সেই সঙ্গে এই মৌসুমে সরিষার জমিতে মৌমাছি চাষিরা সারি করে মৌ-বক্স রাখে জমির পাশে। তাদের উদ্দেশ্য মৌমাছির মাধ্যমে মধু আহরণ। সরিষা বীজ থেকে উৎপাদিত তেল রান্নার কাজে ব্যবহার করা যায়। এ তেল চাটনিতেও ব্যবহৃত হয়। শিশুসহ সব বয়সী মানুষের শরীরে সরিষা তেল ব্যবহার করা যায়। এ ছাড়া এর কচি পাতা ও ডগা শাক হিসেবে অনেকেই খেয়ে থাকেন। আর সরিষাবাটা ইলিশ মাছের সঙ্গে রান্না দেশের কৃষ্টির অংশ। সরিষা আবাদে শস্য নিবিড়তার কারণে কৃষকরা চাষে আগ্রহী হচ্ছেন। এ ছাড়াও  সরিষার জমি থেকে মধু সংগ্রহের জন্য কৃষকরা উৎসাহিত হচ্ছে। এতে অতিরিক্ত ১৫ ভাগ ফলন পাওয়ার পাশাপাশি কৃষক বেশি লাভবান হয়। সরিষা ছাড়াও সয়াবিন, সূর্যমুখী, তিল, বাদামসহ নানা ধরনের তেলবীজ হয় দেশে। ধানের কুঁড়ার তেল সম্ভাবনা জাগিয়েও ডানা মেলতে পারেনি সেভাবে। তবে সরিষা চাষের আওতা আর উৎপাদন দুটোই দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার পাশাপাশি নতুন জাত লাভবান করছে চাষিরা। দেশে সরিষা উৎপাদন দুই বছরের ব্যবধানে প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। বেড়েছে সরিষা তেল উৎপাদনও। ফলে দাম কমে আসায় ভোজ্যতেল হিসেবে সরিষার ব্যবহার বাড়ছে প্রতিনিয়ত। সরিষার তেল উৎপাদন ও বিপণনে যুক্ত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানও। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য উঠে এসেছে। কয়েক বছর আগে দেশে সরিষা তেলের দাম সয়াবিনের প্রায় দ্বিগুণ ছিল। বর্তমানে খোলা সরিষা তেল ও খোলা সয়াবিন তেলের দাম কাছাকাছি। ফলে ভোজ্যতেল হিসেবে সরিষার ব্যবহার আগের চেয়ে বেড়েছে। দেশে বছরে ভোজ্যতেলের চাহিদা রয়েছে প্রায় ২৪ লাখ টন। এর মধ্যে সরিষা, তিল ও সূর্যমুখী থেকে স্থানীয়ভাবে উৎপাদন হয় মাত্র ৩ লাখ টন, যা চাহিদার শতকরা ১২ ভাগ। বাকি ভোজ্যতেল আমদানি করতে হয়। সে জন্য ভোজ্যতেলের আমদানি নির্ভরতা কমাতে ৩ বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। ভোজ্যতেলের চাহিদার শতকরা ৪০ ভাগ স্থানীয়ভাবে উৎপাদন করতে ৩ বছর মেয়াদি কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছে কৃষি মন্ত্রণালয়। এর অংশ হিসেবে প্রথম ১ বছরে দেশে সরিষার আবাদ বেড়েছে ২ লাখ হেক্টর জমিতে এবং উৎপাদন বেড়েছে ৩ লাখ ৩৫ হাজার মেট্রিক টন। তেল হিসেবে বিবেচনা করলে ১ লাখ ২১ হাজার মেট্রিক টন তেল বেশি উৎপাদিত হয়েছে। আর প্রতি লিটার তেলের  মূল্য ২৫০ টাকা করে হিসাব  করলে ১ বছরে উৎপাদন বেড়েছে প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকার। সরিষা উৎপাদনে ১১তম বাংলাদেশ ॥ বিশ্ব সরিষা উৎপাদন ইনডেক্স অনুযায়ী বাংলাদেশের অবস্থান একাদশতম। ইনডেক্স মুন্ডির তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে বৈশ্বিক সরিষা বীজ উৎপাদনে শীর্ষস্থানে রয়েছে কানাডা। সম্মিলিতভাবে পরের অবস্থানটি দখল করে রয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত (ইইউ-২৭) দেশগুলো। তৃতীয় স্থানে রয়েছে চীন। এ ছাড়া চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে রয়েছে যথাক্রমে ভারত ও ইউক্রেন।

চা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শঙ্কা

চা উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা পূরণে শঙ্কা

বিগত বছরে আবহাওয়ার বিরূপ প্রভাব, শ্রমিক ধর্মঘটে উৎপাদন বন্ধ ও ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় চা উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত না হওয়ার আশঙ্কা করছেন চা বাগান মালিকরা। অপরদিকে জ্যামিতিক হারে চায়ের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধি পেলে ও নিম্ন মানের চা উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় কাক্সিক্ষত পরিমাণ চা রপ্তানি হয়নি। ফলে ধীরে ধীরে সঙ্কুচিত হচ্ছে চায়ের রপ্তানি বাজার। এই বাজার ধরে রাখতে চা বোর্ড বিভিন্ন ধরনের চা উৎপাদন করছে যেমন : ব্ল্যাক টি, গ্রিন টি, মাসালা টি, জিনজার টি, লেমন টি, তান্দুরি টি ও হোয়াইট টি ইত্যাদি। জানা যায়, দেশের ১৬৯টি চা বাগানের মধ্যে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট, চট্টগ্রাম ও ক্ষুদ্রায়তনের বান্দরবান, খাগড়াছড়ি এবং পঞ্চগড় জেলা মিলে ৫৯ হাজার ১৮ হেক্টর জমিতে চা উৎপাদন করা হয়। এর মধ্যে কেবল মৌলভীবাজার জেলায় রয়েছে ৯০টি চা বাগান। ২০২৩ সালে চা শিল্পে ১৮৪ বছরের উৎপাদনে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি করলেও সদ্য বিদায়ী ২০২৪ সালে লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হয়নি। ২০২৩ সালে ১৬৮টি চা-বাগান ও ক্ষুদ্রায়তন চা-চাষিদের হাত ধরে ১০ কোটি ২৯ লাখ ১৮ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে। কিন্তু গত বছর জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র ৮ কোটি ৬৬ লাখ ৫১ হাজার কেজি চা উৎপাদিত হয়েছে, যা লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় অনেক কম। যদিও গত ডিসেম্বরের উৎপাদনের হিসাব এখনো সম্পন্ন হয়নি। চা বোর্ডের ধারণা, ডিসেম্বর মাসে ৮০ লাখ কেজি চা যোগ হতে পারে। এই ৮০ লাখ কেজি চা যোগ করা হলেও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ কোটি ১২ লাখ ৬৯ হাজার কেজি চা উৎপাদন কম হবে। চা শিল্প সংশ্লিষ্টরা জানান, বিরূপ আবহাওয়া বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে তীব্র খরা এবং মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রা চা উৎপাদনের জন্য প্রতিকূল ছিল। এ ছাড়া সার, সেচ ও কীটনাশকের উচ্চমূল্য এবং শ্রমিক ধর্মঘট চা উৎপাদনে প্রভাব ফেলেছে। উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি এবং নিলামে চায়ের কাক্সিক্ষত দাম না পাওয়ায় গত চা মৌসুমে উৎপাদন আশানুরূপ হয়নি। কাক্সিক্ষত উৎপাদন পেতে হলে দেশের চা শিল্পে শ্রমিক অসন্তোষ, খরচ বৃদ্ধি এবং বাজারমূল্যের সমস্যা দূর করতে প্রয়োজনীয় কার্যকর নীতি গ্রহণ করতে হবে। একই সঙ্গে উন্নত প্রযুক্তি ও গবেষণার মাধ্যমে উৎপাদন খরচ কমিয়ে আনার কোনো বিকল্প নেই বলে মন্তব্য করেছেন চা সংশ্লিষ্টরা। এ বছর চায়ের উৎপাদন কম হওয়ায় চট্টগ্রাম ও শ্রীমঙ্গলে ৩০টি নিলাম বাজারে চা সরবরাহ কমেছে। এ বছর নিলামে প্রতি কেজি চায়ের গড় দাম ২১০ টাকা ৫৬ পয়সা। গত বছর ছিল ১৯২ টাকা। সরবরাহ কমে যাওয়ায় চায়ের দাম এবার কিছুটা বেড়েছে। গত বছর এক কেজি চায়ের উৎপাদন খরচ ছিল ২২৬ টাকা। এ বছর চা সংশ্লিষ্ট সব উপকরণের দাম বাড়ার কারণে উৎপাদন খরচ আরও বেড়েছে। একদিকে চায়ের উৎপাদন কমেছে, অপরদিকে বেড়েছে ব্যয়। তাই এ বছর বাগান মালিকদের লোকসানের মুখে পড়তে হবে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। ন্যাশনাল ব্লেকার্সের সিনিয়র ম্যানেজার অঞ্জন দেব বর্মণ জানান, নিলামে গত বছরের চেয়ে এ বছর চায়ের সরবরাহ কমেছে। তবে দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে চায়ের চাহিদা সাড়ে ৯ কোটি কেজি চা পাতা। যে পরিমাণ চা পাতা বাগানে উৎপাদিত হবে দেশের চাহিদা মেটাতে সক্ষম হবে। চা রপ্তানি কমে আসার বিষয়ে জানতে চাইলে এনটিসির তেলিয়াপাড়া চা বাগানের সিনিয়র ব্যবস্থাপক ও টি প্লান্টার রাহেল রানা বলেছেন, ইউরোপসহ বিশ^ বাজারে এখন অর্থডক্স ও গ্রিন টির চাহিদা বেশি। কিন্তু আমাদের দেশে প্রধানত ব্লাক টি বেশি উৎপাদন হয়। এ ছাড়া উৎপাদন বাড়াতে গিয়ে আমরা চায়ের গুণগত মানের দিক থেকে নজর ফিরিয়ে নিচ্ছি। পঞ্চগড়ের উৎপাদিত চা আমাদের সিলেটের চায়ের গড় মানের জন্য এখন হুমকি হয়ে দেখা দিয়েছে। ফলে চা রপ্তানিতে আমরা আশানুরূপ ফল পাচ্ছি না বলে তিনি মনে করেন। এম আর খান চা বাগানের স্বত্বাধিকারী হারুন চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশের চা রপ্তানির জন্য প্রধান বাধা গুণগত মানের ঘাটতি। দেশের উত্তরাঞ্চলীয় বাগানগুলোতে নিম্নমানের চা নিলাম বাজার ঘুরে রপ্তানিতে গিয়ে মার খাচ্ছে। তিনি বলেছেন, আমাদের আধুনিক চা উৎপাদন প্রযুক্তির অভাব রয়েছে। অপরদিকে, ভারতের মতো দেশ তাদের চা উৎপাদন প্রক্রিয়া আধুনিকীকরণ করে চায়ের গুণগত মান উন্নত এবং রপ্তানি বৃদ্ধি করতে পেরেছে। শ্রীলঙ্কা গত কয়েক বছর ধরে রাজনৈতিক অস্থিরতা ও অর্থনৈতিক সংকট থাকলেও রপ্তানি ক্ষেত্রে ভালো অবস্থান ধরে রেখেছে। বাজারজাতকরণের ক্ষেত্রে নতুন কৌশল গ্রহণ, ব্র্যান্ডিং, গবেষণা এবং উন্নয়নে বিনিয়োগ বাড়ানো প্রয়োজন। এতে চা রপ্তানি বৃদ্ধি ও বিশ^ বাজারে শক্ত অবস্থান প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব হবে। চা বোর্ড শ্রীমঙ্গল প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেছেন, বাংলাদেশে মানুষ বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে নানা প্রজাতীর কীটপতঙ্গের আবির্ভাব ঘটেছে। এসব কীটপতঙ্গ মোকাবিলায় যত্রতত্র রাসায়নিক ও কীটনাশক ব্যবহারও বেড়েছে। কিছু চা বাগান মালিকরা অধিক উৎপাদনের জন্য রাসায়নিক সার ব্যবহার বাড়িয়ে দিয়েছে। এতে উৎপাদন বাড়লেও চায়ের গুণগত মান হারাচ্ছে। সরকারি মালিকানাধীন ন্যাশনাল টি কোম্পানির (এনটিসি) ইন্ডিপেন্ডেন্ট ডিরেক্টর ও শ্রী গোবিন্দপুর চা হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মহসিন মিয়া মধু বলেছেন, হু হু করে চায়ের উৎপাদন খরচ বাড়ছে। সরকারিভাবে চায়ের দাম ১৬০ টাকা ন্যূনতম নির্ধারণ করে দেওয়া হলেও বাগান মালিকদের এক কেজি চা তৈরিতে খরচ পড়ে ২০০ থেকে ২২০ টাকা। সেখানে নিলামে চা বিক্রি করতে হয় ১৮০ থেকে ২০০ টাকা দরে। এতে উৎপাদন খরচই উঠছে না। ফলে ছোট ছোট চা বাগান মালিকদের টিকে থাকা নিয়ে লড়াই করতে হচ্ছে। এতে করে চা উৎপাদনে বাগান মালিকরা কিছুটা হলেও আগ্রহ হারাচ্ছে। অন্যদিকে পঞ্চগড়ের উৎপাদিত নিম্ন মানের চা পাতার সঙ্গে তাল মেলাতে গিয়ে উন্নত মানের চা প্রস্তুতকারী বাগানগুলো মার খাচ্ছে। গত মৌসুমে চা উৎপাদনে লক্ষ্যমাত্রা কম হওয়ার এটাও ছিল অন্যতম কারণ। বাংলাদেশ চা বোর্ডের প্রকল্প উন্নয়ন ইউনিটের পরিচালক ড. এ কে এম রফিকুল হক চা রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়োজনীতার কথা বলেছেন। বাংলাদেশে এক সময় দ্বিতীয় প্রধান রপ্তানি পণ্য ছিল চা। পাটের পরেই ছিল অবস্থান। এখন দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির কারণে কিছু কিছু ক্ষেত্রে চা আমদানি করতে হচ্ছে। তবে রপ্তানি প্রণোদনার পাশাপাশি আমাদনি নিরুৎসাহিত করতে উচ্চ শুল্কারোপ করা হয়েছে। রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের কারণে আমাদের রপ্তানির অন্যতম বড় বাজার পাকিস্তানে চা রপ্তানি সহজীকরণ করা হয়েছে। চায়ের মান উন্নয়নসহ রপ্তানি বৃদ্ধিতে সকল বাধা দূর করতে চা বোর্ড নানা পদক্ষেপ নিয়েছে।

পুরোনো ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমাধানের লক্ষ্যে ডিসিসিআই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

পুরোনো ঢাকার ব্যবসা-বাণিজ্যের সমস্যা চিহ্নিতকরণ ও সমাধানের লক্ষ্যে ডিসিসিআই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত

অসহনীয় যানজট, জলাবদ্ধতা, অপ্রতুল অবকাঠামো, এসএমইখাতে অপযাপ্ত ঋণ প্রবাহ, আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি, ডলারের মূল্যের অস্থিরতা, আমদানি-রপ্তানি ব্যবস্থার দীঘসূত্রিতা, উচ্চ সুদ হার, ভ্যাট ও করের হার বৃদ্ধি এবং জটিল রাজস্ব ব্যবস্থাপনার কারণে রাজধানীর ব্যবসার অন্যতম বাণিজ্য কেন্দ্র পুরোনো ঢাকার ব্যবসায়ীরা বিশেষকরে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তারা সাম্প্রতিক সময়ে নানাবিধ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছেন এবং বিদ্যমান সমস্যাগুলোর আশু সমাধানে সরকারকে কাযকর উদ্যোগ গ্রহণ ও বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়াও মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের উপর প্যাকেজ ভ্যাট ব্যবস্থা প্রবতন করা যেতে পারে বলে, আলোচকবৃন্দ মত প্রকাশ করেন।  

জাপানের বিনিয়োগ বাড়াতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের সভা

জাপানের বিনিয়োগ বাড়াতে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ডের সভা

জাপান এক্সটারনাল ট্রেড অর্গানাইজেশন (জেট্রো) ও জাপান-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (জেবিসিসিআই) সহযোগিতায় এক মতবিনিময় সভার আয়োজন করেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় বেসরকারি ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড। ‘ফোরজিং আ শেয়ার্ড ফিউচার’ শীর্ষক এ সভাটি রাজধানীর ওয়েস্টিন ঢাকা হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। এতে দেশে বিনিয়োগের পরিবেশ, দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য অগ্রগতি এবং বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগের সুযোগ নিয়ে আলোচনা করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন- স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড বাংলাদেশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নাসের এজাজ, বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী সদস্য ড. খন্দকার আজিজুল ইসলাম, জাপান আন্তর্জাতিক সহায়তা সংস্থা জাইকার প্রধান প্রতিনিধি ইচিগুছি তমুহিদে, জেট্রোর কান্ট্রি রিপ্রেজেন্টিটিভ ইউজি আন্দো, জেবিসিসিআইয়ের সভাপতি তারেক রাফি ভূঁইয়া প্রমুখ।