ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ০১ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৭ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সব খবর

হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার

হোয়াটসঅ্যাপের নতুন ফিচার

হোয়াটসঅ্যাপ শিগগিরই একটি নতুন ট্রান্সক্রিপশন ফিচার চালু করতে যাচ্ছে, যা ভয়েস মেসেজের পাঠ্যরূপ তৈরি করে ব্যবহারকারীদের যোগাযোগ আরও সহজ এবং সুবিধাজনক করবে। অ্যান্ড্রয়েড ও আইওএস ব্যবহারকারীদের জন্য এই ফিচার আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে বিশ্বব্যাপী চালু হবে। এটি ভয়েস ক্লিপের নিচে স্বয়ংক্রিয়ভাবে টেক্সট তৈরি করবে, যা বিশেষত এমন পরিস্থিতিতে উপযোগী যখন ভয়েস মেসেজ শোনার সুযোগ নেই। এই ফিচার ভয়েস মেসেজের সুবিধা ও অসুবিধার মধ্যে ভারসাম্য তৈরি করবে। ভয়েস মেসেজ রেকর্ড করা সহজ হলেও, ব্যস্ত সময় বা শব্দপূর্ণ পরিবেশে সেগুলো শোনা অসুবিধাজনক হতে পারে। তবে ট্রান্সক্রিপশন ফিচার চালু থাকলে কেবল প্রাপকেরাই এই টেক্সট দেখতে পারবেন। হোয়াটসঅ্যাপ জানিয়েছে, ডিভাইসেই ট্রান্সক্রিপশন তৈরি হবে, যাতে গোপনীয়তা অক্ষুণ্ণ থাকে। এটি ডিফল্টভাবে বন্ধ থাকবে এবং সেটিংসের "ভয়েস মেসেজ ট্রান্সক্রিপশন" অপশন থেকে চালু করা যাবে। প্রাথমিকভাবে অ্যান্ড্রয়েড ব্যবহারকারীদের জন্য ইংরেজি, পর্তুগিজ, স্প্যানিশ, রাশিয়ান ও হিন্দি ভাষা সমর্থিত হবে, আর আইওএসের জন্য আরও বিস্তৃত ভাষা তালিকা থাকবে। ভবিষ্যতে ভাষার সমর্থন বাড়ানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।

সূর্যালোক ছাড়াই সবুজ বৃক্ষ!

সূর্যালোক ছাড়াই সবুজ বৃক্ষ!

সূর্যালোক ও সালোকসংশ্লেষণ ছাড়াই জন্মাবে গাছ। সম্প্রতি ‘ইলেকট্রো-এগ্রিকালচার’ নামের নতুন এক রোমাঞ্চকর পদ্ধতি এনেছেন গবেষকরা, যার মাধ্যমে আলো ছাড়াই জন্মানো যাবে গাছ। ফলে খাদ্য উৎপাদনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে বলে দাবি তাদের। গবেষকরা বলছেন, সূর্যের আলো ও সালোকসংশ্লেষণের উপর নির্ভর করার বদলে গাছ জন্মানোর জন্য বিদ্যুৎ ও কার্বন ডাই অক্সাইড ব্যবহার করবে এই পদ্ধতিটি। সালোকসংশ্লেষণ এমন এক প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে সূর্যের আলো ও কার্বন ডাই অক্সাইডকে খাদ্যে রূপান্তর করতে ব্যবহার করে উদ্ভিদ। এর জন্য দরকার সময়সহ আরও অনেক কিছুর। গোটা বিশ্বে খাদ্যের চাহিদা ব্যাপক হারে বাড়ছে। ফলে প্রচলিত চাষের প্রক্রিয়া খাদ্য চাহিদা সামাল দেওয়ার জন্য আর যথেষ্ট নয় । তাই খাদ্য উৎপাদনের আরও দ্রুত ও কার্যকর সমাধান দরকার, আর সেখানেই সম্ভাবনা দেখাচ্ছে নতুন এই ‘ইলেকট্রো-এগ্রিকালচার’ পদ্ধতিটি। এ জৈবিক পদ্ধতিতে কার্বন ডাই অক্সাইডের সঙ্গে ইলেকট্রোলাইসিসকে সমন্বয় করে কাজ করবে নতুন পদ্ধতিটি, যা নাটকীয়ভাবে বাড়িয়ে তুলবে খাদ্য উৎপাদনকে। এর মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রে কৃষিজমির প্রয়োজনীয়তাও প্রায় ৯০ শতাংশ কমিয়ে আনতে পারে বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ। ‘ইলেকট্রো-এগ্রিকালচার’-এর মাধ্যমে সূর্যের আলো বা কীটনাশকের প্রয়োজন ছাড়াই শহরাঞ্চল, মরুভূমি ও অন্যান্য দুর্গম জায়গায় ফসল ফলানো যাবে। একইসঙ্গে এ পদ্ধতিতে আরও কার্যকরভাবে সার ব্যবহার করতে পারবেন কৃষকরা, যা বর্জ্য কমিয়ে পরিবেশকে ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করবে। এ গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন ‘ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটি’র কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ফেং জিয়াও। এই নতুন পদ্ধটির এক মূল উপাদান অর্থাৎ কার্বন ডাই অক্সাইডকে রাসায়নিক যৌগ ‘অ্যাসিটেট’-এ রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়াটিকে নিখুঁত করতে কাজ করছেন তিনি ও তার গবেষণা দলটি। সাধারণত শক্তির প্রধান উৎস হিসাবে অ্যাসিটেট ব্যবহারের জন্য উদ্ভিদের জিনগত রূপান্তর ঘটানো দরকার হতে পারে। এর ফলে বিভিন্ন গাছ ঘরের মধ্যে জন্মানোর প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করা সম্ভব। এ নতুন পদ্ধটির মূল লক্ষ্য এমন ধরনের গাছ জন্মানো, যা সালোকসংশ্লেষণের বদলে পুরোপুরি নির্ভর করবে অ্যাসিটেটের উপর। এ পদ্ধটির মাধ্যমে সফলভাবে গাছ জন্মানো গেলে তা উদ্ভিদ সংরক্ষণের পাশাপাশি বাঁচানো যাবে অনেক কৃষিজমি। আর প্রাকৃতিকভাবে কার্বন দূষণ ঠেকাতে সহায়তা করতে পারে এই পরিবর্তন, যা জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়েও সাহায্য করবে। খাদ্য উৎপাদন ছাড়াও জ্বালানি বা বায়োডিগ্রেডএবল উপাদান তৈরিতেও ব্যবহার করা যেতে পারে এই ‘ইলেকট্রো-এগ্রিকালচার’। গবেষকরা জোর দিয়ে বলছেন, অবশ্যই দায়িত্বশীলতার সঙ্গে বিকাশ করতে হবে নতুন পদ্ধতিকে। কারণ, বৈশ্বিক খাদ্য ঘাটতির অবস্থা যাতে আরও খারাপ না হয় তা নিশ্চিত করা জরুরী। এ যুগান্তকারী গবেষণাটি প্রকাশ পেয়েছে বিজ্ঞানভিত্তিক জার্নাল ‘জুল’-এ। গবেষণায় অর্থায়ন করেছে ‘বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন’।

শক্তি যোগাবে নতুন ব্যাটারি প্রযুক্তি

শক্তি যোগাবে নতুন ব্যাটারি প্রযুক্তি

বাতাস ও সূর্যের আলো ছাড়া, এমনকি মেঘলা দিনেও শক্তি দেবে নতুন ব্যাটারি প্রযুক্তিÑ সাম্প্রতিক এক গবেষণায় এমনই দাবি করেছেন গবেষকরা। বায়ু ও সৌর শক্তির মতো নবায়নযোগ্য বা পরিবেশবান্ধব শক্তি সঞ্চয়ের জন্য আরও ভাল ব্যাটারি তৈরিতে কাজ করছেন মার্কিন গবেষণাগার ‘ওক রিজ ন্যাশনাল ল্যাবরেটরি বা ওআরএনএল’-এর বিজ্ঞানীরা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের গোপনীয়তার আবরণে ঢাকা ম্যানহাটন প্রকল্পের প্রধান গবেষণাগার হিসাবে নির্মিত হয়েছিল ওক রিজ ল্যাবরেটরি। এখানেই তৈরি হয়েছে বিশ্বের প্রথম পারমাণবিক অস্ত্র। ক্রমাগতভাবে বিদ্যুৎ তৈরি করতে পারে না নবায়নযোগ্য শক্তির বিভিন্ন উৎস। তাই বৈদ্যুতিক গ্রিডকে ভালোভাবে চালিয়ে রাখার জন্য দীর্ঘমেয়াদি নবায়নযোগ্য শক্তি সঞ্চয়ের উপায় বিকাশ করা গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে বাজারে পাওয়া যায় এমন বেশিরভাগ ব্যাটারি নির্ভর করে ‘ইলেক্ট্রোলাইট’ নামের এক ধরনের তরল পদার্থের উপর, যা আয়ন হিসাবে ব্যাটারিকে শক্তি সঞ্চয় ও ছেড়ে দিতে সাহায্য করে। এটি মূলত এক ধরনের ক্ষুদ্র চার্জযুক্ত কণা, যা ব্যাটারির ইলেকট্রন নামে পরিচিত দুটি অংশের মধ্যে চলাচল করে। ওআরএনএল-এর গবেষকরা এমন একটি ব্যাটারি ডিজাইন করেছেন, যেখানে ব্যাটারি তৈরিতে তারা তরল ইলেকট্রলাইটের বদলে ব্যবহার করেছেন কঠিন এক উপাদান। সোডিয়াম আয়ন ব্যবহার করে এ কঠিন ইলেকট্রলাইট তৈরি করেছেন গবেষকরা, যা আরও শক্তিশালী, টেকসই ও বেশি শক্তি সঞ্চয় করতে সক্ষম বলে প্রতিবেদনে লিখেছে বিজ্ঞানভিত্তিক সাইট নোরিজ। এই নতুন উপায় ব্যাটারি প্রযুক্তিতে বিস্ময়কর অগ্রগতি দিলেও এখনও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়ে গেছে এসব কঠিন প্রকৃতির ইলেকট্রলাইট নিয়ে।

বিষণ্নতা বাড়াচ্ছে প্রযুক্তি

বিষণ্নতা বাড়াচ্ছে প্রযুক্তি

অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিষণ্নতার হার ২৭ শতাংশ বৃদ্ধি পায়, যখন তারা অতিরিক্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করে। তা ছাড়া অল্পবয়সীদের মাঝে যারা দিনে অন্তত তিন ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করে তাদের মাঝে আত্মহত্যামূলক প্রবণতা বেশি থাকে। প্রযুক্তিভিত্তিক পোর্টাল গ্যাজেটস নাউ-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে এমন তথ্য। প্রতিবেদনটিতে কয়েকটি গবেষণার কথা উল্লেখ করা হয়। আরেক গবেষণার তথ্যমতে, যুক্তরাষ্ট্রে কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতা ভয়ানক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। এর পেছনে রয়েছে অতিরিক্ত স্মার্টফোনের ব্যবহার। বিষয়টি প্রতিটি মা-বাবার জন্য নিঃসন্দেহে চিন্তার কারণ। শীর্ষ প্রযুক্তিবিদেরা আবার এ ব্যাপারে সচেতন হয়েছেন বেশ আগে, এমন তথ্য উঠে এসেছে স্ক্রিন স্কুল্ড নামের এক বইয়ে। সন্তানদের প্রযুক্তির অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে শিশুদের কেমন ক্ষতি হচ্ছে, সে সম্পর্কে দুজন শিক্ষাসংস্কারক ও অধ্যাপক জো ক্লিমেন্ট এবং ম্যাট মাইলস বইটি লিখেছেন। বইটিতে লেখকদ্বয় উল্লেখ করেছেন, সিলিকন ভ্যালির ধনী বাবা-মায়েরা স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, কম্পিউটারের আসক্তি করার ক্ষমতা সাধারণ মানুষের চেয়ে বেশি উপলব্ধি করেছেন। হয়তো তাঁরা এসব বিষয়ে বেশি অবগত, তাই। বইটিতে বলা হয়েছে, সিলিকন ভ্যালির বেশ কিছু স্কুলের বিশেষত্ব হলো, শিশুদের মানসিক বিকাশের কথা মাথায় রেখে ওই সব প্রতিষ্ঠানে যতটা সম্ভব কম প্রযুক্তি ব্যবহার করা। বরং একে অপরকে শ্রদ্ধা, সম্মান করাসহ বিভিন্ন মানসিক বিকাশের প্রতি বেশি জোর দেওয়া হয়। বইটির লেখকদ্বয় লিখেছেন, শক্তিশালী প্রযুক্তিপ্রধানেরা তাদের পণ্য সম্পর্কে এমন কী জানেন, যা ভোক্তারা জানেন না? উত্তরটা অনেকটা এ রকম, ডিজিটাল প্রযুক্তির আসক্তি ক্ষমতা। অভিভাবক হিসেবে প্রযুক্তিজগতের দুই হর্তাকর্তা বিল গেটস ও স্টিভ জবসের দর্শন একই। তারা তাদের সন্তানদের খুব অল্প সময়ের জন্য নিজেদের তৈরি করা পণ্য ব্যবহার করতে দিতেন। জো ক্লিমেন্ট ও ম্যাট মাইলসের মতামত, প্রযুক্তির ব্যবহারকে উপেক্ষা করা যাবে না। তবে বিশেষ নজরদারির মধ্যে শিশুদের প্রযুক্তি ব্যবহার করতে দিতে হবে। বিশেষ করে শিক্ষা অর্জনের বিশেষ পন্থা হিসেবে, যেমনটা বিশেষজ্ঞরা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। সূত্র: গ্যাজেটস নাউ

মুগ্ধকর মায়া কোডেক্স

মুগ্ধকর মায়া কোডেক্স

সেই প্রাচীনকাল থেকেই রাতের আকাশ মানবজাতিকে মুগ্ধ করে রেখেছে। এমনকি আজও আমরা আকাশ পানে চেয়ে থাকি পৃথিবীর অতীত এবং ভবিষ্যত বুঝতে। প্রযুক্তিগত উৎকর্ষ আমরা যা দেখি তা বুঝতে আমাদের সহায়তা করছে। আকাশ তাই এখন আর অজানা জগত নয়। এবং এখনো আমরা প্রাচীন সভ্যতার আবিষ্কার দিয়ে প্রভাবিত। যেমন মধ্য আমেরিকার মায়া।   মায়ান জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা এই রহস্যময় নথি তাদের অনন্য সম্পদ হিসেবে রেখে গেছেন। বর্তমানে এটি আমাদের কী জানাচ্ছে? এই পরিশীলিত হায়রোগ্লিফিকস মায়ার সঞ্চিত জ্ঞান বহন করছে। পরবর্তী সূর্যগ্রহণ কখন হবে? শুক্রগ্রহ কখন আবার শুকতারার রূপে দেখা দেবে? বিশ্বের বিশেষজ্ঞরা এখনো মায়ার সূক্ষ্ম গণনা সমীহ করে চলেন। হুলিয়েটা বলেন, ‘এটা বিস্ময়কর যে, তারা কয়েক হাজার বছর আগে এরকম হিসেব তৈরি করতে পেরেছিলেন।’ অ্যান্টনি বলেন, ‘তারা পৃথিবীতে এটা কীভাবে করেছিলেন? তাদের যদি কম্পিউটার এবং টেলিস্কোপ না থেকে থাকে, তাহলে তারা এটা কীভাবে করেছেন?’ আন্তিয়ে মনে করেন, ‘তাদের দিনে, মানে ১৪৯২ এর আগ অবধি, মায়া গণিত এবং জ্যোতির্বিদ্যায় ইউরোপীয়দের তুলনায় এগিয়ে ছিল।’