বৃহস্পতিবার, ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ১৮ পৌষ ১৪৩১

সর্বশেষ
জবি শিক্ষার্থীকে ছাত্রদলের মারধর, বিচারের দাবিতে বিক্ষোভ নতুন বছরের প্রথম দিনেই ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংঘর্ষ,আহত ১৫ জন আরও যতদিন থাকবে এমন শীত জাতিসংঘে বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞা চায়, কে এই গোষ্ঠী? আগস্টের পর বাংলাদেশ থেকে হিন্দুরা নয়, মুসলিমরাই বেশি ভারতে গেছেন! ৭ উইকেট নিয়ে বিশ্ব রেকর্ড তাসকিনের পোষ্য কোটা বাতিল না হলে রবিবার থেকে কমপ্লিট শাটডাউন অশ্লীলতায় ছেয়ে গেছে বাকৃবি : নেই নজরদারি ২০২৫ সালে বিমান যাত্রা শুরু হয়ে শেষ হয় ২০২৪ সালে হাসিনার আমলে বিদ্যুৎ জ্বালানির সব চুক্তি জনসমক্ষে প্রকাশ চায় বিএনপি ৪৩তম বিসিএসে ২২৭ জন বাদ পড়ার কারণ জানাল মন্ত্রণালয় সমন্বয়কদের ফেসবুক আইডি হ্যাক: হ্যাকারদের ‘উদ্ভট’ দাবি ঝিনাইদহে জাতীয় সমাজসেবা দিবস উদযাপন টিসিবির জন্য কেনা হচ্ছে ২৮৪ কোটি টাকার তেল-ডাল গাজীপুরে স্ত্রীর সামনেই কিশোর গ্যাংয়ের হামলায় স্বামী নিহত বাংলাদেশের জেল থেকে ছাড়া পেল ৬৪ ভারতীয় দিল্লিতে ফের চালু ‘বাংলাদেশ সেল’ শুক্রবার বাংলাদেশে আসছেন মসজিদুল আকসার ইমাম ইসলামপুরে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের ৪৬তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী পালিত ধামরাইয়ে বন্ধুদের সাথে থার্টি ফার্স্ট নাইট উদযাপনে গুলিবিদ্ধ এক যুবক ব্যাংকে টাকা রেখে সুদ খাওয়া হারাম না হালাল ইসলাম কি বলে ছাত্রশিবিরের সম্মেলন নিয়ে কথা বলে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল নারী সাংবাদিক ২০২৭ সালের পর দেশে ভয়াবহ বৈদেশিক মুদ্রা সংকট হবে: বিএনপি প্রতিদিন জিয়াউর রহমানের নাম নিলে বেহেশত নিশ্চিত কুবিতে শিক্ষক নিয়োগ অস্বচ্ছতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের সংবাদ সম্মেলন ভারতের গোপন কিলিং মিশনে ‘র’ মুন্নী সাহার ১৩৪ কোটি টাকার লেনদেন: অনুসন্ধানে দুদক উচ্চশিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে ‘হিট’ প্রকল্প গুরুত্বপূর্ণ: রুয়েট ভিসি চুয়াডাঙ্গায় দেশের সর্বনিন্ম তাপমাত্রায় কর্ম ব্যস্ত ইটভাটার শ্রমিকরা একাত্তরে আপনাদের ভূমিকা কী ছিল, জামায়াতকে রিজভীর প্রশ্ন

হাওরে হচ্ছে দুটি উড়ালসড়ক

প্রকাশিত: ১৪ জানুয়ারি ২০২৩, ০৭:৪৮ পিএম

শেয়ার

হাওরে হচ্ছে দুটি উড়ালসড়ক
হাওর

পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, জীব-বৈচিত্র্যের কথা চিন্তা করে হাওরাঞ্চলে আর নতুন করে কোনো সড়ক করবে না সরকার। তবে দুটি উড়ালসড়ক নির্মাণ করা হবে।

শনিবার (১৪ জানুয়ারি) ঢাকায় একটি অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তব্যে মন্ত্রী এই কথা বলেন।

বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ এনভায়রনমেন্ট নেটওয়ার্কের (বেন) আয়োজনে বার্ষিক সম্মেলন শনিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজী মোতাহার হোসেন ভবন মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনের এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ‘বাংলাদেশের হাওর, নদী ও বিল: সমস্যা ও প্রতিকার’। সম্মেলনের কারিগরি অধিবেশন শুরুর আগে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

সরকার হাওরের জীব-বৈচিত্র্য রক্ষায় আন্তরিক জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘হাওরে এখন থেকে আর কোনো রাস্তা নির্মাণ করা হবে না। সেখানকার ভূমিরূপ ও প্রতিবেশব্যবস্থাকে মাথায় রেখে সরকার একটি উড়ালসড়ক নির্মাণ করছে। আরেকটি উড়ালসড়কও নির্মাণ করা হবে।’

সরকার পরিবেশ ধ্বংস করে কোনো উন্নয়ন প্রকল্প করবে না জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা টেকসই উন্নয়নে বিশ্বাসী, যা পরিবেশ রক্ষা করে করা হবে।’

পরিকল্পনা মন্ত্রী বলেন, ‘দেশের হাওর ও উপকূলে অপরিকল্পিত অবকাঠামো নির্মাণের ফলে বন্যা ও জলাবদ্ধতার সমস্যা বাড়ছে। তাই উন্নয়ন প্রকল্প করার ক্ষেত্রে নদী-জলাশয় ও হাওরের পরিবেশ ও প্রকৃতিকে মাথায় রাখতে হবে। এতে দেশের উন্নয়ন টেকসই হবে ও জনগণের ভোগান্তি হবে না।’

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সম্মেলনের প্রস্তুতি কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জামান।

অনুষ্ঠানে জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান মো. মুজিবর রহমান হাওলাদার, বেনের প্রতিষ্ঠাতা ও বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, বাপার সাধারণ সম্পাদক শরীফ জামিল প্রমুখ বক্তব্য দেন।

মূল প্রবন্ধে বলা হয়, হাওরে রাস্তা নির্মাণের আগে আমরা গবেষণা করে দেখিয়েছিলাম ওই রাস্তার অন্তত ৩০ শতাংশ এলাকা কালভার্ট ও সেতু নির্মাণের মাধ্যমে ফাঁকা রাখতে হবে। নয়তো উজানে বৃষ্টি শুরু হলে তা ওই রাস্তায় আটকে গিয়ে বন্যা দীর্ঘস্থায়ী ও তীব্র হবে। 

কিন্তু দেখা গেছে মাত্র আড়াই শতাংশ জায়গা ফাঁকা রাখা হয়েছে। অন্যদিকে হাওর এলাকার বৃষ্টিপাতের দীর্ঘমেয়াদী তথ্য পর্যবেক্ষণ করে দেখা গেছে সেখানে আগে মে মাসে বেশি বৃষ্টি হতো। বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগেভাগে সেখানকার একমাত্র ফসল বোরো ধান পেকে যেত। ফলে কৃষকের ক্ষতি হতো না। এখন এপ্রিলে বৃষ্টি বাড়ছে। ফলে ধান পাকার আগে বন্যা এসে তা ডুবিয়ে দিচ্ছে।

কিশোরগঞ্জ জেলার তিন উপজেলা ইটনা-মিঠামইন ও অষ্টগ্রামের যোগাযোগব্যবস্থাকে এক সুতোয় গেঁথেছে ৩০ কিলোমিটারের একটি অল-ওয়েদার সড়ক। ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আনুষ্ঠানিকভাবে ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম সড়ক প্রকল্পের নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন। ২৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত এ সড়কটি নির্মাণ শেষে ২০২০ সালের ৮ অক্টোবর সড়কটি ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

হাওরের বিস্ময় হিসাবে খ্যাত অল-ওয়েদার এ সড়কটি চালু হওয়ার পর হাওরে অভ্যন্তরীণ যোগাযোগব্যবস্থা পুরোপুরি পাল্টে যায়। পাশাপাশি দৃষ্টি কাড়ে সারা দেশের ভ্রমণ পিপাসু মানুষদের। ইতিমধ্যে সারা বছরই সেটি দেশের অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন ঠিকানায় পরিণত হয়েছে। এতে অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ সুগম হচ্ছে হাওরবাসীর। 

তবে এই সড়কের কারণে হাওরের জীববৈচিত্র্য নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করছেন পরিবেশবাদীরা। ফলে সরকার নতুন করে হাওরে আর সড়ক না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
 

 


জাতিসংঘে বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞা চায়, কে এই গোষ্ঠী?

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:২১ পিএম

শেয়ার

জাতিসংঘে বাংলাদেশের নিষেধাজ্ঞা চায়, কে এই গোষ্ঠী?
ছবি: সংগৃহীত

ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশি হিন্দুদের একটি দল সম্প্রতি ভারতের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, যাতে বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দু ও অন্যান্য ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সুরক্ষার জন্য জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয় এবং ১৯৪৭ সালের দেশভাগের অসমাপ্ত জনসংখ্যা বিনিময় সম্পন্ন করা হয়। এই দলটি "গ্লোবাল বেঙ্গলি হিন্দু কোয়ালিশন" এর সঙ্গে যুক্ত এবং বর্তমানে ভারতের রাজধানীতে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করছে।

বাংলাদেশি সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় পাঁচ দফা প্রস্তাব
দলটি এক সংবাদ সম্মেলনে তাদের পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরে, যেখানে বলা হয়েছে: জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনী মোতায়েন করা, যাতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।বর্তমান বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা, যাকে তারা "অবৈধ ও জিহাদপন্থী" বলে উল্লেখ করেছে।দেশভাগের অসমাপ্ত জনসংখ্যা বিনিময় সম্পন্ন করা, যা সংখ্যালঘুদের পুনর্বাসন নিশ্চিত করবে।হিন্দু-সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকায় সুরক্ষিত অঞ্চল তৈরি করা, যাতে সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়।বাংলাদেশের জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কোটার পুনর্মূল্যায়ন করা, কারণ এটি সংখ্যালঘুদের সুরক্ষায় ব্যর্থপ্রতিবেদন অনুযায়ী, শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর বাংলাদেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের ওপর হামলার সংখ্যা বেড়েছে। আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে ৫১টি মন্দির, অনাথ আশ্রম এবং শ্মশানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। নাটোর সদরে একটি মন্দিরে ডাকাতি এবং এর সেবায়েতকে হত্যা করা হয়।

ভারতের প্রতি আহ্বান
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নেতা সিতাংশু গুহ বলেন, “ভারত আমাদের সেরা বন্ধু। তারা বাংলাদেশি ২০ মিলিয়ন হিন্দুকে রক্ষা করতে পারে।” তিনি আরও উল্লেখ করেন, ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে ভারতের ভূমিকা অনুকরণীয় ছিল এবং বর্তমান পরিস্থিতিতেও ভারত এ ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারে।

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কের অবনতি
শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক ক্রমশ অবনতির দিকে। বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকার সংখ্যালঘুদের উপর হামলার ঘটনাগুলিকে অতিরঞ্জিত বলে দাবি করেছে। তবে, আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তার বিষয়টি বড় ইস্যু হয়ে দাঁড়িয়েছে।প্রবাসী বাংলাদেশি হিন্দুরা এই বিষয়ে ভারতের সক্রিয় ভূমিকা আশা করছে, যাতে তাদের সম্প্রদায় রক্ষা পায় এবং বাংলাদেশে তাদের মানবাধিকার নিশ্চিত হয়।


আগস্টের পর বাংলাদেশ থেকে হিন্দুরা নয়, মুসলিমরাই বেশি ভারতে গেছেন!

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৬:০৯ পিএম

শেয়ার

আগস্টের পর বাংলাদেশ থেকে হিন্দুরা নয়, মুসলিমরাই বেশি ভারতে গেছেন!
ছবি: সংগৃহীত

গত বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করতে গিয়ে যতজন বাংলাদেশি নাগরিক ধরা পড়েছেন, তাদের মধ্যে মুসলিমের সংখ্যাই বেশি বলে জানাচ্ছে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ।

 

বাহিনীটি জানায়, এর আগের দুই বছর একই সময়কালের তুলনায় ২০২৪ সালে বাংলাদেশ থেকে আসা অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা সামান্য বেড়েছে। তবে পুরো বছরের তথ্যের সঙ্গে তুলনা করলে আগস্ট থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে অনুপ্রবেশ উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়েনি।

ভারতের সীমান্তরক্ষী এই বাহিনীর (বিএসএফ) দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত অঞ্চলের সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বিবিসি বাংলা।

বাহিনীর একাধিক কর্মকর্তা বলেছেন, যেসব হিন্দু বাংলাদেশি নাগরিক অবৈধ উপায়ে ভারতে আসতে গিয়ে ধরা পড়েছেন, তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের সময় বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ‘অত্যাচার’ ও ‘সহিংসতা’র কারণে দেশ ছেড়ে এসেছেন, এমনটা জানিয়েছেন ‘সামান্য কিছু মানুষ’।

 

বিবিসির হাতে যে নির্দিষ্ট পরিসংখ্যান এসেছে, তা বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্তের হলেও বাহিনীর পূর্ব কম্যান্ড অর্থাৎ ভারত আর বাংলাদেশের পুরো সীমান্ত অঞ্চলের ছবিটা একই, এমনটাই জানিয়েছেন বাহিনীর একাধিক অফিসার।

বিশ্লেষকরা এ তথ্য পেয়ে কিছুটা বিস্মিত। কারণ, বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ‘অত্যাচার’ ও ‘সহিংসতা’র ঘটনায় বহু হিন্দু ধর্মাবলম্বী ভারতে চলে আসছেন বা আসার চেষ্টা করছেন, এমনই একটা ন্যারেটিভ বা আখ্যান ভারতের হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলোর তরফে দেওয়া হচ্ছে বেশ কিছুদিন ধরে। এই পরিসংখ্যান কি তাহলে সে আখ্যানকে খারিজ করে দিচ্ছে?

 

হিন্দু ৩০১, মুসলমান ৪১৫

বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত অঞ্চলের সূত্রে যে পরিসংখ্যান পাওয়া গেছে, তাতে দেখা যাচ্ছে এ বছরের অগাস্ট মাস থেকে ডিসেম্বরের ২৪ তারিখ পর্যন্ত ৭১৬ জন বাংলাদেশি নাগরিক অবৈধভাবে সীমান্ত পেরোতে গিয়ে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের হাতে ধরা পড়েছেন। তাদের ধর্মীয় পরিচয় থেকে জানা যাচ্ছে যে তাদের মধ্যে ৩০১ জন হিন্দু এবং ৪১৫ জন মুসলমান।

পুরো ভারত-বাংলাদেশ সীমান্ত, অর্থাৎ বিএসএফের পূর্ব কমান্ডের অধীনে অঞ্চলের ছবিটাও একই বলে জানা যাচ্ছে।

 

বিগত দুই বছরের আগস্ট থেকে ডিসেম্বর সময়কালে ধরা পড়া অনুপ্রবেশকারীদের পরিসংখ্যান থেকে জানা যাচ্ছে, ২০২৩ সালে ২০৩ জন হিন্দু এবং ৪৪৯ জন মুসলমান ধরা পড়েছিলেন দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত অঞ্চলে।

আবার তার আগের বছর, ২০২২ সালে আগস্ট থেকে ডিসেম্বরে ১১৪ জন হিন্দু এবং ২৯৮ জন মুসলিম অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়েছিলেন।

 

বাংলাদেশের সংখ্যালঘুদের ওপরে কথিত নির্যাতনের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন ধরেই সরব ভারতীয় সংগঠন ‘ক্যাম্ব’-এর আহ্বায়ক মোহিত রায় বলেন, ‘চিরকালই বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে মুসলমানদের সংখ্যাই বেশি থাকে।’

তিনি আরও বলেন, ‘পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু ১৯৯২ সালে একটা প্রবন্ধে লিখেছিলেন যে প্রতি একজন হিন্দু অনুপ্রবেশকারী-পিছু আড়াইজন মুসলমান অনুপ্রবেশকারী বাংলাদেশ থেকে ভারতে আসেন। এটা সরকারি তথ্য উদ্ধৃত করে তিনি লিখেছিলেন ওই প্রবন্ধে।’

আবার অনেক অনুপ্রবেশকারী সীমান্তরক্ষীদের হাতে ধরা না পড়েও ভারতে প্রবেশ করতে পেরেছেন। ধৃত অনুপ্রবেশকারীদের সংখ্যা থেকে এই উপসংহার টানা যায় না যে শুধু ওপরে উল্লেখিত সংখ্যক মানুষই কেবল অনুপ্রবেশ করেছেন।

 

‘নির্যাতন’-এর কারণে অনুপ্রবেশ?

বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গ সীমান্ত অঞ্চলে যত জন বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী ধরা পড়েছেন গত আগস্টের পর থেকে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী।

বিএসএফ সূত্রগুলো বলছে, বাংলাদেশে তাদের ওপর নির্যাতন বা অত্যাচার হয়েছে বা হওয়ার আশঙ্কা করছেন এবং সেই কারণেই তারা ভারতে চলে এসেছেন, এমন হিন্দু অনুপ্রবেশকারীর সংখ্যা একেবারেই নগণ্য। সেই সংখ্যা ধরা পড়া অনুপ্রবেশকারীদের মাত্র এক থেকে দুই শতাংশ।

 

এক জ্যেষ্ঠ বিএসএফ কর্মকর্তা বলছেন, ‘আগস্টের পর থেকে বাংলাদেশিদের খুবই কম ভিসা দিচ্ছে ভারতীয় হাইকমিশন। তবে বাংলাদেশের অনেক মানুষকেই ভারতের এই অঞ্চলে ব্যবসা, পারিবারিক বা নানা প্রয়োজনে আসতে হয়। এ রকম আসা-যাওয়া চলতেই থাকে বৈধভাবেই। এখন ভিসার ব্যাপক বিধিনিষেধের কারণে হয়তো অনেকে অবৈধ উপায় আসার চেষ্টা করছেন এবং ধরা পড়ে যাচ্ছেন।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে আমাদের নজরদারিতে কোনো ফাঁক তো নেইই, বরং প্রহরীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে গোটা ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তজুড়েই। বাড়তি প্রহরী অন্য জায়গা থেকে অবশ্য আনা হয়নি। স্থানীয় ব্যাটালিয়ন হেডকোয়ার্টারগুলোতে যারা ডিউটি করেন, এমন প্রহরীদেরই সীমান্তের ডিউটি দেওয়া হচ্ছে।’

 

আসল কারণ চেপে যাচ্ছেন না তো?

গত আগস্টের পর থেকে ভারতে অনুপ্রবেশকারীদের মধ্যে মুসলিমদের সংখ্যা বেশি, হিন্দুরা কম–এই পরিসংখ্যান কিছুটা বিস্মিত করেছে বিশ্লেষক ও অ্যাক্টিভিস্টদের।

ভারতের সংগঠন ‘কমিটি অ্যাগেইনস্ট অ্যাট্রসিটিজ অন মাইনরিটিস ইন বাংলাদেশ’ বা ‘ক্যাম্ব’-এর আহ্বায়ক মোহিত রায় এই পরিসংখ্যানের কথা শুনে বলছিলেন, ‘যে যারা অনুপ্রবেশ করতে গিয়ে ধরা পড়েছেন, তারা “আসল কারণ”টা চেপে যাচ্ছেন না তো!’

 

তিনি বলেন, ‘যারা সীমান্ত পার করেন অবৈধভাবে, তার কারণ হিসাবে যা বলে থাকেন, অনেক সময়েই দেখা যায় যে কারা কোথায়, কী পরিস্থিতিতে প্রশ্নগুলো করছে, তার ওপরে নির্ভর করে তাদের জবাবগুলো।’

‘কোন উত্তরটা দিলে তাদের সুবিধা হতে পারে, সেরকমই উত্তর দিয়ে থাকেন, আসল কারণ হয়তো চেপে যাচ্ছেন। তবে এটা খুবই অস্বাভাবিক তথ্য যে খুব কম সংখ্যক হিন্দু সাম্প্রতিক ঘটনাগুলি তাদের ভারতে চলে আসার কারণ হিসাবে উল্লেখ করছেন না’, বলেন রায়।

 

তার কথায়, ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশ থেকে এমন অনেক হিন্দু নাগরিকের ফোন তিনি পেয়েছেন, যারা উদ্বিগ্ন হয়ে ভারতে চলে আসার কথা ভাবছেন।

মোহিত রায় বলেন, ‘এমন তো নয় যে বাংলাদেশ থেকে যেসব হিন্দু চলে আসতে চাইছেন, ভারত সরকার তাদের জন্য সীমান্ত খুলে দিয়েছে! যথেষ্ট কড়াকড়ি রয়েছে, তল্লাশি, নজরদারিও চলছে। একজন তো ভিসা নিয়ে ভারতে এসেও আবার ফিরে গেছেন। তিনি বলছেন ভারতীয় পরিচয়পত্র বানিয়ে নিতে পারলেও সেসব চেক করলেই ধরা পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে এ দেশে। সেই আশঙ্কাতেই তিনি আবারও বাংলাদেশে ফিরে গেছেন।’

 

তার আরও একটা ব্যাখ্যা দিয়ে তিবি বলেন, ‘ভারত সরকার যেহেতু একেবারেই কোনো শিথিলতা দেখায়নি সীমান্তে, তাই গোড়ার দিকে যত মানুষ ভারতে চলে আসার কথা ভেবেছিল, এখন হয়তো অতটা ভাবছেন না।’

আবার বাংলাদেশের হিন্দু সন্ন্যাসী চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের আইনজীবী রবীন্দ্র ঘোষ কয়েক দিন আগে বলেছেন, ‘আমরা কেন ও দেশ থেকে চলে আসব? বাংলাদেশ তো আমাদের মাতৃভূমি! তা ছেড়ে অন্য দেশে চলে আসার কথা কেন ভাববে সেখানকার হিন্দুরা?’

 

হিন্দুত্ববাদীদের আখ্যান নস্যাৎ

ভারতে কয়েক মাস ধরে একটা প্রচারণা এবং আখ্যান চলছে যে বাংলাদেশের হিন্দুরা ‘নির্যাতন’-এর শিকার হয়ে ভারতে চলে আসতে চাইছেন।

সেই প্রেক্ষাপটে অনুপ্রবেশকারীদের এ রকম একটা পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে, যার ফলে ওই আখ্যান ও প্রচারটাই কিছুটা নস্যাৎ হয়ে যাচ্ছে বলে মনে করেন হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির গবেষক স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য।

 

তার কথায়, ‘দুই দেশের রাজনীতিবিদদের একাংশ তো ঢালাওভাবে বলে চলেছিলেন সেই আগস্ট মাস থেকে যে বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর ব্যাপক অত্যাচার হচ্ছে, তাই দলে দলে হিন্দুরা ভারতে চলে আসছে বা আসার কথা ভাবছে।’

‘এই প্রচারটা বিশেষত চলছে পশ্চিমবঙ্গ, আসামসহ বাংলাদেশ সীমান্তঘেঁষা রাজ্যগুলোতে। পশ্চিমবঙ্গে ২০২৬-এর নির্বাচন মাথায় রেখে এই প্রচারের তীব্রতা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু এখন বিএসএফের যে পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে, তাতে তো সামান্য সংখ্যক হিন্দুকেই সীমান্তে ধরা পড়তে দেখা যাচ্ছে।

 

আর মুসলমানরাও অবৈধভাবে সীমান্ত পেরোতে গিয়ে যে সংখ্যায় ধরা পড়েছেন, সেটাকেও তো ‘দলে দলে চলে আসছে’ বলা যায় না! মাত্রই কয়েকশো ধরা পড়েছেন এখানে। তবে হ্যাঁ, এটাও ঠিক যে অনেকে হয়ত ধরা না পড়েই অবৈধভাবে সীমান্ত পেরোতে সক্ষম হয়েছেন। সেই সংখ্যা কত আমরা জানি না, যদি আরও বেশি হয়, বিএসএফ তার দায় এড়াতে পারে না! কিন্তু ব্যাপক হিন্দু পলায়নের হিন্দুত্ববাদী আখ্যানটা তো নস্যাৎ করে দিচ্ছে এই সংখ্যা।’

তিনি আরও বলছিলেন, ‘এ বছরের অগাস্টের পর থেকে অনুপ্রবেশের যে পরিসংখ্যান পাওয়া যাচ্ছে, হিন্দু এবং মুসলমান মিলিয়ে, তা থেকে আরেকটা আখ্যানও মিথ্যা বলে স্পষ্ট হচ্ছে।’

 

‘পশ্চিমবঙ্গ, আসাম এবং ঝাড়খন্ড বা ওড়িশার মতো নানা রাজ্যে একটা আখ্যান চলে যে বাংলাদেশ থেকে অনুপ্রবেশকারীরা এসে জায়গা দখল করে নিচ্ছে, তারাই সংখ্যাগুরু হয়ে উঠবে। ঝাড়খণ্ডের সাম্প্রতিক নির্বাচনের আগে এটাই বড় ইস্যু হয়ে উঠেছিল।’

‘কিন্তু এখন যে তথ্য পাওয়া গেল, তাতে কয়েক মাসে কয়েক শ মানুষ ঢুকে পড়লে কোটি কোটি জনসংখ্যার রাজ্যে গিয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে যাওয়ার দাবি যে হাস্যকর, সেটা বুঝতে পরিসংখ্যানবিদ হতে হয় না, সুস্থ বুদ্ধি থাকলেই হয়।’

 

স্নিগ্ধেন্দু ভট্টাচার্য মন্তব্য করে বলেন, ‘আমরা আশা করব, বিএসএফ তাদের দায়িত্ব পালনের মধ্য দিয়ে সীমান্তের ফাঁকফোকর ভালোভাবে আটকাবেন। এটা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের গুরুদায়িত্ব।’

 

সূত্র: বিবিসি বাংলা


ছাত্রশিবিরের সম্মেলন নিয়ে কথা বলে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল নারী সাংবাদিক

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০৪:৪৩ পিএম

শেয়ার

ছাত্রশিবিরের সম্মেলন  নিয়ে কথা বলে নেট দুনিয়ায় ভাইরাল নারী সাংবাদিক

গেল ৩১ ডিসেম্বর দীর্ঘ প্রায় ১৪ বছর পর রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রকাশ্যে কেন্দ্রীয় সদস্য সম্মেলন করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির।

 

 

সম্মেলনে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতৃবৃন্দ ও জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।  

সেখানে আমন্ত্রিত ছিলেন গণমাধ্যমকর্মীরা। পেশাগত দায়িত্ব পালনে অন্য সাংবাদিকদের মতো সেখানে সংবাদ সংগ্রহে যান বেসরকারি টেলিভিশনে কর্মরত ফেরদাউস উষা নামের এক সাংবাদিক। 

ছাত্রশিবিরের সম্মেলন প্রথমবার কাভার করতে গিয়ে তার ভিন্ন অভিজ্ঞতা তুলে ধরে নিজের ফেসবুক আইডিতে একটি লম্বা স্ট্যাটাস দিয়েছেন। মূহর্তেই সেই পোস্ট নেট দুনিয়ায় ভাইরাল।

 

ভাইরাল হওয়া পোস্টে ফেরদাউস উষা লেখেন, ‘দীর্ঘ দেড় দশক পর প্রকাশ্যে সদস্য সম্মেলন করছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির। রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ৭ হাজারেরও বেশি সদস্য নিয়ে এ সম্মেলন শুরু হয়। গণমাধ্যমে কাজ করার সুবাদে বড় রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মেলন কাভারেজ করতে হয়েছে। তবে এ সম্মেলনে ভিন্ন অভিজ্ঞতা হয়েছে। নারী হিসেবে যথেষ্ট সম্মান ও নিরাপত্তা বোধ করেছি। সংগঠনটি বেশ সুশৃঙ্খল। প্রধান অতিথির বক্তব্যের পর কোনো হুড়োহুড়ি ধাক্কাধাক্কি ছিল না।’

ফুয়াদ

 


মেজর সিনহা হত্যার; দ্রুত মামলার শুনানি করতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে মায়ের আবেদন

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:৪৮ পিএম

শেয়ার

মেজর সিনহা হত্যার; দ্রুত মামলার শুনানি করতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে মায়ের আবেদন
মেজর সিনহা

সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান হত্যার ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলাটি হাইকোর্টে দ্রুত শুনানির উদ্যোগ গ্রহণ করতে অ্যাটর্নি জেনারেলের কাছে আবেদন করেছেন তার মা নাসিমা আক্তার

বৃহস্পতিবার ( জানুয়ারি) সকালে এই আবেদন করেন তিনি পরে মামলাটি দ্রুত শুনানির আশ্বাস দিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান

সিনহার মা নাসিমা আক্তার সাংবাদিকদের বলেন, আমার ছেলে ছিল প্রাণের উৎস সে যখনই সুযোগ পেয়েছে শুধুমাত্র মানুষের কল্যাণে এগিয়ে গেছে যেসব নরপিশাচরা আমার ছেলেকে হত্যা করে আমার বুক খালি করেছে, তাদের আমি কোনোদিন ক্ষমা করবোনা, পরম করুণাময় আল্লাহর কাছে তো বিচার দিয়েই রেখেছি আমার একমাত্র প্রত্যাশা যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে, সেসব হত্যাকারী মানুষ নামধারী নরকের কীটদের যেন দ্রুত ফাঁসির রায় কার্যকর হয় আমি আশায় বুক বেঁধে আছি, সেই দিনের জন্য যেদিন এদের ফাঁসি হবে, আমার মনটা কিছুটা হলেও শান্তি পাবে

তিনি বলেন, দেশের বিচার ব্যবস্থার প্রতি আস্থা রয়েছে, আশা করছি খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে এই বিচারের রায় কার্যকর হবে এবং এটি একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে মানুষের জন্য এতে আর কেউ এভাবে মায়ের বুক খালি করার মতো দুঃসাহস দেখাবে না

এর আগে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের বাহারছড়া শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে নিহত হন সিনহা মো. রাশেদ খান ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় দুটি এবং রামু থানায় একটি মামলা করে সরকারি কাজে বাধা প্রদান এবং মাদক আইনে এসব মামলা করা হয় টেকনাফ থানায় দায়ের করা দুই মামলায় নিহত সিনহার সঙ্গী সাইদুল ইসলাম সিফাতকে আসামি করা হয় আর রামু থানায় মাদক আইনে করা মামলায় আসামি করা হয় সিনহার অপর সঙ্গী শিপ্রা দেবনাথকে পরে নিহত সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস ২০২০ সালের আগস্ট বাদী হয়ে কক্সবাজার আদালতে টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক লিয়াকত আলীকে প্রধান করে পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন মামলায় টেকনাফ মডেল থানার ওসি প্রদীপ কুমার দাশকে করা হয় দুই নম্বর আসামি

মামলাটির পাশাপাশি পুলিশের করা তিনটি মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় র্যাবকে ২০২০ সালের আগস্ট মামলায় অভিযুক্ত জনের মধ্যে সাত পুলিশ সদস্য আদালতে আত্মসমর্পণ করেন পরে আরও সাত আসামিকে বিভিন্ন সময় গ্রেফতার করে র্যাব মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মো. খাইরুল ইসলাম ওসি প্রদীপসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দেন অভিযোগপত্রে সাক্ষী করা হয় ৮৩ জনকে একই দিন পুলিশের দায়ের করা মামলা তিনটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়

২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর আদালত অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করে পলাতক আসামি কনস্টেবল সাগর দেবের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন সেই সঙ্গে পুলিশের দায়ের করা তিনটি মামলার চূড়ান্ত প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলা থেকে সাইদুল ইসলাম সিফাত শিপ্রা দেবনাথকে অব্যাহতি দেন আদালত

এরপর মামলার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কক্সবাজারের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম তামান্না ফারাহর আদালত থেকে জেলা দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে স্থানান্তর হয় ২০২১ সালের ২৭ জুন আদালত ১৫ আসামির বিরুদ্ধে বিচারকাজ শুরুর আদেশ দেন কিন্তু করোনা মহামারির কারণে আদালতের বিচার কার্যক্রম স্থগিত থাকায় ধার্য দিনে সাক্ষ্য গ্রহণ সম্ভব হয়নি

পরে ২০২১ সালের ২৩ আগস্ট থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত দফায় ৮৩ জনের মধ্যে ৬৫ জন মামলায় সাক্ষ্য দেন ২০২২ থেকে ১২ জানুয়ারি পর্যন্ত মামলায় রাষ্ট্র আসামি উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পর ওই বছরের ৩১ জানুয়ারি কক্সবাজার জেলা দায়রা জজ মোহাম্মদ ইসমাইল মামলার রায় ঘোষণা করেন রায়ে বরখাস্ত ওসি প্রদীপ এসআই লিয়াকতকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয় আর ছয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ দিয়ে বাকিদের খালাস দেন বিচারিক আদালত

যাবজ্জীবন পাওয়া আসামিরা হলেন- বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপ-পরিদর্শক (এসআই) নন্দদুলাল রক্ষিত, বরখাস্ত কনস্টেবল সাগর দেব, দেহরক্ষী রুবেল শর্মা, পুলিশের সোর্স শামলাপুরের মারিশবুনিয়া গ্রামের বাসিন্দা নুরুল আমিন, মো. নেজামুদ্দিন আয়াজ উদ্দিন

রায়ে খালাস পান- বরখাস্ত কনস্টেবল সাফানুর করিম, কামাল হোসেন আব্দুল্লাহ আল মামুন, বরখাস্ত হোন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) লিটন মিয়া, বরখাস্ত এপিবিএনের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. শাহজাহান, বরখাস্ত কনস্টেবল মো. রাজীব মো. আবদুল্লাহ

বিচারিক আদালতের রায়ের সাত দিনের মাথায় গত বছর ফেব্রুয়ারি মামলার যাবতীয় নথিসহ ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে এসে পৌঁছায় আর বিচারিক আদালতের রায়ের দুই সপ্তাহের মাথায় খালাসের পাশাপাশি রায় বাতিল খালাস চেয়ে হাইকোর্টে আপিল করেন প্রদীপ-লিয়াকত পরে যাবজ্জীবন দণ্ডাদেশ পাওয়া দণ্ডিতরাও আপিল করেন

ওসি প্রদীপের আইনজীবী আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তৎকালীন প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রানা দাসগুপ্ত ওই সময় বলেছিলেন, এখন পর্যন্ত মামলাটি পেপারবুক শাখায় আছে কোনো অগ্রগতি নেই ডেথ রেফারেন্স মামলা যে বেঞ্চেই পাঠানো হোক না কেন, প্রশাসনিক ক্ষমতাবলে তা গঠন করে দেন প্রধান বিচারপতি বর্তমানে হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স মামলার চারটি নিয়মিত বেঞ্চ রয়েছে ক্রম অনুসারে ২০১৭ সালের ডেথ রেফারেন্সের মামলার বিচার চলছে এসব বেঞ্চে তবে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কিছু চাঞ্চল্যকর মামলার শুনানির জন্য বিশেষ বেঞ্চও গঠন করেন সেই সময়ের প্রধান বিচারপতি হাইকোর্টের ডেথ রেফারেন্স পেপারবুক শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এখন ২০১৮ সালের ডেথ রেফারেন্স মামলার পেপারবুক তৈরির কাজ চলছে

অন্যদিকে, মামলার বাদী মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বলেন, ভুক্তভোগী পরিবার হিসেবে চাইবো মামলাটির বিচার দ্রুত শেষ হোক

 


'বিদ্যুতে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ১ লক্ষ কোটি টাকা লুট করেছে আ. লীগ'

অনলাইন ডেস্ক

প্রকাশিত: ০২ জানুয়ারি ২০২৫, ০২:২৪ পিএম

শেয়ার

'বিদ্যুতে ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ১ লক্ষ কোটি টাকা লুট করেছে আ. লীগ'

আওয়ামী লীগ বিদ্যুৎ খাতকে ব্যবসার খাত এবং লুটপাটের একটি মেশিনে পরিণত করেছিলো বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু। তিনি দাবি করেন, আওয়ামী লীগ সরকার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৫০০ মিলিয়ন ডলার এবং ক্যাপাসিটি চার্জের নামে ১ লাখ কোটি টাকা লুটপাট করেছে।

আজ বৃহস্পতিবার (২ জানুয়ারি) গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন। 

টুকু বলেন, "ক্যাপাসিটি চার্জের নামে এক লাখ কোটি টাকা লুটপাট করা হয়েছে এবং এই টাকা পাচার করেছে আওয়ামী লীগ সরকারের ঘনিষ্ঠরা।" তিনি আরো অভিযোগ করেন, "এই দুর্নীতির সঙ্গে সামিটসহ পাঁচটি কোম্পানি জড়িত।" তিনি সরকারের প্রতি দাবি জানান, "তাদের উচিত এসব চুক্তি দ্রুত প্রকাশ করা।"

এসময়, বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, "ক্ষমতায় গেলে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে হওয়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের সকল চুক্তি পুনঃবিবেচনা করবে বিএনপি।"