দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো। তবে আরও উন্নতি কীভাবে করা যায় সে চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি বলেন, যত প্রভাবশালী হোক না কেন অপরাধীকেই ছাড় দেওয়া হবে না। এক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনা করা হবে না। অপরাধী সে যে দলেরই হোক তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনা হবে।
বুধবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পর্যালোচনা সংক্রান্ত বিশেষ সভা শেষে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।
উপদেষ্টা বলেন, সভায় মূলত ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কীভাবে আরও উন্নত করা যায়, সে বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। আমাদের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে ভালো হয়েছে, তবে আরও উন্নতি ঘটানোর সুযোগ রয়েছে। সে লক্ষ্যেই আমরা কাজ করে যাচ্ছি। তিনি বলেন, মোহাম্মদপুরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেভাবে সফল হয়েছে, সে মডেল রাজধানীর অন্যান্য এলাকায় প্র্রয়োগ করে ঢাকা শহরের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির কাক্সিক্ষত উন্নয়ন ঘটানো হবে।
জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, রাজধানীর ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে অন্যতম সমস্যা হলো রাস্তার ওপর অবৈধ দোকানপাট বসা। এগুলো উচ্ছেদের জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ঢাকার যানজট নিরসনে আরেকটি বড় সমস্যা হচ্ছে প্রধান সড়কগুলোতে প্যাডেল ও ব্যাটারিচালিত রিক্সা চলে আসা। তারা যেন চার্জিং পয়েন্টগুলোর মাধ্যমে ব্যাটারিচালিত রিক্সায় চার্জ দিতে না পারে সে বিষয়ে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উপদেষ্টা এ সময় চাঁদাবাজি বন্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দেন।
সভায় আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে নিয়োজিত বাহিনীসমূহের মধ্যে সমন্বয় বিধান, গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি, চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ ও চাঁদাবাজি রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, দখলবাজি, বিশেষ করে মহাখালী, গাবতলী ও সায়েদাবাদ বাসস্ট্যান্ড/ট্রাকস্ট্যান্ডসমূহে এবং যাত্রাবাড়ী, কাওরান বাজার, কাপ্তান বাজারসহ ভাসমান বাজারসমূহে চাঁদাবাজি রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, মাদকের স্পটসমূহ চিহ্নিত করে মাদকবিরোধী অভিযান এবং অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার অভিযান জোরদারকরণ, মব জাস্টিস প্রতিরোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, জেনেভা ক্যাম্প, বিভিন্ন বস্তিসহ অপরাধ প্রবণ এলাকা সিসিটিভি স্যার্ভিলেন্সের আওতায় আনয়ন, যে কোনো জনসভা আয়োজনের ক্ষেত্রে ডিএমপির অনুমতি গ্রহণ নিশ্চিত করা, শাহবাগের পরিবর্তে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জনসভা আয়োজনের ব্যবস্থা করা, কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ, ফুটপাত দখলরোধ, ফুটপাতে চাঁদাবাজি বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, প্রতারণা, ডিজিটাল প্রতারণা, মুদ্রাপাচার, পুঁজিবাজারের অস্থিরতার বিষয়ে নজরদারি বৃদ্ধি করা, নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি রোধে চাঁদাবাজ, মধ্যস্বত্বভোগী, বাজার কারসাজিতে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ, ঢাকা শহরের ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণে ব্যবস্থা গ্রহণ ইত্যাদি বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সভাপতিত্বে সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব ড. মোহাম্মদ আবদুল মোমেন, র্যাবের মহাপরিচালক এ কে এম শহিদুর রহমান, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিমপি) কমিশনার মো. মাইনুল হাসান, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার শরফ উদ্দিন আহমদ চৌধুরীসহ ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় কর্মরত বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি আগের চেয়ে অনেক ভালো। তবে আরও উন্নতি কীভাবে করা যায় সে চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মোহাম্মদপুর মডেলে (মোহাম্মদপুরে যেভাবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কাজ করেছে) পুরো শহরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি করা হবে। কোনো চাঁদাবাজের ছাড় নেই। কোনো অপরাধীর ছাড় নেই, সে যত প্রভাবশালীই হোক। বৈঠকে সেনাবাহিনী, পুলিশসহ বিভিন্ন সংস্থার প্রতিনিধিরা অংশ নেন।