শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, অনেকের বাড়িতে বাবা-মা কর্মজীবী, তারা সময় দিতে পারেন না। সে ক্ষেত্রে কখনো কখনো কোচিং এর দরকার হতে পারে। তবে কোন শিক্ষক নিজের ক্লাসের শিক্ষার্থীকে কোচিংয়ে পড়াতে পারবে না।
শুক্রবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে চাঁদপুর স্টেডিয়ামে বিসিবি কাউন্সিলর কাপ টি-২০ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের উদ্ধোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন তিনি।
দীপু মনি বলেন, কোচিং কিন্তু কিছুটা দরকার হয়। দেশে-বিদেশে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা আছে, সেগুলোর জন্য প্রস্তুতি দরকার হয়। আবার আমাদের স্কুলগুলোর শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের সংখ্যা অনেক বেশি। সেক্ষেত্রে প্রতিটি শিক্ষার্থীকে সমানভাবে নজর দেয়া একজন শিক্ষকের পক্ষে সম্ভব হয় না। এতে অনেকে কিছুটা পিছিয়ে পড়তে পারে।
মন্ত্রী বলেন, পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য বিকল্প হিসেবে আইনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ভিত্তিক ব্যবস্থা করার কথা বলেছি। একই সঙ্গে যেটি অনৈতিক নিজের ক্লাসে না পড়িয়ে নিজের ক্লাসের শিক্ষার্থীকে বাড়িতে কিংবা কোচিং সেন্টারে পড়তে বাধ্য করে এবং এখানে না পড়লে তাকে অকৃতকার্য করিয়ে দেয় এবং কম নম্বর দেয় এই বিষয়টি অনৈতিক এবং আইনে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিসিবি পরিচালক আকরাম খাঁন, চাঁদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান, পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ, বিসিবি কাউন্সিলর জাহিদুল ইসলাম রোমান, চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন অনু ও চাঁদপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার ক্রিকেট উপ-কমিটির সম্পাদক শেখ মোতালেব।
-
জেল-জুলুম, বিপ্লব পেরিয়ে অবশেষে অনার্স শেষ হলো সমন্বয়ক আব্দুল কাদেরের
-
জাবির নারী শিক্ষিকার বোরকা নিয়ে সাবেক ছাত্রদল নেতার কটুক্তি
-
স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের আল্টিমেটাম দিলো সাত কলেজ
-
ঢাবিতে ছাত্রদলের আন্তঃহল ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট উদ্বোধন
-
জাবিতে নারী প্রক্টরকে দায়িত্বপালনকালে ছাত্রদল নেতার বাধা, পোশাক নিয়ে কটূক্তি
জেল-জুলুম, বিপ্লব পেরিয়ে অবশেষে অনার্স শেষ হলো সমন্বয়ক আব্দুল কাদেরের
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল কাদের তার সংগ্রামী ছাত্রজীবনের আরেকটি মাইলফলক ছুঁয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) সমাজকল্যাণ ইনস্টিটিউট থেকে স্নাতক সম্পন্ন করেছেন তিনি। বিজয় একাত্তর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী কাদের তার অনার্সে ৩.৫৭ সিজিপিএ অর্জন করেছেন।
কাদেরের এই যাত্রা সহজ ছিল না। সম্প্রতি এক ফেসবুক পোস্টে তিনি তার স্নাতকজীবনের কঠিন অধ্যায় এবং সংগ্রামের গল্প শেয়ার করেছেন। কাদের লিখেছেন, “অবশেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গ্র্যাজুয়েট, আলহামদুলিল্লাহ! আমার মতো নিম্নবিত্ত পরিবারের ছেলের পক্ষে এতদূর আসা সম্ভব হতো না, যদি না মায়ের প্রবল ইচ্ছাশক্তি থাকত।”
তিনি তার মায়ের ত্যাগের কথা স্মরণ করে লেখেন, “টাকা পয়সা না থাকা সত্ত্বেও মা আমাকে ভালো স্কুলে ভর্তি করিয়েছেন। বেতন কমানোর জন্য ঘণ্টার পর ঘণ্টা প্রিন্সিপালের রুমে বসে থেকেছি আমরা। বাবার সামান্য দারোয়ানের চাকরির আয়ে চলা এই পরিবারে টিকে থাকা ছিল কষ্টকর। তবুও আমার মামা ও আত্মীয়দের সহায়তায় আমরা টিকে ছিলাম।”
কাদের তার ছাত্রজীবনে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন ও বিপ্লবী কর্মকাণ্ডে নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তিনি লেখেন, “জেল-জুলুম, বিপ্লব পেরিয়ে অবশেষে অনার্স জীবন শেষ হলো। সবচেয়ে বড় পাওয়া হলো, ছাত্রজীবনে হাসিনার পতন দেখে যেতে পারলাম। শুকরিয়া!”
তাঁর ছোট মামার অবদানের কথা স্মরণ করে কাদের বলেন, “গ্রাম থেকে আমাকে ঢাকা কলেজে নিয়ে আসা, ঢাবিতে ভর্তি হওয়া-সবকিছুর পেছনে মামার গাইডলাইন ছিল। আমি নিজের জীবন নিয়ে অগোছালো ছিলাম, কিন্তু মামা ছিলেন আমার পথপ্রদর্শক।”
জাবির নারী শিক্ষিকার বোরকা নিয়ে সাবেক ছাত্রদল নেতার কটুক্তি
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) সহকারী প্রক্টর শামীমা নাসরিন জলির বোরকা নিয়ে কটূক্তি করেছেন শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি নবীনুর রহমান নবীন। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) দিবাগত রাত দুইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মুরাদ চত্বর সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
থার্টি ফার্স্ট নাইটে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অভিযান চালাচ্ছিল। এ সময় ৮-১০ জনের একটি প্রাইভেট কারের মাধ্যমে সন্দেহজনকভাবে চলাচল করছিল। গাড়িটি থামিয়ে পরীক্ষা করা হলে, সেখানে একজন নারী শিক্ষার্থী নিজেকে ৫০ ব্যাচের শিক্ষার্থী হিসেবে পরিচয় দেন। জাবি ছাত্রদল নেতা নবীনুর রহমান ওই শিক্ষার্থীকে চলে যেতে বলেন। সহকারী প্রক্টর শামীমা নাসরিন তার পরিচয় জানতে চাইলে নবীন আক্রমণাত্মক ভাষায় কথা বলেন এবং সহকারী প্রক্টরের পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন।
এ ঘটনায় প্রতিবাদে বুধবার (০১ জানুয়ারি) রাত ১০টায় সাধারণ শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল করেন। শিক্ষার্থীরা দাবি করেন, ‘‘গণঅভ্যুত্থানের পর স্বাধীন বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।’’
শামীমা নাসরিন জলি এ ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা দিয়ে বলেন, ‘আমরা দায়িত্ব পালন করছিলাম। একজন ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যতীত গাড়ি চালাচ্ছিল। আমরা ক্যাম্পাসে এটি আপাতত নিষেধ বলে বুঝানোর চেষ্টা করছিলাম। তখন নবীন এসে তাদের চলে চেতে বলে। আমি খুবই নমনীয় ভাষায় তার পরিচয় জানতে চাইলে তিনি আক্রমণাত্মক ভঙ্গিতে আমার সাথে কথা বলেন। আমার পোশাক নিয়ে কটূক্তি করেন। গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে কেন পোশাক নিয়ে হেনস্তার শিকার হতে হবে? নতুন স্বাধীনতার পর এমন ঘটনা অনাকাঙ্ক্ষিত।
অন্যদিকে, সাবেক ছাত্রদল নেতা নবীন অভিযোগের বিষয়ে বলেন, আমরা কয়েকজন হাঁটছিলাম তখন দেখলাম একটি গাড়িয়ে থামিয়ে জিজ্ঞসাবাদ করা হচ্ছে এবং একজন শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করা হচ্ছে। আমি ক্যাম্পাসের সাবেক একজন শিক্ষার্থী হিসেবে সেখানে কথা বলছিলাম পরিস্থিতি ঠিক করার জন্য। আমরা সবাই মিলেই তো ক্যাম্পাসকে নিরাপদ রাখবো তাইনা? সাবেক হয়েছি বলে কি থার্টিফার্স্ট নাইটে নিজেদের মতো ঘুরতে পারি না? আগে তো আমরা সবাই মিলে ঘোরাঘুরি করতাম। আমরা তো ক্যাম্পাসে কোন অপকর্ম করতে আসিনি, আমাদের গাড়ির কাগজপত্র দেখিয়েছিলাম সেখানে। সে সময় আমি বলি তাহলে কি আমরা বোরকা পড়ে বসে থাকবো নাকি এবং এটি আমি তাকে উদ্দেশ্য করে বলি নাই বরং বিশ্ববিদ্যালয়ে আমাদের স্বাধীনতাকে উদ্দেশ্য করে বলেছি।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম জানান, ‘‘যদি ভুক্তভোগী লিখিত অভিযোগ দেন, তবে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’
স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় গঠনের আল্টিমেটাম দিলো সাত কলেজ
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত (ঢাবি) সরকারি সাত কলেজকে নিয়ে স্বতন্ত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের লক্ষ্যে সম্প্রতি একটি বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। আর এই কমিটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় গঠন করার দাবি জানিয়েছেন কলেজগুলোর আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (১ জানুয়ারি) বিকাল ৫ টায় ঢাকা কলেজের ক্যাফেটেরিয়ার সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে এ দাবি জানান সাত কলেজকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরের ফোকাল পারসন ও কবি নজরুল সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী জাকারিয়া বারি সাগর।
তিনি বলেন, "আমরা দীর্ঘদিন থেকে ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজের সমন্বয়ে যে স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবি জানিয়ে আন্দোলন করে আসছিলাম। সরকার আমাদের সে দাবি আমলে নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি পদক্ষেপ নিয়েছে। সরকার সাত কলেজকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পৃথকীকরণ এবং কলেজগুলোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকক্ষ স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোর রূপরেখা প্রণয়নের জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠন করেছে। সাত কলেজের জন্য গঠিত বিশেষজ্ঞ এই কমিটিকে আমরা শিক্ষার্থীরা স্বাগত জানাচ্ছি।"
জাকারিয়া বারি বলেন, "রাষ্ট্র আমাদের শিক্ষা বৈষম্য দূর করে মানসম্মত উচ্চশিক্ষা বাস্তবায়নে যে পদক্ষেপ নিয়েছে, তা আমরা ইতিবাচক হিসেবেই দেখছি। একই সঙ্গে আমরা এই কমিটিতে শিক্ষার্থী প্রতিনিধি সংযুক্তি ও প্রয়োজনে অন্যান্য অংশীজনকে সম্পৃক্ত করার সুযোগের বিষয়টিকে সাধুবাদ জানাচ্ছি।"
এই শিক্ষার্থী জানান, কমিটির সম্মানিত সভাপতি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের মাননীয় চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজ স্যারসহ সকল সদস্যদের আমাদের সমস্যার কথা জানানো হয়েছে। তবুও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষজ্ঞ কমিটিকে চার মাস সময় দেওয়া হয়েছে। যদিও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, তবে এই দীর্ঘ সময়সীমাটি যৌক্তিকতার দিক থেকে প্রশ্নবিদ্ধ। বিগত চার মাসে সরকারের বিভিন্ন মহলে সাত কলেজের অধিভুক্তি বাতিল করে একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ে রূপান্তর নিয়ে আলোচনা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলেই এ বিষয়ে একমত যে, সাত কলেজে ইন্টারমিডিয়েট পর্যায় রেখে একটি পূর্ণাঙ্গ কাঠামো দেওয়া সম্ভব। বর্তমানে এই কলেজগুলোর ৭টি পৃথক ক্যাম্পাসে অনার্স ও মাস্টার্স কার্যক্রম চলছে। ফলে নতুন অবকাঠামোরও প্রয়োজন নেই বা থাকলেও তা অতি সামান্য।
তিনি আরও বলেন, সাত কলেজের এ সমস্যা সমাধানে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের গঠিত ১৩ সদস্যের কমিটি ৬ সপ্তাহ সময় নিয়ে একটি প্রতিবেদন তৈরি করেছে। যে প্রতিবেদনটি নবগঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটিকে দেওয়ার কথা রয়েছে। এমন বাস্তবতায় আমরা শিক্ষার্থীরা নবগঠিত কমিটিকে দীর্ঘ ৪ মাস সময় দেওয়া অতিরঞ্জিত বলে মনে করছি। আমরা নবগঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটিকে ৩০ কার্যদিবস অর্থাৎ ১ মাসের মধ্যে সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রজ্ঞাপন জাতির সামনে প্রকাশ করার দাবি জানাচ্ছি।
জাকারিয়া বলেন, "মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনের কার্যপরিধি ২নং এ উল্লেখ আছে, ৭টি কলেজের স্বতন্ত্র সত্তা বজায় রেখে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমকক্ষ একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামোতে রূপান্তরের প্রক্রিয়া নির্ধারণ ও বিকল্পসমূহ বিবেচনা করা...। এই ‘সমকক্ষ’ শব্দটি শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার জন্ম দিয়েছে। আমরা বারংবার বলে এসেছি যে, সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা আর কোনো প্রকার পরীক্ষামূলক পদ্ধতির ফাঁদে পা দেবে না। সমকক্ষ কিংবা এ জাতীয় সংশয়মূলক কোনো শব্দ শিক্ষার্থীরা গ্রহণ করবে না।"
যেহেতু কার্যপরিধি ২-এ সমকক্ষ কিংবা বিকল্পের কথা উল্লেখ আছে, সেহেতু আমরা মনে করি এ কমিটির স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ রয়েছে। শিক্ষার্থীদের দাবির যৌক্তিকতা বিশ্লেষণ করে সাতটি কলেজের সমন্বয়ে সম্পূর্ণ স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার রূপরেখা তৈরি করতে তাদের কোনো বাঁধা নেই। আমরা বিশ্বাস করি, মন্ত্রণালয়ের গঠিত এই বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমেই নতুন স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়ের রোডম্যাপ তৈরি করা সম্ভব হবে। যার মাধ্যমে সাত কলেজ চিরমুক্তি পাবে।
তিনি আরও বলেন, "আমাদের সাত কলেজের শিক্ষার্থীদের মুক্তির এ আন্দোলন গত বছরের ২২ সেপ্টেম্বর শুরু হয়। ঢাকা কলেজে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আমরা প্রথমবারের মতো সাত কলেজের শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আমাদের সংকট ও সমস্যার চিত্র তুলে ধরি। সমস্যা সমাধানে আমরা ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল করে সাত কলেজের সমন্বয়ে একটি স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার দাবি জানাই। এরপর একই দাবি জানিয়ে ২৫ সেপ্টেম্বর মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ, ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমদ খান ও ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এস এম এ ফায়েজকে স্মারকলিপি দিয়েছি। একই স্মারকলিপি কলেজগুলোর সম্মানিত অধ্যক্ষদেরও দেওয়া হয়েছে।"
এরপর আমরা ধারাবাহিকভাবে মানববন্ধন, বিক্ষোভ, নীলক্ষেত ও সায়েন্সল্যাব মোড় অবরোধ করে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করেছি। আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে ক্যাম্পাসে ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছি। আমাদের আন্দোলনের যৌক্তিকতা উপলব্ধি করে সাত কলেজের শিক্ষার্থী ছাড়াও সর্বমহলের সমর্থন আমরা পেয়েছি। পরবর্তী সময়ে মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টার আশ্বাসে আমরা আন্দোলন সাময়িক স্থগিত করেছি। মাননীয় শিক্ষা উপদেষ্টা মহোদয় ঢাকা কলেজে এসে সাত কলেজকে ঢাবি অধিভুক্তি বাতিল করে স্বতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো দেওয়ার জন্য হাইভোল্টেজ কমিটি গঠনের ঘোষণা দেন। এরপর আমরা রাষ্ট্রের প্রতি শ্রদ্ধাশীলতা ও শিক্ষার্থী হিসেবে নিজেদের দায়িত্বশীলতার জায়গা থেকে মাঠ পর্যায়ের সব কর্মসূচি সাময়িক স্থগিত করে শ্রেণিকক্ষে ফিরে যাই।
জাকারিয়া বলেন, "আমরা শিক্ষার্থীরা স্পষ্ট বলতে চাই, সাত কলেজের সমন্বয়ে স্বায়ত্তশাসিত বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়া আমাদের শিক্ষার্থীরা বিকল্প কোনো সমাধান চায় না। আরও সহজ ভাষায় বললে এর বাইরে কোনো কার্যকর বা উপযুক্ত সমাধানও নেই। এখন যে বিশেষজ্ঞ কমিটি গঠিত হয়েছে, এ কমিটির সদিচ্ছা থাকলে আগামী এক মাসের মধ্যে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয়ের রূপরেখা জাতির সামনে তুলে ধরা সম্ভব। আর যদি এক মাসের বেশি সময় নেওয়া হয়, তাহলে শিক্ষার্থীরা এ ধীরগতিকে কালক্ষেপণ হিসেবে ধরে নেবে। আমরা আর নতুন কোনো ধরনের ছলচাতুরি দেখতে চাই না, এ কমিটির মাধ্যমে যদি আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফল না ঘটে, আমরা ফের পড়ার টেবিল ছেড়ে রাজপথে নেবে আসতে বাধ্য হব।"
ঢাবিতে ছাত্রদলের আন্তঃহল ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট উদ্বোধন
জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আন্তঃহল ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট ২০২৫ উদ্বোধন করা হয়েছে। বুধবার (১ জানুয়ারি) ঢাবির শারীরিক শিক্ষা কেন্দ্রে ঢাবি শাখা ছাত্রদলের হলগুলোর মধ্যে এ আন্তঃহল ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট উদ্বোধন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বকুল, কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব এবং সাধারণ সম্পাদক নাসিরউদ্দিন নাসির, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস এবং সাধারণ সম্পাদক নাহিদুজ্জান শিপন। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোতাহার হোসেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম বকুল তার বক্তব্যে বলেন, “বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সুস্থ ধারার ছাত্র রাজনীতি চর্চা করা জরুরি। বিগত বছরগুলোতে যে ধরনের ছাত্র রাজনীতি পরিলক্ষিত হয়েছে তা ছিল ভয়ংকর। শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ কর্তৃক নিদারুণ নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। ছাত্রদল এ ধরনের রাজনীতি থেকে বিরত থেকে সুস্থ ধারার ছাত্র রাজনীতি চর্চা করবে।”
তিনি আরও বলেন, “সাধারণ শিক্ষার্থীদের আশা-আকাঙ্খা, চিন্তা-চেতনা ধারণ করে ছাত্রদল আগামীর ছাত্র রাজনীতির সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলকে ধন্যবাদ এত সুন্দর একটি ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্ট আয়োজন করার জন্য।”
ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আন্তঃহল ব্যাডমিন্টন টুর্নামেন্টের আয়োজন করার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমি প্রত্যাশা করছি এই আয়োজন সফলভাবে সম্পন্ন হবে এবং আগামীতেও এ ধরনের আয়োজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদল করবে। এতে যা যা সাহায্য দরকার, কেন্দ্রীয় ছাত্রদল তা সরবরাহ করবে।”
তিনি আরও জানান, “সারা দেশে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী স্বতঃস্ফূর্তভাবে পালন করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল। আমরা বাংলাদেশে এক নতুন ধারার ছাত্র রাজনীতি চালু করবো। আমাদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে দেশের জন্য কাজ করতে হবে।”
নতুন বছরে মাদ্রাসায় ব্যাপক ছুটি, একটানাই থাকছে ৩৮ দিন
২০২৫ সালের মাদ্রাসার ছুটির তালিকা প্রকাশ করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ। মঙ্গলবার (৩১ ডিসেম্বর) এ তালিকা প্রকাশ করা হয়। সাপ্তাহিক ছুটি ছাড়া এবার পাচ্ছেন ৭৫ দিন।
তালিকায় দেখা যায়, ২০২৫ সালের সর্বোচ্চ ৩৮ দিন ছুটি থাকবে রোজা, স্বাধীনতা দিবস, জুমাতুল বিদা, লাইলাতুল ক্বদর ও ঈদুল ফিতর উপলক্ষ্যে। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত চলবে এ ছুটি চলবে।
দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১৪ দিন ছুটি থাকবে ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন অবকাশে। আগামী ৩ জুন থেকে ১৬ জুন এ ছুটি চলবে। মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠান প্রধানের সংরক্ষিত ছুটি থাকবে তিন দিন, তবে তা উপভোগ করতে হবে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে জানিয়ে।
ছুটির তালিকায় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, সাপ্তাহিক ছুটি দুই দিন নির্ধারণ করায় প্রতিটি মাদ্রাসাকে যথাযথ পাঠ পরিকল্পনা প্রণয়ন করে সিলেবাস শেষ করতে হবে। ইবতেদায়ী ও দাখিল স্তরে অর্ধবার্ষিক পরীক্ষা ১২ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত হবে। ফল প্রকাশ হবে ২৫ জুন। বার্ষিক পরীক্ষা ২০ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত হবে, ফল প্রকাশ করা হবে ৩০ ডিসেম্বর।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগ বলছে, হাওড় অঞ্চলের বোরো ধান কাটা উপলক্ষ্যে মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের অনুপস্থিত থাকতে দেখা যায়। ফলে হাওড় অঞ্চলের মাদ্রাসাগুলোর প্রধানরা মোট ছুটি ঠিক রেখে ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি থেকে সমন্বয় করে ১০ দিন শ্রেণি কার্যক্রম বন্ধ রাখতে পারবেন।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ নিজেদের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র নিজেরাই প্রণয়ন করবেন। কোনো অবস্থাতেই প্রশ্নপত্র ক্রয় বা কোনো উৎস থেকে নেওয়া প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া যাবে না। পরীক্ষার নির্ধারিত তারিখ পরিবর্তন করা যাবে না। তবে কোনো বিশেষ কারণে পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করতে হলে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের অনুমতি নিতে হবে আগে থেকে।
কোনো সরকারি কর্মকর্তার পরিদর্শন উপলক্ষ্যে মাদ্রাসা ছুটি দেওয়া যাবে না। সংবর্ধনা বা পরিদর্শন উপলক্ষ্যে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বন্ধ করা যাবে না। কাউকে সংবর্ধনার জন্য শিক্ষার্থীদের রাস্তায় দাঁড় করানো যাবে না।