ভারত বাংলাদেশকে ‘বন্ধু’ বলে দাবি করলেও, সীমান্তে বিএসএফ (ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী) একের পর এক নিরপরাধ বাংলাদেশি নাগরিককে গুলি করে হত্যা করছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ নিহতরাই নিরস্ত্র এবং নিরপরাধ ছিলেন।
তথ্যমতে, ২০০৯ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যুর সংখ্যা ৫০০-এরও বেশি, যা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংগঠনগুলোসহ গার্ডিয়ান এবং অন্যান্য গণমাধ্যমে উঠে এসেছে।
যুদ্ধ না হলেও দুই দেশের সীমান্তে প্রতিদিন চলতে থাকে বিএসএফের একতরফা গুলি। ভারতের সাথে সীমান্ত থাকা চীন, পাকিস্তান, নেপাল বা ভুটানের সঙ্গে সম্পর্কের তুলনায় বাংলাদেশের সীমান্তে এমন সহিংসতা রহস্যজনকভাবে বেশি।
ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা এমন পরিস্থিতি তৈরি করছে যেখানে সীমান্তে মারণাস্ত্র ব্যবহার নিষিদ্ধ থাকার পরেও নিরপরাধ নাগরিকদের লক্ষ্য করে গুলি চালানো হচ্ছে।
২০১৮ সালের এপ্রিল মাসে কুড়িগ্রামে বিএসএফের এক গুলিতে ১৪ বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু ঘটেছিল, যিনি বাবা-মায়ের সঙ্গে গরু আনতে যাচ্ছিলেন। এমনকি অভিযোগ ওঠে, সেই বিএসএফ সদস্যরা মাতাল অবস্থায় ছিলেন।
এই ঘটনার পর ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রদূত হর্ষবর্ধন শৃংলা সীমান্তে বিএসএফের গুলির ঘটনা তদন্ত করে শাস্তির আশ্বাস দিয়েছিলেন, কিন্তু এই হত্যাকাণ্ডগুলো নিয়ে কখনোই যথেষ্ট পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
মানবাধিকার সংগঠনগুলো বলছে, বিএসএফের গুলি চালানোর অধিকার কোনোভাবেই নেই, এবং সীমান্তে হত্যার ঘটনা কোনোভাবেই রোধ করা হচ্ছে না।
২০১১ সালে ফেলানির হত্যার পর ভারত সরকার সীমান্তে গুলি চালানো বন্ধ করার প্রতিশ্রুতি দিলেও, বাস্তবতা ভিন্ন। বিএসএফের গুলিতে আরও অনেক বাংলাদেশি প্রাণ হারিয়েছে। আরও শতাধিক বাংলাদেশি নিখোঁজ হয়ে গেছেন, অনেকেই নিয়মিত সীমান্তে নির্যাতনের শিকার হন।
অথচ, সীমান্ত হত্যার এই চলমান ঘটনাগুলোর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সরকার কখনোই ভারতের ওপর যথাযথ চাপ সৃষ্টি করতে পারেনি। হাসিনা সরকারের নতজানু ভারত-নীতি ও রাজনৈতিক সম্পর্কের কারণে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি যথাযথভাবে তুলে ধরা হয়নি।
এমন পরিস্থিতে বাংলাদেশিদের মনে স্বভাবতই প্রশ্ন ওঠে, ভারতের সাথে বাংলাদেশের তথাকথিত এই ‘বন্ধুত্বের’ মানে কি?
ভিডিও দেখুন: https://youtu.be/gNuFT54E54k?si=nUN9wCGtmd5axZJm