ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ৬ অগ্রাহায়ণ ১৪৩১

বিদায়বেলায় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি নাদাল

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ২০:৫৬, ২০ নভেম্বর ২০২৪

বিদায়বেলায় চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি নাদাল

রাজত্ব শেষ ক্লে কোর্টের রাজার

ঘোষণাটা আরও আগেই দিয়ে রেখেছিলেন। অবশেষে বুধবার সম্পন্ন হয়ে গেল সেই ঘোষণার আনুষ্ঠানিকতা। টেনিস থেকে বিদায় নিলেন কিংবদন্তি রাফায়েল নাদাল। শেষবেলায় সঙ্গী হল পরাজয়। নিজের ডেভিস কাপের প্রথম ম্যাচটি হেরেছিলেন স্পেনের এই টেনিস তারকা। ডেভিস কাপে জীবনের শেষ ম্যাচেও একই পরিণতি। ঠিক যেন একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ  হল রাফায়েল নাদালের।


বিদায়ের ক্ষণে চোখে জল রাফায়েল নাদালের। কিছুতেই কান্না চেপে রাখতে পারেননি স্প্যানিশ কিংবদন্তি। সুদীর্ঘ ২৩ বছরের বর্ণাঢ্য ক্যারিয়ারের শেষবেলায় নাদাল শুধু বললেন, ‘আমার পদক, সাফল্য, সেসব তো রইলোই। শুধু চাই, লোকে আমাকে মায়োর্কার এক ছোট্ট গ্রাম থেকে উঠে আসা ভালো মানুষ হিসেবে মনে রাখুক।’
তবে শেষটা এরকম হোক তা চাননি কেউ। ডেভিস কাপের কোয়ার্টার ফাইনাল থেকেই ছিটকে গেল স্পেন। ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচে হারের পরই আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন ক্লে কোর্টের স¤্রাট। ডেভিস কাপে স্পেনের হয়ে প্রথম এককের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বর্টিচ ভ্যান ডি জান্ডশুল্পের কাছে হারে নাদাল। এককের অন্য ম্যাচে অবশ্য জয় পান তার সতীর্থ কার্লোস আলকারাজ। এরপর ভক্ত-সমর্থকদের নজর ছিল ডাবলসে। কিন্তু সেই ডাবলসে আলকারাজ ও মারসেন গ্রানোয়ার্স নেদারল্যান্ডসের জুটির কাছে হেরে যান। তাতেই কোয়ার্টার ফাইনাল থেকে বিদায় নিশ্চিত হয়ে যায় স্পেনের। মালাগায় আয়োজিত একক ম্যাচে ৬-৪, ৬-৪ গেমে হার মানেন নাদাল। শুরু থেকেই পিছিয়ে পড়েছিলেন তিনি। ৩৮ বছরের নাদালের খেলায় বয়সের ছাপ একেবারেই সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছিল। যে কারণে আর ফিরতে পারেননি। দ্বৈতে ৭-৬ এবং ৭-৬ গেমে হার মানেন আলকারাজ ও মারসেল। গত অক্টোবরে অবসরের ঘোষণা দেন নাদাল। এরপরই দেশের জার্সিতে বিদায় জানাতে চেয়েছিলেন। শুধু তাই নয়? তাঁর হাতে ডেভিস কাপ দেখে বিদায়ের আশাও করেছিলেন সমর্থকরা। কিন্তু সেটা আর হলো না। 
দীর্ঘ দুই দশকেরও বেশি সময়ের ক্যারিয়ারে ২২টা গ্র্যান্ডস্লাম জয়ের অনন্য নজীর গড়েছেন রাফায়েল নাদাল। স্প্যানিশ টেনিস তারকার গল্পের শুরুটা ধরা যেতে পারে ২০০২ সালে। মাত্র ১৬ বছর বয়সে জিতেছিলেন পেশাদার ক্যারিয়ারের প্রথম ম্যাচ। মাত্র ১৮ বছর বয়সেই পৌঁছে গিয়েছিলেন উইম্বলডনের সেমিফাইনালে। তার পর আর থামায় কে? ২০০৫ সালে শুরু  হয়েছিল লাল সুরকির মাটিতে রাজত্ব। প্রথম জিতেন ফরাসি ওপেন। সেখান থেকে ঝুলিতে ঢুকল আরও ১৩টা ফ্রেঞ্চ ওপেন। কোনও একটি বিশেষ ওপেনে এত সাফল্য আর কোনও টেনিস তারকার নেই। যে কারণে নাদালের নামই হয়ে যায় রোলা গ্যাঁরোর ‘রাজা’। 
ফ্রেঞ্চ ওপেন ছাড়া অস্ট্রেলিয়ান ওপেন ও উইম্বলডন জিতেন দুইবার করে। ইউএস ওপেনে ওপেনে সাফল্য এসেছে চারবার। এছাড়া অলিম্পিকে সোনা জিতেন ২০০৮ সালে। রিওতেও সোনা জিতেছিলেন ডবলসে। তারপরই থেকে থাবা বসাতে থাকল চোট। ফিরে আসার আপ্রাণ চেষ্টা চলল ঠিকই, কিন্তু সেই বিধ্বংসী রাফাকে আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিদায়বেলায় রাফা বলেন, ‘২০ বছরের পেশাদার ক্যারিয়ার আমার। এই ভালো ও খারাপ সময়ে আপনারা আমার পাশে ছিলেন, খেলার অনুপ্রেরণা জুগিয়েছিলেন। আমি টেনিস খেলতে খেলতে ক্লান্ত নই, আমার শরীর চায় না আমি খেলা চালিয়ে যাই। আমি এটা মেনে নিয়েছি। তবে আমি ভাগ্যবান নিজের পছন্দের খেলা দীর্ঘদিন খেলতে পেরেছি।’

মোস্তফা/এমএম

×