
ছবি: সংগৃহীত
কাশ্মীর নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনার মধ্যেই কর্ণাটকে ঘটল মর্মান্তিক এক ঘটনা। স্থানীয় একটি ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালে ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ স্লোগান দেওয়ার অভিযোগে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালুরু জেলার কুডুপু এলাকায়।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ এপ্রিল বিকেলে কুডুপু গ্রামের ভাত্রা কাল্লুর্তি মন্দিরের কাছে স্থানীয় একটি ক্রিকেট ম্যাচ চলছিল। সেখানেই এক ব্যক্তি ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলে চিৎকার করেন বলে অভিযোগ ওঠে। এরপরই উপস্থিত জনতা ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে ঘিরে ধরে এবং লাঠি দিয়ে মারধর করে। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
ম্যাঙ্গালুরুর পুলিশ কমিশনার অনুপম আগরওয়াল জানান, প্রাথমিকভাবে ঘটনাস্থল থেকে একটি অজ্ঞাত মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশ ‘অস্বাভাবিক মৃত্যু’ মামলা রুজু করে। পরে ময়নাতদন্তে দেখা যায়, একাধিক জায়গায় গুরুতর আঘাত ও চিকিৎসার অভাবে মৃত্যু হয়েছে। এরপর ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (BNS), ২০২৩-এর ১০৩(২) ধারায় হত্যা মামলা রুজু করা হয়, যা পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির দলবদ্ধ হামলার ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
এখন পর্যন্ত কী জানা গেছে?
এ ঘটনায় ১৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
আরও অন্তত ১০ জন পলাতক, যাদের খোঁজ করছে পুলিশ।
প্রধান অভিযুক্ত শচীন নামের এক ব্যক্তি কুডুপুরের বাসিন্দা; তিনি পুলিশের হেফাজতে আছেন।
পুলিশ সিসিটিভি ফুটেজ ও মোবাইল ডেটা বিশ্লেষণ করে ঘটনার বিস্তারিত জানার চেষ্টা করছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর বলেছেন, “এই ধরণের ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক ও নিন্দনীয়। রাজ্যে আইন-শৃঙ্খলা নিজের হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারও নেই। কেউ যদি ‘পাকিস্তান জিন্দাবাদ’ বলে থাকে, তাহলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ছিল, পিটিয়ে হত্যা নয়।”
তিনি আরও বলেন, কর্ণাটক একটি শান্তিপূর্ণ রাজ্য এবং এ ধরনের হিংসাত্মক ঘটনা কোনোভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।
এই ঘটনায় ভারতজুড়ে ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। রাজনৈতিক মহল, মানবাধিকার সংগঠন ও সাধারণ মানুষ একে ‘মব লিঞ্চিং’ বলে অভিহিত করে এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে।
এসএফ