
প্রিমিয়ার ক্রিকেট লিগের ট্রফি নিয়ে আবাহনীর অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ও কোচ হান্নান সরকার (ডানে)
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগ (ডিপিএল) বাংলাদেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের ঐতিহ্যবাহী এক টুর্নামেন্ট। বিপিএলের আগে এটিই ছিল সবচেয়ে জৌলুসপূর্ণ। পঞ্চাশ ওভারের আসরে প্রায়শ শিরোপার পথে নিয়ামক হয়ে উঠত আবাহনী-মোহামেডান দ্বৈরথ। গত দেড় দশকে আবাহনী যেখানে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠেছে, সেখানে ক্রমশ পিছিয়ে পড়ে মোহামেডান।
লিগ-পর্বে নিয়মিত দেখা হলেও দু-দলের ম্যাচ দিয়ে শিরোপার নির্ধারণের উত্তাপটাই যেন হারিয়ে যাচ্ছিল। শান্ত-মুশফিকের মতো জাতীয় তারকারা জিম্বাবুয়ে সিরিজে চলে গেলেও এই ম্যাচ নিয়ে আগ্রহের কমতি ছিল না। কিন্তু এবারও পারল না মোহামেডান। মিরপুরের শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে সুপার লিগের ফিরতি লড়াইয়ে ‘অঘোষিত ফাইনাল’ রূপ নেওয়া ম্যাচে ৬ উইকেটে জয়ের পথে মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের স্বপ্ন গুঁড়িয়ে হ্যাটট্রিক শিরোপা ঘরে তুলল মোসাদ্দেক হোসেনের আবাহনী লিমিটেড।
ডিপিএলে আবাহনীর হ্যাটট্রিক শিরোপা এটি। একই সঙ্গে ২০১৮-২০২০ এবং ২০০৭-২০০৯ মৌসুমের পর তৃতীয়বারের মতো পেল হ্যাটট্রিকের স্বাদ। সব মিলিয়ে ২৪ত শিরোপা। অন্যদিকে মোহামেডান ৯ বার চ্যাম্পিয়ন হলেও ২০১৩-২০১৪ মৌসুমে লিগ লিস্ট-এ মর্যাদা পাওয়ার পর আর কোনো শিরোপা জিততে পারেনি। শেষ শিরোপা ২০০৯-১০-এ। ২ পয়েন্টে, এমনকি রান রেটেও এগিয়েছিল আবাহনী।
কিন্তু ‘আসল হিসাব’ হেড টু হেড বিবেচনায় ছিল পিছিয়ে। ফলে পরিত্যক্ত বা টাই হলেও চলত আবাহনীর। অন্যদিকে জিততেই হতো মোহামেডানকে। সেখানে চিরপ্রতিদ্বন্দীদের উড়িয়ে দিয়েই শিরোপার উল্লাসে মাতল আকাশী-নীল জার্সিধারীরা। ১৬ ম্যাচের ১৪টি ম্যাচ জিতে আবাহনীর পয়েন্ট ২৮। সমান ম্যাচে মোহামেডানের ২৪ পয়েন্ট।
নাজমুল হোসেন শান্ত নেই, আম্পায়ারের সঙ্গে বাচসায় জড়িয়ে নিষিদ্ধ তাওহীদ হৃদয়, ফয়সালার ম্যাচে মোহামেডানকে নেতৃত্ব দেন ওপেনার রনি তালুকদার। মঙ্গলবার মিরপুরে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা সাদা-কালো শিবির ৭ উইকেটে ২৪০ রানের সাদামাটা স্কোর গড়ে। রনি ৪৭ বলে ৪৫, ফরহাদ হোসেন ৫৬ বলে ৪২, মাহমুদুল্লাহ ৬২ বলে ৫০ ও আরিফুল ইসলাম ৫৭ বলে করেন ৫০ রান।
মৃতুঞ্জয় চৌধুরী ও মোসাদ্দেক নেন দুটি করে উইকেট। জবাবে ৪০.৪ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় আবাহনী। ৫৩ বলে ৫৫ রান করে আউ টহন জিসান আলম। ৭৯ বলে ৬৬ রানে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ মিথুন।
স্পিন বোলিংয়ে ২ উইকেট নেওয়ার পর ব্যাট হাতে ৬ চার ও ৫ ছক্কায় ৬৫ বলে অপরাজিত ৭৮ রান করে ম্যাচসেরা অধিনায়ক মোসাদ্দেক। মোহামেডানের জার্সিতে এদিন মাঠের খেলায় ব্যর্থ হলেও হারের পর ড্রেসিং রুমে ফেরার পথে হঠাৎই দর্শকের দিকে তেড়ে গিয়ে সমালোচনার জন্ম দিয়েছেন অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ!