
৬০ রানে ৬ উইকেট নিয়ে মাঠ ছাড়ছেন বাংলাদেশের তাইজুল ইসলাম, মঙ্গলবার চট্টগ্রামের বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান স্টেডিয়ামে
চট্টগ্রামে দারুণ একটা দিন কাটিয়েছে বাংলাদেশ দল। বিশেষ করে টপ অর্ডার ব্যাটাররা দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন। চা বিরতির পর হঠাৎ ছন্দপতনে ২০ রানের মধ্যে ৪ উইকেট না হারালে দ্বিতীয় দিন বেশ স্বস্তি নিয়েই শেষ করতে পারতো বাংলাদেশ দল। তবু চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনশেষে জিম্বাবুয়ের চেয়ে ৬৪ রানে এগিয়ে থেকে বেশ ভালো অবস্থানেই আছে টাইগাররা।
আগের দিনের ৯ উইকেটে ২২৭ রান নিয়ে খেলতে নেমে আর এগোতে না পেরে গুটিয়ে গেছে জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস। জবাবে বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ তুলেছে ৭ উইকেটে ২৯১ রান। ৩ উইকেট হাতে নিয়ে আজ লিডটাকে আরও বাড়িয়ে নেওয়ার লক্ষ্যে ব্যাটিংয়ে নামবেন ১৬ রানে অপরাজিত মেহেদি হাসান মিরাজ ও ৫ রানে ক্রিজে থাকা তাইজুল ইসলাম।
জিম্বাবুয়ের অভিষিক্ত লেগস্পিনার ভিনসেন্ট মাসেকেসা শেষ বিকেলে ঘূর্ণি জাদু দেখিয়ে ৩ উইকেট নিয়ে সেরা বোলার। তিনিসহ সফরকারী দলের স্পিনাররাই কিছুটা প্রভাব ফেলতে পেরেছেন।
চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম দিনই বাংলাদেশের বোলাররা দুর্দান্ত পারফর্ম করেছেন। বিশেষ করে বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম একাই ৫ উইকেট নিয়ে ধসিয়ে দিয়েছেন তাদের ব্যাটিং মেরুদ-। ৯ উইকেটে ২২৭ রান নিয়ে মঙ্গলবার সকালে ব্যাটিংয়ে নামে তারা। কিন্তু দিনের প্রথম বলেই তাইজুল কট বিহাইন্ডের ফাঁদে ফেলেন ব্লেসিং মুজারাবানিকে। তাই ২২৭ রানেই থেমে যায় জিম্বাবুয়ের প্রথম ইনিংস।
তাইজুল নেন ২৭.১ ওভারে ৬ মেডেনে ৬০ রান দিয়ে ৬ উইকেট। অফস্পিনার নাঈম হাসানের ঝুলিতে ছিল ২টি শিকার। এরপর ব্যাটিংয়ে নেমে প্রথম থেকেই বেশ সাবলীল ব্যাটিং করেছেন বাংলাদেশের ওপেনাররা। প্রায় ৩ বছর পর ফেরা এনামুল হক বিজয় ছিলেন বেশ সতর্ক। তার সঙ্গে সাদমান নির্বিঘেœ ব্যাট চালিয়েছেন। সাগরিকার উইকেটে স্বচ্ছন্দে ব্যাট চালিয়ে তিনি ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ ফিফটি পেয়েছেন মাত্র ৭৮ বলে।
বিনা উইকেটে ১০৫ রান নিয়ে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। বিরতির পর বিজয় বেশিক্ষণ থাকতে পারেননি। তিনি সাজঘরে ফেরেন মুজারাবানির পেসে এলবিডব্লিউ হয়ে। ৮০ বলে ৪ চারে ৩৯ রান করেন বিজয়। ফলে ১১৮ রানের উদ্বোধনী জুটি ভেঙে যায়।
সর্বশেষ ১২ ইনিংসে বাংলাদেশ টেস্টে ওপেনিং জুটিতে ৫০ রানও করতে পারেনি। আর ২০২২ সালের ডিসেম্বরে এই সাগরিকাতেই ভারতের বিপক্ষে সর্বশেষবার ওপেনিং জুটি ১০০ রান করতে পেরেছে। সব মিলিয়ে ৩২ ইনিংস পর আবার ওপেনিং জুটিতে ১০০ রান করলেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা।
সাকল্যে এটি টেস্টে বাংলাদেশের দশম শতরানের উদ্বোধনী জুটি। মুমিনুল হকের সঙ্গে দ্বিতীয় উইকেটে আরও ৭৬ রান যোগ করেন সাদমান এবং পেয়ে যান ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি। ২০২১ সালে হারারেতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে অপরাজিত ১১৫ রান করেছিলেন।
এবার তিনি থেমেছেন ১৮১ বলে ১৬ চার, ১ ছয়ে ক্যারিয়ারসেরা ১২০ রানে। তার ১ বল আগেই মুমিনুল ৬৪ বলে ২ চার, ১ ছয়ে ৩৩ রানে সাজঘরে ফেরেন। পরে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুশফিকুর রহিম ৬৫ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু ৩ উইকেটে ২০৫ রান নিয়ে চা বিরতিতে যাওয়া বাংলাদেশ বিপর্যস্ত হয় ৫৪ বলে ৩ চার, ১ ছয়ে ২৩ রানে শান্তর বিদায়ের পর। মুশফিকও ৫৯ বলে ৪ চার, ১ ছয়ে ৪০ করে রান আউট, জাকের আলী ৫ ও নাঈম ৩ রানে সাজঘরে ফিরলে মাত্র ২০ রানের ব্যবধানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। তবে পরবর্তী ৪ ওভার নির্বিঘেœ কাটিয়ে শেষ করেছেন মিরাজ ও তাইজুল।