
.
সাড়ে ৬ বছর পর সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলতে নামে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। ফলের পরিবর্তন হয়নি। দু’বারই হেরেছে স্বাগতিক বাংলাদেশ। তাই দুই ম্যাচের সিরিজে এখন ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেছে জিম্বাবুয়ে। সিরিজ হার ঠেকাতে এখন চট্টগ্রাম টেস্টে জয়ের বিকল্প নেই বাংলাদেশের। আজ সকাল ১০টায় মাঠে গড়াচ্ছে দ্বিতীয় টেস্ট। ভেন্যু সাগরিকার বীরশ্রেষ্ঠ শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমান ক্রিকেট স্টেডিয়াম। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়াম নামে পরিচিত এই ভেন্যুটি নতুন নামে আজই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে যাত্রা শুরু করবে। সেই ম্যাচে জয়ের লক্ষ্য নিয়েই মাঠে নামবে বাংলাদেশ দল। এই টেস্টে কিছুটা ভিন্ন ধরনের উইকেট থাকবে। স্বাগতিক হিসেবে পরিচিত উইকেটের সুবিধা নিয়ে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে চায় স্বাগতিক দল। সেক্ষেত্রে সিলেট টেস্টের চেয়ে এবার একাদশের কম্বিনেশন কিছুটা বদলে যাবে। বাড়তি স্পিনার নিয়ে রাখা হতে পারে ২ পেসার। যদিও সিদ্ধান্তটা আজ টসের আগেই নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন সিমন্স। অন্যদিকে এই মোক্ষম সুযোগ কাজে লাগিয়ে সিরিজ জিততে চায় জিম্বাবুয়ে। তারা কোনোভাবেই চট্টগ্রাম টেস্ট হারতে চায় না।
সিলেটে ব্যাটিং ব্যর্থতাই জিম্বাবুয়ের কাছে হারের কারণ হিসেবে দেখছেন সবাই। কিন্তু হারতে থাকা দল যখন আবার নিজেদের ফেরার চিন্তায় থাকে তখনই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলে- এমনটাই এতদিন ঐতিহ্যে পরিণত হয়ে গেছে। তাদের কাছেই দীর্ঘ সময় পর টেস্টে হার কোনোভাবেই মানতে পারছেন না বাংলাদেশের সাধারণ দর্শক, ভক্ত-সমর্থক ও ক্রিকেটপ্রেমীরা। এ বিষয়ে সিমন্স বলেছেন, ‘অবশ্যই ধৈর্য ধরার কথা বলতে চাই। বিশেষ করে বাংলাদেশের মানুষদের। আমি জানি, তারা খেলাটির প্রতি কতটা আবেগপ্রবণ। নিজেদের দলকে ভালো করতে দেখতে চায়। তাই আমি ধৈর্য ধরতে অনুরোধ করছি।
আমরা ভালো খেলার জন্য ঠিকঠাক সব কাজ করার চেষ্টা করছি।’ চট্টগ্রামের উইকেট কিছুটা ভিন্ন রকমের। কন্ডিশনও আলাদা। ফাস্ট বোলার নাহিদ রানার পরিবর্তে নেওয়া হয়েছে বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামকে। তাই নিশ্চিতভাবেই আলাদা কম্বিনেশন নিয়ে নামতে যাচ্ছে বাংলাদেশ দল। বিষয়টি নিয়ে সিমন্স বলেছেন, ‘হয় ৩ পেসার, ২ স্পিনার নয়ত ৩ স্পিনার ২ পেসার (এ রকম একাদশ) হবে। তবে নির্দিষ্ট করে এখনই বলতে পারছি না। ফাইনাল সিদ্ধান্ত পরে নেব আমরা। উইকেট দারুণ লাগছে। হার্ড, ফ্ল্যাট। আমরা আশা করি এর ফায়দা নিতে পারব। কিছুটা টার্ন পেলে আশা করি ভালো হবে আমাদের জন্য।’
সিমন্স ক্রিকেট ভক্ত-সমর্থকদের ধৈর্য রাখার কথা বললেও বাংলাদেশের ব্যাটারদের সেই ধৈর্য নেই। তারা সিলেট টেস্টে বড় ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হয়েছেন। এবার এ বিষয়ে উন্নতি করতে চান সিমন্স। তিনি বলেছেন, ‘আমরা সবাই জানি প্রথম ইনিংসে ইউনিট হিসেবে আমরা ঠিকঠাক ব্যাটিং করতে পারিনি। নিজেদেরই সমস্যায় ফেলেছি। আমরা এমন ধরনের ইতিবাচক টেস্ট ক্রিকেট খেলতে চাই, যেখানে দিনে ২০০ রান করেই থেমে যাব না। মিডিয়ায় ‘ট্রানজিশন’ শব্দটি শোনা যাচ্ছে। আমাদের যেখানে পৌঁছাতে হবে সেখানে যেতে সময় লাগবে। তবে আমি খেলোয়াড়দের বলে দিয়েছি, ঢিলেঢালা শট এবং সফট ডিসমিসাল কমাতে হবে। এই অবস্থা এক, দুই বা তিন টেস্টের জন্য চলতে দেওয়া যাবে না।’ চট্টগ্রামে জিততে হলে নিশ্চিতভাবেই বাংলাদেশকে ভালো ব্যাটিং করতে হবে। তবে চিরাচরিতভাবেই এখানে স্পিনাররা কিছুটা সুবিধা পাবেন সেটাই এখন বাংলাদেশের জন্য বড় সুবিধা বয়ে আনতে পারে। একাদশে দেখা যেতে পারে সাদমান ইসলাম অনিকের পরিবর্তে এনামুল হক বিজয়কে। এছাড়া সৈয়দ খালেদ আহমেদের পরিবর্তে টেস্ট অভিষেক হয়ে যেতে পারে ডানহাতি পেসার তানজিম হাসান সাকিবের। অন্যদিকে, প্রথম টেস্ট জেতার পর ফুরফুরে মেজাজে থাকা জিম্বাবুয়ের লক্ষ্য চট্টগ্রামে হার ঠেকানো। জিততে না পারলেও ন্যূনতম ড্র করলেই সিরিজ জিতবে তারা। সেই লক্ষ্যেই তারা নামবে সাগরিকায় ১১ বছর পর।
প্যানেল