ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২ বৈশাখ ১৪৩২

চট্টগ্রাম টেস্টে স্পিন আক্রমণ বাড়াতে দলে বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম

এবার সুযোগ কাজে লাগাতে পারবেন বিজয়?

মোঃ মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ০১:২৪, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

এবার সুযোগ কাজে লাগাতে পারবেন বিজয়?

এনামুল হক বিজয়

গত কয়েক মৌসুম ধরে ঘরোয়া ক্রিকেটের সব ফরম্যাটে রানের ফোয়ারা ছুটিয়েছেন এনামুল হক বিজয়। প্রতিনিয়তই জাতীয় দলের নির্বাচকদের তাই বার্তাটা দিয়েই রাখেন ফেরার। ২০২২ সালে টেস্টে ফিরেছিলেন, টিকতে পারেননি। পরে ওয়ানডেতে দুই দফা ফিরে সর্বশেষ গত বছর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খেলেছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৩ বছর আগে যাত্রা শুরু করা বিজয় আবার ফিরেছেন। হুট করেই ডাক পেয়েছেন জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে চট্টগ্রাম টেস্টের স্কোয়াডে। না খেলেই বাদ পড়েছেন জাকির হাসান। পরিবর্তে চলমান ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে (ডিপিএল) রানের ফোয়ারা ছোটানো বিজয় এসেছেন।

৩ বছর পর টেস্ট দলে ফিরেছেন, খেলার সুযোগ পেলে এবার কি কাজে লাগাতে পারবেন এ ৩২ বছর বয়সী উইকেটরক্ষক ব্যাটার? আর পেসার নাহিদ রানা পাকিস্তান সুপার লিগ (পিএসএল) খেলতে যাবেন। তাই তাকে আগেই ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে। তার পরিবর্তে বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলামকে নেওয়া হয়েছে। দেশের জার্সিতে ৪ টি২০ খেলা তানভীর এই প্রথম টেস্ট দলে এসেছেন। মূলত চট্টগ্রামে স্পিন নির্ভর একাদশ গড়ার লক্ষ্যেই পেসারের পরিবর্তে নেওয়া হয়েছে স্পিনার। 
সিলেট টেস্টে জিম্বাবুয়ের কাছে চতুর্থ দিনেই ৩ উইকেটে হেরে গেছে বাংলাদেশ। হতাশার সেই হারের পর এখন সিরিজ হারের শঙ্কা। চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশ না জিততে পারলেই সিরিজ হয়ে যাবে জিম্বাবুয়ের। তাই এবার স্পিন আক্রমণে সফরকারীদের ঘায়েলের পরিকল্পনা বাংলাদেশের। সেজন্যই টেস্ট দলে নেওয়া হয়েছে বাঁহাতি স্পিনার তানভীরকে। এ বিষয়ে প্রধান নির্বাচক গাজী আশরাফ হোসেন লিপুও এমন কথাই জানিয়েছেন। যদিও তাইজুল ইসলামের পাশাপাশি তানভীরকে খেলানো বেশ কঠিনই।

কারণ প্রথম টেস্টে অফস্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ ১০ উইকেট নিয়েছেন। স্কোয়াডে ছিলেন নাঈম হাসান, তিনি এখনো আছেন। তাই হয়তো চট্টগ্রামে নাঈমকে দেখা যেতে পারে। এরপরও তানভীরকে ভালো বিকল্প মনে করছেন নির্বাচকরা। সেজন্যই তাকে নেওয়া হয়েছে। তবে চট্টগ্রাম টেস্টের জন্য ঘোষিত দলে বড় চমক বিজয়ের অন্তর্ভুক্তি। ২০২২ সালে তিনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে টেস্ট দলে ফিরেছিলেন। মূলত ঘরোয়া লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে তার পারফর্ম্যান্স গত ৪/৫ মৌসুমেই দুর্দান্ত। রানের বন্যা বইয়ে দিয়েছেন তিনি প্রতি মৌসুমেই।

তবে সবশেষ প্রথম শ্রেণির আসর জাতীয় ক্রিকেট লিগে ১৩ ইনিংসে ১ সেঞ্চুরি ও ৬ ফিফটিতে তিনি করেছিলেন আসরের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৭০০ রান। পরে টি২০ সংস্করণের বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ১২ ইনিংসে ১ সেঞ্চুরি ও ২ ফিফটিতে ৩৯২ রান করেন দুর্বার রাজশাহীর হয়ে খেলে। 
এবার ডিপিএল আসরে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের হয়ে ১৪ ইনিংসে ৪টি করে সেঞ্চুরি ও ফিফটি করেছেন বিজয়। প্রথম কোনো বাংলাদেশী ব্যাটার হিসেবে ৫০টি সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছেন তিনি ৩ ফরম্যাট মিলিয়ে। চলতি আসরে এখন পর্যন্ত  ৭৯.৪৫ গড় ও ৯৭.৪৩ স্ট্রাইক রেটে ৮৭৪ রান করেছেন। আর কেউ সাতশ রানও করতে পারেননি। সবমিলিয়ে এসব বিবেচনায় এনে বিজয়কে ফেরানো হয়েছে জাতীয় দলে। ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক হয় এনামুলের।

এখন পর্যন্ত মাত্র পাঁচটি টেস্ট খেলে খুব একটা সুবিধা করতে পারেননি। ১০ ইনিংসে মাত্র ১০০ রান করতে পেরেছেন। এরপরও ৩২ বছর বয়সী এই ওপেনারকে ঘরের মাটিতে টেস্ট ম্যাচ খেলতে ফেরানো। বিজয় অবশ্য ডাক পেয়ে এবার ভালো কিছু করার প্রত্যয় জানিয়েছেন। গত বছর পাকিস্তান সফরে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে ৪ দিনের ম্যাচের দলেও ছিলেন। এবার তার পরীক্ষা ভালো কিছু করে দেখানোর।

×