ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২

ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও ব্যর্থ বাংলাদেশ

মোঃ মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ২২:২৮, ২০ এপ্রিল ২০২৫

ব্যাটিংয়ের পর বোলিংয়েও ব্যর্থ বাংলাদেশ

.

নতুন কিছু করার ঘোষণা দিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তাই সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে আগে ব্যাটিং নিয়েছেন। কিন্তু চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ে প্রথম দিন শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেক আগেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস। জিম্বাবুয়ে বোলারদের সামনে ব্যর্থ হয়েছেন বাংলাদেশী ব্যাটাররা। প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানেই থেমেছে বাংলাদেশ। শুধুমাত্র অভিজ্ঞ মুমিনুল হক অর্ধশতক হাঁকিয়ে ৫৬ ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ৪০ রানের ইনিংস খেলতে পেরেছেন। বাকিরা অগোছালো শট খেলে, দুয়েকবার জীবন ফিরে পেয়েও ভালো করতে পারেননি। লাঞ্চ বিরতি চলার সময়ে বৃষ্টির কারণে পরবর্তীতে ৩০ মিনিট খেলাও হয়নি। এতকিছুর পরও বাংলাদেশের ব্যাটাররা টিকতে পারেননি। অথচ দিনশেষে জিম্বাবুয়ে বিনা উইকেটে ৬৭ রান তুলে দেখিয়েছে ব্যাটিং করাটা সিলেটের এই মাঠে খুব কঠিন নয়। যদিও ১২৪ রানে এখন পর্যন্ত এগিয়ে বাংলাদেশ, কিন্তু আপাতত  বেকায়দায় আছেন শান্তরাই।
টস জিতে আগে ব্যাটিং নিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক শান্ত। ৩ পেসার ও ২ স্পিনার নিয়ে একাদশ সাজিয়ে নামে বাংলাদেশ। পেসার ও স্পিনারদের জন্য সমান সহায়ক উইকেটে ব্যাটিং করা সহজ হবে ধৈর্য্য রাখা গেলে। কিন্তু বাংলাদেশের দুই ওপেনার সেটি রাখতে ব্যর্থ হয়েছেন। সাদমান ইসলাম অনিক নবম ওভারে ফিরে গেছেন ২৩ বলে ১২ আর মাহমুদুল হাসান জয় আউট হন ১১তম ওভারে ৩৫ বলে ১৪ রান করে। দু’জনকেই সাজঘরে পাঠিয়েছেন পেসার ভিক্টর নিয়াউচি। ৩২ রানে ২ উইকেট হারানোর পর ওয়ানডাউনে নেমে মুমিনুল ও চারে নামা শান্ত দারুণ প্রতিরোধ গড়েছেন। শান্ত কিছু আলগা শট খেললেও মুমিনুল সতর্ক ছিলেন। ২ উইকেটে ৮৪ রানে লাঞ্চ বিরতিতে যায় বাংলাদেশ মাত্র ২৪ ওভার ব্যাট করে। কিন্তু বিরতির সময় শুরু বৃষ্টির কারণে নির্দিষ্ট সময়ের আধা ঘণ্টা পর শুরু হয় খেলা। বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি শান্ত, ব্লেসিং মুজারাবানির পেসে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্টে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। তিনি ৬৯ বলে ৬ চারে ৪০ রান করেন। এরপর জোড়া আঘাত হেনেছেন অভিজ্ঞ স্পিনার ওয়েলিংটন মাসাকাদজা। অভিজ্ঞ মুশফিক মাত্র ৩৮ মিনিট ক্রিজে থেকে ১৮ বল মোকাবিলা করে ৪ রানে আলগা শটে ফিরে গেছেন মাসাকাদজার স্পিনে। তিনিই ফিরিয়ে দেন ২২তম ফিফটি করা মুমিনুলকেও। মুমিনুল ১০৫ বলে ৮ চার, ১ ছক্কায় ৫৬ রানে সাজঘরে ফেরেন।
এরপরই ধসে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইন। মেহেদি হাসান মিরাজ ১, তাইজুল ইসলাম ৩ রানে আউট হলে ১৪৬ রানেই ৭ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। দ্বিতীয় সেশনে হওয়া ২৬ ওভারেই ৭০ রানে ৫ উইকেট হারায় স্বাগতিকরা। ৭ উইকেটে ১৫৪ রানে চা বিরতিতে যায় বাংলাদেশ। অষ্টম উইকেটে জাকের আলী অনিক ও হাসান মাহমুদ ৪১ রানের জুটি গড়ে দুশোর কাছাকাছি নিয়ে যান দলকে। ১০ রানে ক্যাচ দিয়ে বেঁচে গিয়েও জাকের বেশিদূর যেতে পারেননি। বাজে শট খেলে ৫৯ বলে ৬ চারে ২৮ রানে সাজঘরে ফেরেন ওয়েসলি মাধেভেরের স্পিনে। তার আগেই হাসান ৩০ বলে ৪ চারে ১৯ রান করে মুজারাবানির পেসে বোল্ড হন। শেষ পর্যন্ত ১৯১ রানেই গুটিয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। এ নিয়ে নবমবার টেস্টে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০ রানের নিচে অলআউট হয়েছে বাংলাদেশ। তবে ২০০১ সালের পর এই প্রথম ম্যাচের প্রথম ইনিংসেই জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে দুশোর নিচে গুটিয়ে গেছে। ৩টি করে উইকেট নেন মুজারাবানি ও মাসাকাদজা এবং নিয়াউচি ও মাধেভেরে নেন ২টি করে উইকেট। ২১ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ারসেরা নৈপুণ্য দেখিয়েছেন ওয়েলিংটন। দিনশেষে সাবলীল ব্যাটিংয়ে বিনা উইকেটে ৬৭ রান তুলে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে যাচ্ছে জিম্বাবুয়ে। মাত্র ১২৪ রানে পিছিয়ে তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর॥ বাংলাদেশ প্রথম ইনিংস- ১৯১/১০; ৬১ ওভার (মুমিনুল ৫৬, শান্ত ৪০, জাকের ২৮, হাসান ১৯; ওয়েলিংটন ৩/২১, মুজারাবানি ৩/৫০, মাধেভেরে ২/২ ও নিয়াউচি ২/৭৪)।
জিম্বাবুয়ে ১ম ইনিংস- ৬৭/০; ১৪.১ ওভার (বেনেট ৪০*, বেন ১৭*)।
*প্রথম দিনশেষে

প্যানেল

×