
রিয়ালের জালে বল জড়িয়ে দ্বিতীয় লেগেও আর্সেনালের জয় নিশ্চিত করেন মার্টিনেল্লি
ফিরে আসার গল্পে রিয়াল মাদ্রিদের শ্রেষ্ঠত্ব সবারই জানা। অসাধারণ সব গল্প রচনা করে নিজেদের অতীত ইতিহাসকে সমৃদ্ধ করে রেখেছে স্পেনের জায়ান্ট ক্লাবটি। যে কারণেই উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লীগের কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম লেগে আর্সেনালের বিপক্ষে ৩-০ গোলে পিছিয়ে পড়েও হাল ছাড়েনি রিয়াল মাদ্রিদের ভক্ত-সমর্থকরা।
তাছাড়া দ্বিতীয় লেগের ম্যাচটা ছিল নিজেদের মাঠ সান্তিয়াগো বার্নাব্যুতে। তাই আবারও কামব্যাকের নতুন ইতিহাস গড়ার স্বপ্নে বিভোর ছিল রিয়াল মাদ্রিদের সমর্থকেরা। কিন্তু এবার আর তা হতে দেয়নি আর্সেনাল। বরং প্রথম লেগের মতো দ্বিতীয় লেগেও জয় তুলে নেয় ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের জায়ান্ট ক্লাবটি। বুধবার দ্বিতীয় লেগের ম্যাচে আর্সেনাল ২-১ গোলে পরাজিত করে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের রেকর্ড ১৫বারের চ্যাম্পিয়নদের। ফলে দুই লেগ মিলিয়ে আর্সেনাল ৫-১ ব্যবধানে রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে।
সেইসঙ্গে ২০০৯ সালের পর এবারই প্রথম ইউরোপ সেরার এই টুর্নামেন্টের শেষ চারে জায়গা করে নেয় আর্সেনাল। চলতি শতাব্দীতে সবমিলিয়ে এটা গানারদের তৃতীয়বার সেমিফাইনালে উঠার নজির। এর আগে ২০০৬ সালে ফাইনালে উঠেও শিরোপা বঞ্চিত হয়েছিল তারা। ২০০৯ সালে সেমিফাইনাল থেকেই ছিটকে যায় তারা।
তবে এবার নতুন ফরম্যাটে আসরের শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলে আর্সেনাল। যদিওবা বুধবার দ্বিতীয় লেগের ম্যাচ শুরুর দ্বিতীয় মিনিটে ভিনিসিয়াসের ক্রসে জালে বল পাঠান এমবাপে, কিন্তু পরিষ্কার অফসাইডে তা বাতিল করে দেন রেফারি। এরপর দুটি আক্রমণ করে আর্সেনাল। প্রথম লেগে দুর্দান্ত পারফর্ম করা বুকায়ো সাকা দুটি শট নেন, প্রথমটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়ার পরেরটি ঝাঁপিয়ে কর্নারের বিনিময়ে আটকে দেন থিবো কোর্তোয়া। এক পর্যায়ে কর্নারের সৌজন্যে সেমি-ফাইনালের পথে আরও এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ পায় আর্সেনাল। কর্নারে উড়ে আসা বল কোর্তোয়া গ্লাভসে জমালেও, ছয় গজ বক্সের বাইরে মিকেল মেরিনোকে ডিফেন্ডার রাউল আসেন্সিও ফাউল করে বসেন। রেফারি অবশ্য শুরুতে দেখেননি; তবে ভিএআর মনিটরে দেখে পেনাল্টির বাঁশি বাজান তিনি। সুযোগটি যদিও হেলায় হারান সাকা। ইংলিশ ফরোয়ার্ডের দুর্বল স্পট কিকে আটকে দলকে লড়াইয়ে রাখেন কোর্তোয়া।
এরপর আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ চললেও প্রথমার্ধে গোলের দেখা পায়নি কেউ। তবে ৬৫ মিনিটে গোল করে স্বাগতিক সমর্থকদের হতাশ করে আর্সেনাল। দেখেশুনে ছোট ছোট পাসে শানানো আক্রমণে মেরিনো দারুণ এক থ্রু পাস বাড়ান বক্সে, আর চোখের পলকে ছুটে গিয়ে চিপ শটে কোর্তোয়ার ওপর দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন বুকায়ো সাকা।
এর ২ মিনিট পরই গোল করে রিয়াল মাদ্রিদ। এসময় মারাত্মক এক ভুল করে বসেন আর্সেনাল ডিফেন্ডার উইলিয়াম সালিবা। গোলরক্ষকের পাস পেয়ে মুভ করতে দেরি করে ফেললেন, ডান পাশ দিয়ে ছুটে আসছেন ভিনিসিয়াস, খেয়ালও করলেন না। সেই সুযোগে তার থেকে বল কেড়ে নিয়ে জোরাল শটে ১-১ সমতায় ফেরান রিয়ালের এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। তবে এদিন রিয়ালের সান্ত্বনা কেবল এই একটা গোলই। কেননা, যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে মেরিনোর থ্রু বল ধরে গোল করে আর্সেনালকে যে দ্বিতীয় লেগেও জয় উপহার দেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড মার্তিনেল্লি। দুই লেগ মিলিয়ে আর্সেনাল ৫-১ ব্যবধানে রিয়াল মাদ্রিদকে হারিয়ে প্রায় দেড় দশক পর সেমিফাইনালে জায়গা করে নেয়। ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে ফরাসি ক্লাব পিএসজির মুখোমুখি হবে আর্সেনাল।
আরেক সেমিফাইনালে বার্সেলোনার প্রতিপক্ষ ইন্টার মিলান। বুধবার দ্বিতীয় লেগে ইতালিয়ান ক্লাবটি ২-২ গোলে ড্র করে বায়ার্ন মিউনিখের সঙ্গে। ফলে সমষ্টিগত ভাবে ৪-৩ ব্যবধানে বায়ার্নকে হারিয়ে সেমিফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে ইন্টার মিলান।
মোস্তফা/আবীর