.
ক্লাবের নিকনেমটা ‘জায়ান্ট কিলার’। মাঝারি শক্তিমত্তার অধিকারী। মাঝে মধ্যেই নিজেদের চেয়ে শক্তিশালী দলগুলোকে হারিয়ে আলোড়ন সৃষ্টি করে। বড় দলগুলোর কাছে আতঙ্কের মতো। যেন ‘পচা শামুক’! যাতে পা কাটে। তারা বরাবরই সমীহ করে ১৯৩৩ সালে পুরান ঢাকায় প্রতিষ্ঠিত হওয়া ক্লাবটিকে। আলোচিত ক্লাবটির নাম রহমতগঞ্জ মুসলিম ফ্রেন্ডস সোসাইটি। ফেডারেশন কাপ ফুটবলে তারা দু’বারের রানার্সআপ (২০১৯ ও ২০২১)। মঙ্গলবার এই আসরের ‘অলিখিত সেমিফাইনাল’-এ (কোয়ালিফিকেশন রাউন্ড টু দ্য ফাইনাল থ্রি) ৮১ মিনিট পর্যস্ত এগিয়ে থেকেও দুভার্গ্যক্রমে জিততে পারেনি। ঢাকার বসুন্ধরা কিংস এ্যারেনায় অনুষ্ঠিত ম্যাচে প্রতিপক্ষ ও স্বাগতিক বসুন্ধরা কিংসের কাছে ২-১ গোলে হেরে যায়। ফলে তৃতীয়বারের মতো ফাইনালে ওঠার স্বপ্নভঙ্গের বেদনায় পোড়ে ‘ডাইলপট্টি’ খ্যাত এই ক্লাবটি। আগামী ২২ এপ্রিল ময়মনসিংহে অনুষ্ঠিতব্য ফাইনালে ঢাকা আবাহনী লিমিটেডের বিরুদ্ধে ফাইনালে খেলবে কিংস (পঞ্চমবারের মতো)। ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার ড্যাসিয়েল স্যান্তোস লিগে মোহামেডানের গোল আটকাতে পারেননি। রহমতগঞ্জের বিপক্ষে আর্জেন্টিনার ফরোয়ার্ড জুয়ান লেসকানো নিজের ঝলক দেখাতে পারেননি। বরং তার জায়গায় নতুন এক খেলোয়াড় ইনসান হোসেনকে নামান কোচ ভ্যালেরি তিতা। তাতেই কিংসের বাজিমাত। টাইব্রেকারে ম্যাচ গড়াতে না দিয়ে অতিরিক্ত সময়ে খেলার নিষ্পত্তি হয়।
ম্যাচে দুই দলই খেলেছে সমানতালে। রহমতগঞ্জ আগে গোলের দেখা পায়। ম্যাচের তখন ৭৬ মিনিট। নাবীব নেওয়াজ জীবনের কাটব্যাকে তপু বর্মণের পায়ের ফাঁক দিয়ে বল পেয়ে সলোমন কিং ডান পা থেকে বাঁ পায়ে বল নিয়ে দারুণ এক শটে গোল করে সমতায় ফেরে কিংস। সাদ উদ্দিন গোল করেন (১-১)। এক ডিফেন্ডার যেমন আটকাতে পারেননি, তেমনই গোলকিপার আহসান বিপুও হাত বাড়িয়েও গোল হজম থেকে দলকে রক্ষা করতে পারেননি।
অতিরিক্ত সময়ে কোচ আর্জেন্টাইন স্ট্রাইকার লেসকানোকে তুলে নেন। চন্দন, জনি ও উদীয়মান ইনসানকে নামান। তাতে আক্রমণে ধার বাড়ে স্বাগতিকদের। তবে ১১১ মিনিটে অপ্রীতিকর ঘটনা। গোলকিপার বিপু পোস্ট ছেড়ে বেরিয়ে এসে নিজেদের ডাগ আউটের দিকে চলে আসেন। তার পেছনে গ্যালারি থেকে দর্শকরা নানান কথা বলছিল। যা নিতে পারেননি বিপু। এরপর সেখানে গিয়ে ম্যাচ রেফারি দর্শকদের বুঝিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করেন। পুলিশও মোতায়েন করা হয়।
১১৩ মিনিটে কিংস জয়সূচক গোলটি করে। রাকিবের ক্রসে সুপার সাব ইনসান দুই ডিফেন্ডারের মাঝ দিয়ে লাফিয়ে উঠে দারুণ এক হেডে জাল কাঁপান (২-১)।
পাগলাটে উদযাপন করতে জার্সি খুলে হলুদ কার্ড দেখেন বদলি নামা এই ফুটবলার। শেষ পর্যন্ত ওই গোলেই জিতে ফাইনালে ওঠার চিত্তসুখ নিয়ে মাঠ ছাড়ে তিতার শিষ্যরা।
প্যানেল
