ঢাকা, বাংলাদেশ   রোববার ১৩ এপ্রিল ২০২৫, ৩০ চৈত্র ১৪৩১

৯ বছর পর আবাহনীকে হারাল মোহামেডান

মোঃ মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ২৩:২৬, ১২ এপ্রিল ২০২৫

৯ বছর পর আবাহনীকে হারাল মোহামেডান

.

২০১৬ সালের ১২ মে মিরপুর শেরেবাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে শেষবার হেসেছিল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব। সেই মিরপুরেই আবার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনী লিমিটেডকে হারিয়েছে তারা ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল)। ৯ বছর আগে আবাহনীকে প্রাথমিক রাউন্ডে ৮ উইকেটে হারিয়ে দেওয়া মোহামেডান সেবারই সুপার লিগে ২৬০ রানে হেরে যায়। মাঝে আর লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে কোনো ম্যাচেই আবাহনীকে হারাতে পারেনি মোহামেডান। এবার ৩৯ রানে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বীদের হারিয়ে সেই আক্ষেপ ঘুচিয়েছে তারা। প্রাথমিক রাউন্ড শেষে চলমান ডিপিএলে ১১ ম্যাচ শেষে সমান ১৮ পয়েন্ট দুই দলের। তবে আসরের বাইলজ অনুসারে হেড-টু-হেড বিবেচনায় শীর্ষে থেকেই সুপার লিগে পা রাখল মোহামেডান। একই দিনে বিকেএসপিতে গুলশান ক্রিকেট ক্লাবের কাছে ৫ উইকেটে হেরে প্রাইম ব্যাংক সুপার লিগে উঠতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই ষষ্ঠ দল হিসেবে সুপার লিগ নিশ্চিত করেছে এক ম্যাচ বাকি থাকা অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। আরেক ম্যাচে রূপগঞ্জ টাইগার্স ক্রিকেট ক্লাব ২৮ রানে হারিয়েছে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে। এতে রূপগঞ্জের রেলিগেশন এড়ানোর ভালো সুযোগ তৈরি হয়েছে।
মিরপুরে শনিবার টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নামে। দলীয় ৩৩ রানে রনি তালুকদার (১৬), এর পর দ্বিতীয় উইকেটে আনিসুল ইসলাম ইমন ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ১২৩ রানের জুটি গড়েন। এতে বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় মোহামেডান। দুর্দান্ত খেলছিলেন আনিসুল ইসলাম ইমন। তবে মাহিদুল ৫৫ বলে ৫ চার, ১ ছয়ে ৪৮ ও অধিনায়ক তাওহিদ হৃদয় ৩ রানে বিদায় নিলে রানের গতি কমে মোহামেডানের। চতুর্থ উইকেটে আনিসুলের সঙ্গে মুশফিকুর রহিম ৪০ রানের জুটি গড়েন। এতে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পেয়ে যান আনিসুল। মুশফিক ২৬ বলে ২০ রানে সাজঘরে ফেরার কিছুক্ষণ পরই আনিসুল ১১৮ বলে ১৮ চার, ২ ছক্কায় ১১৪ রানে নাহিদ রানার দ্বিতীয় শিকার হন। এরপর আর কেউ ভালো ইনিংস খেলতে পারেননি। ফলে ৪৮.২ ওভারে ২৬৪ রানে গুটিয়ে যায় মোহামেডান। নাহিদ ৩টি এবং মৃত্যুঞ্জয় চৌধুরী, রাকিবুল হাসান ও মাহফুজুর রহমান রাব্বি ২টি করে উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে ৫৯ রানেই ৩ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে আবাহনী। চতুর্থ উইকেটে অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও মুমিনুল হক ৬৭ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু মুমিনুল ৩৮ বলে ১ চারে ২৫ রানে বিদায় নেন। এরপর লড়াইটা শান্ত একাই করেছেন। কিন্তু দলকে জেতাতে পারেননি। এবাদত হোসেনের পেস দাপটে আবাহনী ৪৭.২ ওভারে ২২৫ রানে গুটিয়ে যায়। শান্ত ১১৩ বলে ৭ চারে ৮০ রানে বিদায় নেন। মোসাদ্দেক হোসেন ২৪ ও মৃত্যুঞ্জয় ২৪ রান করেন। এবাদত ৩৬ রানে ৪ উইকেট নেন। দুটি করে শিকার মেহেদি হাসান মিরাজ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের। ৯ বছর পর ডিপিএল লিস্ট ‘এ’ ম্যাচে আবাহনীকে হারালেও ২০২১ সালে ডিপিএল টি২০ আসরে আরেকবার আবাহনীকে হারাতে পেরেছে তারা।
বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে গুলশানের মুখোমুখি হয় প্রাইম ব্যাংক। জিতলে সুপার লিগে ওঠার সুযোগ থাকত, কিন্তু প্রাইম ব্যাংক হেরেছে ৫ উইকেটে। আগে ব্যাট করে তারা ৪৭.৩ ওভারে ২০৩ রানে গুটিয়ে যায়। সাজ্জাদুল হক ৭৩ বলে ৩ চার, ২ ছক্কায় ৫১, ইরফান শুক্কুর ৭৪ বলে ২ চারে ৪৩ ও নাইম শেখ ২৬ বলে ৪ চার, ২ ছক্কায় ৩৬ রান করে। মেহেদি হাসান ৩টি এবং নাঈম ইসলাম, নিহাদউজ্জামান ও আসাদুজ্জামান পায়েল ২টি করে উইকেট নেন। জবাবে গুলশান অধিনায়ক আজিজুল হাকিম তামিমের করা ক্যারিয়ারের প্রথম শতকে ৩৭.১ ওভারে ৫ উইকেটে ২০৪ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয়। আজিজুল ১০৬ বলে ১০ চার, ৩ ছক্কায় ১০৫ রান করেন। খালিদ হাসান ৩৪ বলে ২ চার, ৩ ছক্কায় ৩৮ ও জাওয়াদ আবরার ৪৮ বলে ২ চার, ১ ছয়ে ৩৩ রান করেন। ২ উইকেট নেন নাঈম আহমেদ। বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে আব্দুল মজিদের সেঞ্চুরিতে রূপগঞ্জ টাইগার্স ৬ উইকেটে ২৫০ রান তোলে। মজিদ ১৩৯ বলে ৬ চার, ২ ছক্কায় ১০২ রানে অপরাজিত থাকেন। মাহমুদুল হাসান ৫৪ বলে ৩ চার, ২ ছয়ে ৫৬ ও নাসির হোসেন ২৩ রান করেন। শরীফুল ইসলাম ও মোহাম্মদ ওয়ালিদ ২টি করে উইকেট নেন। জবাবে ৪৮.১ ওভারে ২২২ রানে থামে শাইনপুকুর। মইনুল ইসলাম ২৭ বলে ৭ চার, ৩ ছক্কায় ৫০, রহিম আহমেদ ৫৩ ও শারিয়ার সাকিব ৫০ রান করেন। মাহমুদুল ৪টি ও আওলাদ হোসেন ৩টি উইকেট নেন।

প্যানেল

×