
বিকেএসপিতে সোমবার এই টসের পরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তামিম ইকবাল
ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকের পর তামিম ইকবালের হার্টে রিং পরানো হয়েছে, হাসপাতালে ৪৮ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (সিসিইউ) সাবেক জাতীয় অধিনায়ক, দেশ বিদেশের তারকা ক্রিকেটারদের প্রার্থনা
শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে টসও করেছিলেন মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব অধিনায়ক তামিম ইকবাল। বুকে ব্যথা অনুভব করলে ফিল্ডিংয়ে নামতে পারেনি। দ্রুতই বদলে যেতে থাকে পরিস্থিতি। ব্যথা বাড়তে থাকে, চোয়াল শক্ত হয়ে আসে। ৩০ মিনিটের মধ্যে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টার উড়ে আসে। যদিও তখন আর ঢাকায় আসার মতো পরিস্থিতি ছিল না। ভর্তি করা হয় স্থানীয় কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতালে।
ম্যাসিভ হার্ট অ্যাটাকের পর কিংবদন্তি এ ক্রিকেটারের হার্টে জরুরি রিং পরানো হয়। সোমবার সাভারের বিকেএসপিতে ঢাকা প্রিমিয়ারি লিগে (ডিপিএলে) মাঠ থেকেই জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে পৌঁছে যাওয়া তামিমের জন্য দেশজুড়ে চলছে প্রার্থনা। মোহামেডানকে ম্যাচ জিতিয়েই হাসপাতালে ছুটে গেছেন মুশফিকুর রহীমসহ সব ক্রিকেটার। প্রার্থনা জানিয়েছেন মাশরাফি বিন মুর্তজা, লাসিথ মালিঙ্গাসহ দেশ-বিদেশের অনেক কিংবদন্তি। হাসপাতাল ও বিসিবি সূত্রে জানা গেছে, পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলেও তামিমকে ৪৮ ঘণ্টা নিবিড় পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে (সিসিইউ) রাখা হবে।
বিকেএসপির পাশেই কেপিজে স্পেশালাইজড হসপিটালের (সাবেক ফজিলাতুন্নেসা মুজিব হাসপাতল) মেডিকেল ডিরেক্টর রাজীব হাসান এক প্রেস ব্রিফিংয়ে বিস্তারিত জানিয়ে বলেন,‘তামিম ভাই আজকে সকালে সাড়ে ৯টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই অবস্থায় তাকে এখানে আনা হয় এবং চিকিৎসা শুরু হয়। পরবর্তীতে চিন্তা করি যে, তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া যাবে না। বিভিন্ন কারণে ঢাকায় নেওয়া যায়নি। পরবর্তীতে তার অবস্থা ক্রিটিক্যাল হয়ে যায়। ওই অবস্থায়ই তিনি আবার আসেন।
ওই ক্রিটিক্যাল কন্ডিশন থেকে যতগুলো চিকিৎসা প্রয়োজন, সব কিছু করা হয়েছে।’ তিনি আরও জানান,‘আল্লাহর রহমতে কন্ডিশন এখন অনুকূলে আছে। তার একটা হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। তাই একটা এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি ও একটা স্টেন্ট করা হয়েছে। ওনার স্টেন্টিং (রিং বসানো) খুব স্মুদলি ও এফিশিয়েন্টলি হয়েছে। এখন ওই ব্লকটা পুরোপুরি চলে গেছে।
আমরা যেমনটা বলছিলাম, একটু ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে ছিল, স্টেন্টিংয়ের পর এখন পর্যবেক্ষণে আছেন। ক্রিটিক্যাল অবস্থা এখনো কাটেনি। একটু সময় লাগবে। আমরা সবাই প্রাণপণ চেষ্টা করছি।’ একবার নয়, আধা ঘণ্টার মধ্যে দুই-দুইবার হার্ট অ্যাটাকে আক্রান্ত হন তামিম। এর মধ্যে দ্বিতীয়বার ছিল ম্যাসিভ (বড় রকমের)। মিরপুরে প্রধান কার্যালায়ে দুপুরে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) বোর্ড মিটিং স্থগিত করে প্রেসিডেন্ট ফারুক আহমেদসহ অন্য পরিচালকেরা দ্রুতই হাসপাতালে ছুটে যান।
তামিমের সুস্থতা কামনা করে পোস্ট দিয়েছেন অনেকে। আইপিএলের বর্তমান চ্যাম্পিয়ন কলকাতা নাইট রাইডার্স (কেকেআর) থেকে শুরু করে লঙ্কান কিংবদন্তি লাসিথ মালিঙ্গা, বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা থেকে সাবেক সতীর্থ তাসকিন আহমেদ, মেহেদি হাসান মিরাজসহ অনেকেই তামিমকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্ট দিয়েছেন। ‘তামিমের দ্রুত এবং পুরোপুরি সুস্থতা কামনা করছি! মাঠে যেমনটা তুমি সব সময় করেছ, ঠিক তেমনই লড়াই চালিয়ে যাও।’
লিখেছেন মালিঙ্গা। এক সময়ের সতীর্থ, সাবেক টাইগার অধিনায়ক মাশরাফির পোস্ট,‘ তোকে দেখার জন্য তোর কাছে যাইতে পারলাম না ভাডি (ভাই)। মহান আল্লাহ তোর সহায় হোন, তামিম। দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরে আয় সবার মাঝে ইনশাআল্লাহ।’ সাবেক ভারতীয় ক্রিকেটার মনোজ তিওয়ারি লিখছেন,‘এই লড়াইটা তোমায় জিততেই হবে বন্ধু, একেবারে ট্রেডমার্ক তামিম ইকবাল স্টাইলে! প্রার্থনা! দ্রুত সুস্থ হও তামিম ইকবাল।’ ৩৬ বছর বয়সী তামিম ২০০৭ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় দলের হয়ে ৭০ টেস্ট, ২৪৩ ওয়ানডে ও ৭৮টি টি২০ খেলেছেন। যেখানে ২৫ সেঞ্চুরিতে রান ১৫ হাজার ২৪৯।