
নাইম শেখ ও নূরুল হাসান সোহান
এবার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) শুরুটা হার দিয়ে হলেও একটানা জিতেই চলেছে গত আসরের চ্যাম্পিয়ন আবাহনী লিমিটেড। শুক্রবার বিকেএসপিতে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সকে শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে ২ উইকেটে হারিয়ে টানা ষষ্ঠ জয় তুলে নিয়েছে তারা। ৭ ম্যাচ শেষে ১২ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে শীর্ষস্থান দখলে নিয়েছে আবাহনী। তবে তাদের ধরতে পারে শুধু এবার চমক দেখানো অগ্রণী ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব। আজ সপ্তম ম্যাচে তারা পারটেক্স স্পোর্টিং ক্লাবকে হারাতে পারলে তাদের পয়েন্টও হবে ১২। মিরপুরে আরেক ঐতিহ্যবাহী দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব ২৩ রানে ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবকে হারিয়ে জয়ের ধারায় ফিরেছে। নুরুল হাসান সোহান দারুণ এক শতক উপহার দিলেও এদিন ধানমন্ডির হার এড়াতে পারেননি। বিকেএসপির আরেক ভেন্যুতে বিধ্বংসী নাইম শেখের অপরাজিত ১০৪ রানের সুবাদে শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবকে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে বিধ্বস্ত করেছে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব।
বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে শাইনপুকুর ৪৮.৪ ওভারে মাত্র ১৫৯ রানে গুটিয়ে যায়। ফারজান আহমেদ ৬৮ বলে ৫ চারে ৩৮ ও শারিয়ার সাকিব ৫৯ বলে ২ চার, ১ ছয়ে ২৯ রান করেন। শফিউল ইসলাম ও নাজমুল ইসলাম ৩টি করে এবং রিশাদ হোসেন ২টি উইকেট নেন। জবাবে প্রাইম ব্যাংকের নাইম শেখ বিধ্বংসী ব্যাটিং করে ৬৩ বলেই শতক তুলে নেন। তিনি শেষ পর্যন্ত ৬৪ বলে ১১ চার, ৫ ছক্কায় ১০৪ রানে অপরাজিত থাকেন। সাব্বির হোসেন ৪৮ বলে ৪ চার, ৩ ছক্কায় ৪৭ রানে আউট হন। ২০.১ ওভারে ১ উইকেটে ১৬২ রান তুলে বিশাল জয় পায় প্রাইম ব্যাংক। বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে গাজী গ্রুপের সঙ্গে দারুণ লড়াই জমে ওঠে আবাহনীর। ভেজা আউটফিল্ডের কারণে আড়াই ঘণ্টা পর ম্যাচটি শুরু হয় এবং ৩৬ ওভারে নির্ধারণ করা হয়। আগের ম্যাচে মোহামেডানকে হারানো গাজী এবার আগে ব্যাট করে ৩৫.১ ওভারে ১৯৯ রানে গুটিয়ে যায়। অধিনায়ক ও ওপেনার এনামুল হক বিজয় ৭৬ বলে ৬ চার, ৩ ছক্কায় ৬৮ ও ওয়াসি সিদ্দীকি ৫২ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ৪২ রান করেন। মুমিনুল হক ম্যাজিক দেখান এবং ৬.১ ওভারে ৩৮ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। এটি স্বীকৃত ক্রিকেটে মুমিনুলের ক্যারিয়ারসেরা বোলিং। এছাড়া দুটি করে উইকেট নেন মাহফুজুর রহমান রাব্বি, রাকিবুল হাসান ও মোসাদ্দেক হোসেন। জবাব দিতে নেমে ৩৫ ওভারে ৮ উইকেটে ২০০ রান তুলে শ্বাসরুদ্ধকর এক জয় পায় আবাহনী। যদিও ২ উইকেটে ১৪৭ রান তুলে ফেলে তারা। কিন্তু মাঝে ৩০ রানের মধ্যে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ৬৩ বলে ৪ চারে ৪৩ ও মোহাম্মদ মিঠুন ৭৭ বলে ৫ চার, ৪ ছক্কায় ৭৬ রানে সাজঘরে ফেরেন। মুমিনুলও ২৫ বলে ২ চার, ১ ছয়ে ২৪ রানে বিদায় নেন। শেষ পর্যন্ত ১ ওভার বাকি থাকতে ৮ উইকেটে ২০০ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় আবাহনী। শেখ পারভেজ জীবন ৩টি এবং আবু হাসিম ও লিওন ইসলাম ২টি করে উইকেট নেন। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে মোহামেডান ২৩ রানে হারিয়ে দেয় ধানমন্ডিকে। আগে ব্যাট করে তারা ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২১৬ রান করতে সক্ষম হয়। ছয়ে নেমে তাওহিদ হৃদয় ৪৭ বলে ৫ চারে অপরাজিত ৫৩, মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ৭৭ বলে ৩ চারে ৪৪, রনি তালুকদার ৬৪ বলে ৫ চার, ১ ছয়ে ৩৯ ও তামিম ইকবাল ৫৩ বলে ২ চারে ২৬ রান করেন। মুশফিকুর রহিম ৬ ও মেহেদি হাসান মিরাজ ২৪ বলে ৩ চারে ২৬ রান করেন। কামরুল ইসলাম রাব্বি ৩টি, হাসান মুরাদ ২টি উইকেট নেন। জবাবে ধানমন্ডি নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারায়। ১১৭ রানেই ৭ উইকেট পতনের পর হার নিশ্চিতই হয়ে যায়। কিন্তু অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান একাই লড়েছেন। তিনি ৯৩ বলে ১০ চার, ৪ ছক্কায় ১০০ রানে আউট হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ৪৩.৩ ওভারে ধানমন্ডির ইনিংস থেমেছে ১৯৩ রানে। এছাড়া হাবিবুর রহমান সোহান ১৬ বলে ৩ চার, ২ ছয়ে ৩১ রান করেন। মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ৩টি এবং তাসকিন আহমেদ ও তাইজুল ইসলাম ২টি করে উইকেট নেন।