
অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়ার সঙ্গে হামজা চৌধুরী
অনেক সাধনার পর এখন হামজা চৌধুরী বাংলাদেশের ফুটবলার। আর মাত্র কয়েকদিন পর লাল-সবুজের জার্সি গায়ে অভিষেক হতে চলেছে তার। এর আগে বুধবার বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে যোগ দিয়ে ফটোসেশন করেছেন। এর পর বসুন্ধরা কিংস অ্যারানায় প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের হয়ে অনুশীলনও করেছেন।
ভারতের উদ্দেশ্যে দেশ ছাড়ার আগে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন হামজা চৌধুরী। তার সঙ্গে ছিলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল ভূঁইয়া ও কোচ জ্যাভিয়ের কাবরেরা। সেখানেই হামজাকে ‘বাংলাদেশের মেসি’ আখ্যা দিয়েছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক জামাল। হামজার গল্পটা কিছুটা হলেও জামালের সঙ্গে মিলে যায়। দু’জনই প্রবাসী ফুটবলার।
পরে গায়ে চড়িয়েছেন বাংলাদেশের জার্সি। তবে জামালই এক্ষেত্রে পথপ্রদর্শক। বহু বছর পরে এসে আরও এক প্রবাসী ফুটবলারকে আপন করে নিতে দেখে পুরোনো দিনের কথা মনে পড়ে গেছে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে জামাল বলেন, ‘হ্যাঁ অবশ্যই। আমি যখন এসেছিলাম তখন পরিস্থিতিটা কিছুটা এমনই ছিল।
তবে সেবারের সঙ্গে এবারের পার্থক্যটাও দেখিয়ে দিতে ভোলেননি জামাল। তিনি জানিয়েছেন, ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ মানের খেলোয়াড় হামজা তো বাংলাদেশের কাছে লিওনেল মেসির মতো কেউ একজনই। এ প্রসঙ্গে জামাল বলেন, হামজা প্রিমিয়ার লিগের খেলোয়াড় যে আমাদের দলে আসছে। এটা তো আমাদের দলে লিওনেল মেসি আসার মতো বিষয়। আমি এভাবেই দেখছি বিষয়টাকে।
হামজা কোথায় খেলবেন, এমন একটা আলোচনা শেষ অনেকদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে। এ বিষয়ে জামাল বলেন, সে দারুণভাবেই দলে মানিয়ে নেবে আমি মনে করি। বিষয়টা দলের সবাইও জানে, যে কারণে তাকে নিয়ে উচ্ছ্বসিত সবাই। জামাল বলেন, সবাই তাকে স্বাগত জানিয়েছে। হামজার প্রতি সম্মান আছে সবার। তারা জানে সে দলে কি নিয়ে আসতে পারে। তারা জানে সে আমাদের কি দিতে পারে। হামজার আসাটা আমাদের জন্য অসাধারণ ব্যাপার।
অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে বাংলাদেশের ডেরায় পৌঁছেছেন হামজা। শুধু বাংলাদেশই নয়, উপমহাদেশেই তিনি প্রথম; যিনি খেলেছেন বিশ্বের শীর্ষ লিগ ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে। এর পরও অবশ্য ভারতের বিরুদ্ধে তাকে প্রথম একাদশে রাখা হবে কিনা জানতে চাইলে নিশ্চয়তা দিতে পারেন নি বাংলাদেশ কোচ।
ইংল্যান্ড অনূর্ধ্ব-২১ দলের হয়ে সাতটি ম্যাচ খেলেছেন হামজা চৌধুরী। যার অর্থ ইংল্যান্ড জাতীয় দলের সিস্টেমে ছিলেন ডিফেন্সিভ এই মিডফিল্ডার। যে কোনো খেলাধুলায় কেউ অনূর্ধ্ব-২১ খেললে জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন দেখা খুবই স্বাভাবিক। হামজার জন্যও হয়ত গল্পটা আলাদা ছিল না।
ইংল্যান্ড জাতীয় দলে ডাক পেলে কী করতেন হামজা? তখন কি বাংলাদেশ দলে খেলার সিদ্ধান্ত নিতে পারতেন? এমন প্রশ্নের উত্তরে খুব কৌশলী উত্তর দিয়েছেন ২৭ বছর বয়সী হামজা, আমি পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করে এই সিদ্ধান্ত (বাংলাদেশের হয়ে খেলার) নিয়েছি।
ইংল্যান্ডের হয়ে কখনো ডাক পাইনি। ওই সুযোগ আমার আসেনি। সুতরাং সিদ্ধান্তও নিতে হয়নি। তবে সুযোগ এলে অবশ্যই পরিবারের সঙ্গে আলোচনা করতাম। বাংলাদেশে খেলতে পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা উৎসাহিত করেছে। হামজাকে পাওয়ার জন্য অনেকদিন ধরে চেষ্টা চালিয়েছে বাফুফে।