ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৯ মার্চ ২০২৫, ৪ চৈত্র ১৪৩১

বোলিংয়ে তাসকিনের অস্বস্তির রেকর্ড

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:৩৬, ১৯ মার্চ ২০২৫

বোলিংয়ে তাসকিনের অস্বস্তির রেকর্ড

বিকেএসপিতে শতক হাঁকানো গাজী গ্রুপের এনামুল হক বিজয়কে বাহবা দিচ্ছেন মোহামেডানের পেসার তাসকিন আহমেদ

সাম্প্রতিক সময়ে ধারাবাহিকভাবে দুর্দান্ত বোলিংয়ে বাংলাদেশেই শুধু নয়, বিশে^ অন্যতম সেরা একজন তাসকিন আহমেদ। ২৯ বছর বয়সে এসে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছেন এই ডানহাতি পেসার। অথচ এমন একটি সময়ে ঘরোয়া ক্রিকেটে যে রেকর্ড গড়লেন তা অস্বস্তির এবং বিব্রতকর। বাংলাদেশী কোনো বোলার হিসেবে স্বীকৃত ওয়ানডে ক্রিকেটে (আন্তর্জাতিকসহ) সবচেয়ে বেশি রান দেওয়ার তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছে তার।

মঙ্গলবার ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের এই ডানহাতি পেসার ১০ ওভারে ১০৭ রান দিয়েছেন ৩ উইকেট তুলে নিতে। বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে গাজী গ্রুপ ক্রিকেটার্সের বিপক্ষে এমন বোলিং অভিজ্ঞতা হয়েছে তাসকিনের। তার এমন বোলিংয়ের দিন গাজী গ্রুপের ওপেনার এনামুল হক বিজয় ১৪৩ বলে ১৪৯ রান করেছেন। ফলে মোহামেডান হেরেছে ৬৫ রানে।

তবে বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে নাজমুল হোসেন শান্তর সেঞ্চুরিতে আবাহনী লিমিটেড ৪ উইকেটে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে এবং মিরপুরে প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব ৫৫ রানে ধানমন্ডি স্পোর্টস ক্লাবকে হারিয়েছে।
মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করে প্রাইম ব্যাংক ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩০৮ রানের বড় সংগ্রহ পায়। সাতে নেমে শামীম হোসেন পাটোয়ারির ৩৭ বলে ৬ চার, ২ ছক্কায় করা হার না মানা ৬২ রানের ঝড়ো ইনিংস এতে বড় ভূমিকা রেখেছে।

এ ছাড়া নাইম শেখ ১৮ বলে ৪ চার, ৩ ছয়ে ৩৭, সাব্বির হোসেন ৭০ বলে ৮ চারে ৫০, জাকির হাসান ৮৬ বলে ৭ চার, ১ ছয়ে ৬৪ ও ইরফান শুক্কুর ৫২ বলে ৭ চারে অপরাজিত ৫৬ রান করেন। মইন খান ৩ উইকেট নেন। জবাবে ধানমন্ডি ৪৯.৫ ওভারে ২৫৩ রানে গুটিয়ে যায়। ফজলে রাব্বি ১০৪ বলে ৩ চার, ৩ ছয়ে ৭৯, ইয়াসির রাব্বি ৫৬ বলে ৬ চারে ৪৬ রান করেন।

হাসান মাহমুদ ও আরাফাত সানি ৩টি করে এবং খালেদ আহমেদ ২টি উইকেট নেন। ৫৫ রানে জিতে প্রাইম ব্যাংক। বিকেএসপির ৩ নম্বর মাঠে লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ আগে ব্যাট করে ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে ২৯২ রান তোলে। সাইফ হাসান ১০৩ বলে ৮ চারে ৬৭ ও মাহমুদুল হাসান জয় ৫৪ বলে ৫ চার, ২ ছয়ে ৫৮, জাকের আলী ৩৫ বলে ৩ চার, ১ ছয়ে অপরাজিত ৩৫ ও শেখ মেহেদি হাসান ১৯ বলে ৪ চারে অপরাজিত ২৮ রান করেন।

২টি করে উইকেট নেন নাহিদ রানা ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। জবাবে অধিনায়ক শান্তর সেঞ্চুরিতে ৮ বল হাতে রেখেই ৬ উইকেটে ২৯৩ রান তুলে টানা পঞ্চম জয় পায় আবাহনী। শান্ত ১০৮ বলে ১২ চার, ২ ছক্কায় ১০১ রান করেন। জিশান আলম ৪৬ বলে ৫ চারে ৪৩, মুমিনুল হক ৩২ বলে ৩ চারে অপরাজিত ৩৫ ও মাহফুজুর রহমান রাব্বি ২৫ বলে ২ চার, ২ ছয়ে অপরাজিত ৩১ রান করেন। শরিফুল ইসলাম ও শেখ মেহেদি ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। 
বিকেএসপির ৪ নম্বর মাঠে হয়েছে রানের বন্যা। গাজী গ্রুপের অধিনায়ক ও ওপেনার এনামুল হক বিজয় দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি করেছেন। তার ১৪৩ বলে ১২ চার, ৪ ছক্কায় করা অপরাজিত ১৪৯ রানে ভর দিয়ে মোহামেডানের বিপক্ষে গাজী গ্রুপ ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩৩৬ রান করে। তাসকিন বিস্ময়কর রেকর্ডের জন্ম দেন নিজের শেষ ২ ওভারে ৪৫ রান খরচা করে।

সফলতম বোলার তিনিই। ৩ উইকেট নিতে পারলেও ১০ ওভারে ১০৭ রান দিয়েছেন তাসকিন। ৫০ ওভারের স্বীকৃত ক্রিকেটে এক ইনিংসে কোনো বাংলাদেশীর সর্বাধিক ১০৪ রান দেওয়ার রেকর্ড এর আগে ছিল শাহাদাত হোসেন রাজিব ও ইকবাল হোসেন ইমনের। ২০১১ সালে বাংলাদেশ ‘এ’ দলের হয়ে শাহাদাত দক্ষিণ আফ্রিকা ‘এ’ দলের বিপক্ষে ১০ ওভারে এবং ইকবাল গত বছর ডিপিএলে গাজী টায়ার্স ক্রিকেট একাডেমির হয়ে ৯ ওভারে এই রান দিয়ে রেকর্ড গড়েছিলেন।

তাসকিনের এমন অগোছালো বোলিংয়েই বড় সংগ্রহ পায় গাজী গ্রুপ। ওপেনার সাদিকুর রহমান ৭৫ বলে ৭ চারে ৬০, তোফায়েল আহমেদ ২৯ বলে ৫ চার, ৪ ছক্কায় ৬৩ রান করেন। জবাবে মোহামেডান ৪৮.১ ওভারে ২৭১ রানে গুটিয়ে যায়। ওপেনার রনি তালুকদার ৯০ বলে ৪ চার, ৪ ছক্কায় ৭৪ ও তামিম ইকবাল ৩৪ বলে ৫ চার, ৩ ছয়ে ৪৮ রান করেন। এ ছাড়া মুশফিকুর রহিম ৪৬ বলে ৬ চারে ৪৯ এবং তাওহিদ হৃদয় ৫২ বলে ১ চার, ১ ছয়ে ৩৬ রান করেন। আব্দুল গাফফার সাকলাইন ৫৯ রানে ৪টি ও আবু হাসিম ২টি উইকেট নেন।

×