ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১২ মার্চ ২০২৫, ২৮ ফাল্গুন ১৪৩১

যুক্তরাষ্ট্রে মেসির জনপ্রিয়তায় ধস!

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০১:০৮, ১২ মার্চ ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রে মেসির জনপ্রিয়তায় ধস!

লিওনেল মেসি

সারা বিশ্বে ফুটবল সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলা হলেও যুক্তরাষ্ট্রে চিত্রটা ভিন্ন। ফুটবলকে তারা বলে সকার। আর রাগবিকে বলে ‘আমেরিকান ফুটবল’। এরপর সেখানে জনপ্রিয় খেলার তালিকায় আছে বেসবল, বাস্কেটবল, আইস হকি। খুব স্বাভাকিবভাবেই এমন একটা দেশে কোনো ফুটবলারের দেশটির সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলোয়াড় হওয়া খুব কঠিন। সেই হিসাবটা পাল্টে দিয়েছিলেন লিওনেল মেসি।

গত বছর ফেব্রুয়ারিতে প্রথম ফুটবলার হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে জনপ্রিয় খেলোয়াড় নির্বাচিত হয়েছেন বিশ্বকাপজয়ী এই আর্জেন্টাইন সুপারস্টার। বছর ঘুরতেই সেই জনপ্রিয়তায় ভূমিধস নামল! সম্প্রতি যা একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। ইন্টার মিয়ামির জার্সিতে সর্বশেষ তিন ম্যাচে খেলেননি মেসি। অথচ মেসির খেলা দেখার জন্যই উন্মুখ দর্শকরা গ্যালারিতে গিয়ে হাজির হন। কিন্তু মাঠে গিয়ে যখন জানতে পারেন প্রিয় তারকা খেলবেন না, ভক্তরা সেটা মানবেন কেন!

সর্বশেষ এমএলএসে শার্লট এফসির বিপক্ষে বেঞ্চে বসে ছিলেন মেসি। এর আগে এমএলএসে হিউস্টন ডায়নামো ও কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপের রাউন্ড-১৬ (প্রথম লেগ) তে ক্যাভেলিয়েরের বিপক্ষে ম্যাচেও উল্লেখযোগ্য কোনো কারণ ছাড়াই খেলেননি। যদিও মিয়ামি কোচ হাভিয়ের মাচেরানো জানিয়েছেন, ওয়ার্কলোড ম্যানেজমেন্ট এবং ফিটনেস ঝুঁকি এড়াতে মেসিকে খেলানো হয়নি। তবে যুক্তরাষ্ট্রের ফুটবলভক্তরা এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন।

হিউস্টন ডায়নামো ম্যাচে মেসি না থাকায় ক্ষিপ্ত দর্শকদের অন্য একটি ম্যাচের টিকিট বিনামূল্যে দেওয়ার প্রস্তাব দিতে বাধ্য হয়েছে স্টেডিয়াম কর্তৃপক্ষ। এরপরও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন দর্শকরা। সম্প্রতি ‘বেটভিক্টর কানাডা’র পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, গত এক মাসে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম প্ল্যাটফর্ম এক্সে মেসি সম্পর্কে ২৪ শতাংশ নেতিবাচক পোস্ট করা হয়েছে।

যেখানে ইতিবাচক পোস্ট হয়েছে মাত্র ১২ শতাংশ। যা আটবারের ব্যালন ডি’অরজয়ী তারকার গত এক বছরে সর্বনিম্ন জনপ্রিয়তা নির্দেশ করে। এর আগে ২০২৪ সালের জুলাইয় মাসেও ২৪ শতাংশ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া পেয়েছিলেন মেসি। কোপা আমেরিকায় জাতীয় দলের খেলায় গোড়ালির চোটে পড়ার কারণে ওই সময় মাঠের বাইরে ছিলেন তিনি। তবে তখনও আর্জেন্টাইন মহাতারকা সম্পর্কে নেতিবাচক মন্তব্য করেছিলেন শতকরা ১৮ শতাংশ সমর্থক।
‘বেটভিক্টর কানাডা’র মুখপাত্র স্যাম বসওয়েল বলেন, ‘গত কয়েক সপ্তাহ মেসির জন্য মোটেও সহজ ছিল না। এমএলএস ভক্তরা তার প্রতি সহানুভূতি দেখাচ্ছেন না। তারা প্রতিনিয়ত ইন্টার মায়ামির তারকা খেলোয়াড়ের অনুপস্থিতি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন।’ তিনি আরও বলেন, ‘টানা তিন ম্যাচ মিস করার পর গবেষণায় দেখা গেছে, গত এক মাসে যুক্তরাষ্ট্র থেকে মেসি সম্পর্কে ২৪ শতাংশ পোস্ট নেতিবাচক ছিল। ফেব্রুয়ারিতে এটি ছিল ১৬ শতাংশ।

গত এক বছরে এটি সর্বোচ্চ নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া।’ তিনি আরও যোগ করেন, ‘ভক্তদের মন জয় করতে মেসিকে আবার সেরা পারফরম্যান্স দেখাতে হবে।’ মিয়ামির পরের ম্যাচ আগামী শুক্রবার কনকাকাফ চ্যাম্পিয়ন্স কাপের রাউন্ড-১৬ তে (দ্বিতীয় লেগ) ক্যাভেলিয়েরের বিপক্ষে। ৩৭ বছর বয়সি মেসি ২০২৩ সালের জুলাইয়ে পিএসজি থেকে মিয়ামিতে যোগ দেন। ক্লাবটির জার্সিতে ৪২ ম্যাচে করেছেন ৩৬ গোল।

×