ঢাকা, বাংলাদেশ   সোমবার ১০ মার্চ ২০২৫, ২৬ ফাল্গুন ১৪৩১

স্পিন ঝলকে দুরন্ত ভারত

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:৩০, ১০ মার্চ ২০২৫

স্পিন ঝলকে দুরন্ত ভারত

.

জাসপ্রিত বুমরাহর জন্য শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত অপেক্ষা করেছিল ভারত। কিন্তু তারকা পেসারকে পায়নি রোহিত শর্মার দল। পরিবর্তে এমন একজনকে নেওয়া হয়, যিনি কিনা একটি মাত্র ওয়ানডে খেলেছেন। অনেকেই প্রশ্ন তোলেন, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির স্কোয়াডে চার স্পিনার থাকার পর আরও একজন কেন? নিন্দুকেরা নিশ্চয়ই জবাবটা পেয়ে গেছেন। দুবাইয়ের টার্নিং উইকেটে ভারতকে একের পর এক সাফল্য এনে দিলেন বরুণ চক্রবর্তী। ঘূর্ণিবিষে রাঘববোয়াল সব ব্যাটারকে নীল করে ছাড়লেন কুলদীপ যাদব, রবীন্দ্র জাদেজা আর অক্ষর প্যাটেল। রবিবারের ফাইনালেও সে ধারা অব্যাহত থাকল। টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া মিচেল স্যান্টনারের নিউজিল্যান্ড থামল ২৫১ রানে। ৭ উইকেটের ৫টিই নিলেন তিন স্পিনারÑ বরুণ ২/৪৫, কুলদীপ ২/৪০ আর জাদেজা ১/৩০। পেসার মোহাম্মদ শামি ১/৭৪। এর আগে গ্রুপ পর্বে কিউইদের ১০ উইকটের ৯টি নিয়ে ইতিহাস গড়েছিলেন চার স্পিনার।    
অপরাজিত থেকে ফাইনালে উঠে আসে ভারত। বিপরীতে নিউজিল্যান্ড একটি মাত্র ম্যাচেই হেরেছিল, সেটি গ্রুপ পর্বে ভারতের কাছে। শিরোপার মঞ্চে আসরের সেরা দুই দলের লড়াই ঘিরে ছিল বাড়তি রোমাঞ্চ। ব্যাটিংয়ে কিউইরা আর সেটি ছড়াতে পারল কোথায়। তিন নম্বরে নেমে সর্বোচ্চ ৬৩ রান করেছেন ড্যারিল মিচেল। সাতে মাইকেল ব্রেসওয়েল অপরাজিত ৫৩। এছাড়া ওপেনার রাচীন রবীন্দ্রর ব্যাট থেকে এসেছে ৩৭ রান। কেন উইলিয়ামসন ১১। দুজনকেই ফিরিয়ে কার্যত নিউজিল্যান্ডের বড় সংগ্রহের আশা শেষ করে দিয়েছেন বাঁহাতি রিস্ট স্পিনার কুলদীপ। যথারীতি ফাইনালেও টস হারেন রোহিত। ২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনাল থেকে টানা ১২ ওয়ানডেতে  টস হেরে রেকর্ড বইয়ে ব্রায়ান লারার সঙ্গী হয়েছেন নবম বারের মতো আইসিসির টুর্নামেন্টের ফাইনালে খেলা ভারত অধিনায়ক। ব্যাটিংয়ে নেমে ৭.৪ ওভারে বিনা উইকেটে ৫৭ রান তুলে নিয়েছিল কিউইরা। অষ্টম ওভারের পঞ্চম বলে উইল ইয়াংকে (২৩ বলে ১৫) এলবিডব্লিউ করে জুটি ভাঙেন বরুণ চক্রবর্তী। মুহূর্তেই নিউজিল্যান্ডের স্কোর হয়ে যায় ১২.২ ওভারে ৩ উইকেটে ৭৫ রান। যেখানে ১১ তম ওভারের প্রথম বলে ছন্দে থাকা রবীন্দ্রকে বোল্ড করে উচ্ছ্বাসে মাতেন কুলদীপ। ২৯ বলে ৪ চার ও ১ ছক্কায় ৩৭ রান করেন রাচীন। এক ওভার পর কেন উইলিয়ামসনকে কট অ্যান্ড বোল্ড করেন কুলদীপ। ১৩ তম ওভারের দ্বিতীয় বলে উইলিয়ামসন যেভাবে উইকেট উপহার দিয়েছেন, তাতে হতাশায় উইকেটের ওপর লাথি মেরেছেন তিনি। অভিজ্ঞ কিউই এই ব্যাটার করেছেন ১৪ বলে ১১ রান। 
পাঁচে নামা টম লাথামও ইনিংস বড় করতে পারেননি (৩০ বলে ১৪ রান)। ২৩.২ ওভারে ১০৮ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে যখন নিউজিল্যান্ড বিপাকে, তখন দলকে টেনে তোলেন গ্লেন ফিলিপস ও ড্যারিল মিচেল। এই জুটি অবশ্য বড় হতে পারত না। ৩৫ তম ওভারের পঞ্চম বলে অক্ষর প্যাটেলকে পুল করতে যান মিচেল। মিড উইকেটে রোহিত লাফ দিয়ে বলটাই শুধু থামাতে পেরেছেন। ক্যাচটা আর ধরা হয়নি। মিচেলের রান তখন ৩৮। ঠিক তার পরের ওভারে জীবন পান ফিলিপস। ৩৬ তম ওভারের শেষ বলে ডিপ স্কয়ার লেগ থেকে দৌড়ে এসে বল স্পর্শ করেও তালুবন্দী করতে পারেননি শুভমান গিল। জীবন পেয়েও ফিলিপস (৫২ বলে ৩৪) ইনিংসটা লম্বা করতে পারেননি। বরুণকে ব্যাক ফুটে কাট করতে গিয়ে হয়েছেন বোল্ড। পঞ্চম উইকেটে ফিলিপস-মিচেলের জুটিতে এসেছে ৮৭ বলে ৫৭ রান। ফিলিপসের বিদায়ের ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অষ্টম ফিফটি তুলতে মিচেলের লেগেছে ৯১ বল। চতুর্থ উইকেটে মাইকেল ব্রেসওয়েলের সঙ্গে ৪৭ বলে ৪৬ রানের জুটি গড়তে অবদান রেখেছেন মিচেল। ৪৬ তম ওভারের চতুর্থ বলে মিচেলকে (১০১ বলে ৩ চারে ৬৩) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন মোহাম্মদ শামি। ব্রেসওয়েল ইনিংসের শেষ বল পর্যন্ত খেলেছেন। ৪০ বলে ৩ চার ও ২ ছক্কায় ৫৩ রান করে অপরাজিত থাকেন তিনি। ওয়ানডেতে এটা তার প্রথম ফিফটি। এর আগের দুই ফিফটিকে সেঞ্চুরিতে পরিণত করেছিলেন এই বাঁহাতি ব্যাটার। ব্রেসওয়ের ক্যামিও ফিফটিতে শেষ ৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে নিউজিল্যান্ড ৫০ রান যোগ করে।

×