
মুশফিকুর রহিম
২০২২ সালে আন্তর্জাতিক টি২০ থেকে অবসর নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। আর গত বুধবার রাতে অবসর নিয়েছেন আন্তর্জাতিক ওয়ানডে থেকে। উভয় ক্ষেত্রে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে এই অবসর ঘোষণা করেন তিনি। মাঠ থেকে পূর্ব ঘোষণা দিয়ে অবসর নেননি বলে বিদায়টা ক্রিকেটীয় হয়নি।
একইভাবে মাশরাফি বিন মর্তুজা, সাকিব আল হাসান, তামিম ইকবালরা যখন যে ফরম্যাট থেকে বিদায় নিয়েছেন তা আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠ থেকে হয়নি। যার কারণে দীর্ঘ সময় দেশের ক্রিকেটের জন্য অবদান রাখা এই ক্রিকেটারদের জন্য সংবর্ধনা কিংবা ভালো কোনো আয়োজন করতে পারেনি বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। তবে এবার মুশফিককে আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় জানানোর পরিকল্পনা করছে বিসিবি।
তাকে বিদায়ী সংবর্ধনা দেওয়ার বিষয়ে শনিবার গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ। আসন্ন বিশ^কাপ নিয়ে এখন থেকেই পরিকল্পনা করা হবে জানিয়ে বিসিবি সভাপতি টি২০ ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব প্রসঙ্গেও কথা বলেছেন।
আগামী বছর টি২০ বিশ^কাপ হচ্ছে পরবর্তী আইসিসি ইভেন্ট। আগেই আন্তর্জাতিক এই ফরম্যাট থেকে অবসর নেওয়া মুশফিক ও মাহমুদুল্লাহ থাকছেন না। বেশ কিছুদিন নেতৃত্ব দেওয়া নাজমুল হোসেন শান্তও তেমন সাফল্য এনে দিতে পারেননি। তিনি টি২০ ফরম্যাটের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেওয়ার কথা জানিয়েছেন গত বছরই। এ বিষয়ে বিসিবি সভাপতি ফারুক বলেছেন, আমরা সিদ্ধান্ত নেব। খুব শিগগির জানা যাবে।
ইতোমধ্যে দুই একজন টি-টোয়েন্টির অধিনায়কত্ব করেছেন, যারা এখনো দলের বাইরে নয়। এ রকম কাউকে আমরা চেষ্টা করব। শান্তর অবর্তমানে লিটন কুমার দাস, মেহেদি হাসান মিরাজ অধিনায়কত্ব করেছেন। এছাড়া বর্তমানে টি২০ ফরম্যাটে সহ-অধিনায়ক তাসকিন আহমেদ আছেন। সবমিলিয়ে বিকল্প তাই ভেবেই রেখেছে বিসিবি। তবে ২০২৭ সালের ওয়ানডে বিশ^কাপ নিয়েও এখন থেকে পরিকল্পনা আঁটতে হবে।
কারণ অভিজ্ঞ মুশফিক অবসর নিয়েছেন। আবার মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ প্রায় ৪০ ছুঁই ছুঁই বয়সে আছেন। তার পক্ষে পরবর্তী ওয়ানডে বিশ^কাপ খেলা কঠিন। সেক্ষেত্রে টি২০ ও ওয়ানডে বিশ^কাপ নিয়ে পরিকল্পনা করতে হবে। এ বিষয়ে ফারুক বলেছেন, আমাদের চেষ্টা থাকবে। আমি আগামী বিশ্বকাপে (ভালো করার পরিকল্পনা) বিশ্বাস করি না।
আমি যখন ২০০৭ সালে বিশ্বকাপে নির্বাচক ছিলাম, তামিম-সাকিব-মুশফিক ওরা লাইমলাইটে এসেছিল। বোর্ড থেকে একটা পলিসি দেওয়া হবে। আমরা বলে দেব কী চাই। ক্রিকেট অপারেশন্সের সঙ্গে আলাপ করে চিন্তা করব আমাদের ক্রিকেটটাকে কিভাবে এগিয়ে নেওয়া যায়।
অভিজ্ঞ ক্রিকেটাররা নিভৃতেই বিদায় নিচ্ছেন। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসরে যেতে পারছেন না মাঠ থেকে। তবে এবার মুশফিককে সংবর্ধনা দেওয়ার বিষয়ে ভাবছে বিসিবি। ফারুক বলেছেন, এটি একটি স্বাভাবিক ঘটনা। দীর্ঘ ১৯ বছরের ক্যারিয়ারে তিনি বাংলাদেশের ক্রিকেটের অন্যতম স্তম্ভ ছিলেন। ২০০৫ সালে ইংল্যান্ড সফর থেকে শুরু করে তিনি দেশের ক্রিকেটকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন।
বিসিবি তার অসামান্য অবদান কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করছে এবং আমরা পরিকল্পনা করছি তাকে যথাযথভাবে সংবর্ধনা দেওয়ার বিষয়টি বিবেচনায় রাখার। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সময়ই মুশফিকের অবসর নিয়ে কথা ওঠে। তখনই পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (পিসিবি) সভাপতির সঙ্গে আগামী আগস্টে ৩ ম্যাচের ওয়ানডে ও টি২০ সিরিজের নিশ্চয়তা পেয়েছেন ফারুক।
এ বিষয়ে তিনি বলেছেন, ৫০ ওভারের ম্যাচ প্রায় ৬-৭ ঘণ্টা দীর্ঘ হয়, যা বিভিন্ন বোর্ডের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের জন্য দারুণ সুযোগ তেরি করে। আমি ফাইনাল ম্যাচ না দেখেই দেশে ফিরেছি, তবে এর আগে আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বৈঠকগুলোতে অংশ নিয়েছি।
এসব আলোচনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। যখন আপনার সম্পর্ক ভালো থাকবে, তখন যে কোনো কিছু সহজে পাওয়া যাবে। আমরা শুধু ত্রিদেশীয় সিরিজ নয়, বরং আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডারে ফাঁকা সময় থাকলে যেন যে কোনো টুর্নামেন্ট বা সিরিজে অংশ নিতে পারি, সে বিষয়েও আলোচনা করেছি।