ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ০৭ মার্চ ২০২৫, ২২ ফাল্গুন ১৪৩১

২৫ বছর পর সেই ভারত নিউজিল্যান্ড ফাইনাল

জিএম মোস্তফা

প্রকাশিত: ০০:৪৪, ৭ মার্চ ২০২৫

২৫ বছর পর সেই ভারত নিউজিল্যান্ড ফাইনাল

দুবাইয়ের ফাইনালেও এই হাসি ধরে রাখতে চায় টিম নিউজিল্যান্ড

আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সর্বশেষ দুই আসরেই ফাইনাল খেলেছে ভারত। ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো শিরোপা উঁচিয়ে ধরলেও ২০১৭ সালে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারতের কাছে হেরে যায় রোহিত-কোহলিরা। আইসিসির অন্যতম মর্যাদার এই টুর্নামেন্টে এবারও হট ফেভারিটের ট্যাগ গায়ে মাখানো ছিল ভারতের।

শেষ পর্যন্ত দাপুটের সঙ্গে খেলেই অপরাজিত থেকে ফাইনালে জায়গা করে নেয় টিম ইন্ডিয়া। মঙ্গলবার প্রথম সেমিফাইনালে শক্তিশালী অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে টানা তৃতীয়বার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে ওঠার গৌরবময় কীর্তি গড়ে রোহিত শর্মার দল। 
ভারতের মতো এবার টুর্নামেন্ট শুরুর আগে থেকেই হট ফেভারিট হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছিল নিউজিল্যান্ডকে। বিশেষ করে টুর্নামেন্ট শুরুর আগে স্বাগতিক পাকিস্তানের মাটিতে ত্রিদেশীয় সিরিজে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর নিউজিল্যান্ডকেই ‘নতুন’ ফেভারিট ধরে নেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। শেষ পর্যন্ত সেই নিউজিল্যান্ডই ফাইনালে জায়গা করে নেয়।

বুধবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৫০ রানে হারিয়ে ফাইনালের টিকিট কাটে ব্ল্যাক ক্যাপসরা। সেইসঙ্গে দীর্ঘ ২৫ বছর পর আইসিসির কোনো ওয়ানডে টুর্নামেন্টের ফাইনালে জায়গা করে নেয় ভারত-নিউজিল্যান্ড। এর আগে ২০০০ সালে আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিরই ফাইনাল খেলেছিল এই দুই দল। 
দীর্ঘ দুই যুগেরও বেশি সময় পর আবারও আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালে রবিবার একে অপরের মুখোমুখি হবে ভারত-নিউজিল্যান্ড। ২৫ বছর আগে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দ্বিতীয় আসরে ভারতকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্ল্যাক ক্যাপসরা। আইসিসির ওয়ানডে ইভেন্টে এখন পর্যন্ত সেটাই কিউইদের সেরা অর্জন। যদিওবা তখন এই টুর্নামেন্টের নাম ছিল আইসিসি নক-আউট প্রতিযোগিতা। এরপর কেটে গেছে অনেকটা সময়।

ক্রিকেট বিশ্বে দাপটও দেখিয়েছে তারা। কিন্তু দুর্ভাগ্য ব্ল্যাক ক্যাপসদের। এরপর আর কোনো ট্রফি উঁচিয়ে ধরতে পারেনি নিউজিল্যান্ড। তবে এবার দীর্ঘ সময়ের শিরোপাÑখরা ঘুচাতে মরিয়া রাচিন-উইলিয়ামসনরা। অন্যদিকে, টিম ইন্ডিয়াও ট্রফি পুনরুদ্ধারে মরিয়া। যে কারণে ২৫ বছর আগের পুনারাবৃত্তি নিশ্চয়ই টিম ইন্ডিয়া চাইবে না। দীর্ঘ ২৫ বছরে বিশ্ব ক্রিকেটের মানচিত্রটা অনেকটাই বদলে গেছে।

ভারত এখন অনেক বেশি আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলে। যদিও নিউজিল্যান্ডও লড়াকু টিম। সহজে হাল ছাড়ে না তারা। যে কারণে আগামী ৯ মার্চ রবিবার দুবাইয়ে ভারত-নিউজিল্যান্ডের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনাল ম্যাচটি নিঃসন্দেহেই আকর্ষণীয় হবে। 
আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির দ্বিতীয় আসরের ফাইনালে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন সৌরভ গাঙ্গুলী। ১১৭ করেছিলেন সেই ম্যাচে। দেশটির আরেক কিংবদন্তি শচীন টেন্ডুলকার করেছিলেন ৬৯ রান। শচীন-সৌরভের ওপেনিং জুটি করেছিল ১৪১ রান। তার পরেও হেরেছিল ভারত। কেননা, দলের বাকি ব্যাটাররা সেভাবে রান করতে পারেননি। ফলে ৫০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ভারত করেছিল ২৬৪ রান।

কিন্তু ক্রিস কেয়ার্নসের সেঞ্চুরির সৌজন্যে সেই ম্যাচে নিউজিল্যান্ড ৪ উইকেটে জিতে শিরোপা উৎসবে মেতেছিল। এবার তাই সেই ফাইনালের ফল ভারতকে ভাবাবে। তবে গ্রুপ পর্বে নিউজিল্যান্ডকে হারিয়েছিল ভারত। গ্রুপের শেষ ম্যাচে কিউইদের হারিয়েই অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমির টিকিট কাটে রোহিত শর্মার দল। এরপর মঙ্গলবার প্রথম  সেমিফাইনালেও অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে ভারত আগেই ফাইনালের টিকিট নিশ্চিত করে। বুধবার দক্ষিণ আফ্রিকাকে কাঁদিয়ে নিউজিল্যান্ড উঠল ফাইনালে। 
ভারতের সামনে এখন সেই ২৫ বছর আগের ফাইনালে হারের প্রতিশোধ নেওয়ার হাতছানি। শুধু তাই নয়? আইসিসি টুর্নামেন্টের নকআউট পর্বের মুখোমুখি লড়াইয়ে নিউজিল্যান্ডই এগিয়ে। এখন পর্যন্ত চারবার খেলে তার তিনবারই জয় পেয়েছে ব্ল্যাক ক্যাপসরা। ২০০০ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ফাইনালের পর ২০১৯ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল এবং ২০২১ সালে টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও ভারতকে হারিয়েছিল নিউজিল্যান্ড।

অন্যদিকে,  ২০২৩ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে রোহিত শর্মার দলের কাছে হেরে টুর্নামেন্ট থেকে ছিটকে গিয়েছিল নিউজিল্যান্ডকে। সেই যন্ত্রণার পাশাপাশি সর্বশেষ গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে হারের প্রতিশোধও নিতে রবিবারের ফাইনাল জিততে চাইবে ব্ল্যাক ক্যাপসরা।

×