
প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ১৬৪ রান করার পথে নিউজিল্যান্ডের রাচীন রবীন্দ্র ও কেন উইলিয়ামসনের শুভেচ্ছা বিনিময়
রান বন্যার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে চলছে রেকর্ড ভাঙাগড়ার খেলা। হ্যাঁ, অবশ্যই মোড়ল ভারতের ‘হাইবিড্র’ দুবাইয়ে নয়, মূল আয়োজক পাকিস্তানে। আরও বিশেষ করে বললে, লাহোরে। ব্যাপক সংস্কারের পর নতুন রূপ পাওয়া গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে গ্রুপ পর্বে বেন ডাকেটের (১৬৫) ইতিহাস গড়া সেই দেড়শ’তে ৩৫১ রান তুলে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দলীয় সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড গড়েছিল ইংল্যান্ড।
সাড়ে তিন ঘণ্টার মধ্যেই সেটি ভেঙে দিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী অস্ট্রেলিয়া জিতেছিল ৫ উইকেটে (৩৫৬/৫)। এবার সেটি নিজেদের করে নিল মিচেল স্যান্টনারের নিউজিল্যান্ড। সেই লাহোরেই বুধবার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ৬ উইকেটে ৩৬২ রানের পাহাড় গড়ে কিউইরা। জোড়া সেঞ্চরিতে রেকর্ড বইয়ের পাতা এলোমেলো করে দিয়েছেন রাচিন রবীন্দ্র ও কেন উইলিয়ামসন। আসরে নিজের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি তুলে নেওয়া রবীন্দ্র খেলেছেন ১০৮ রানের ইনিংস, মাস্টার উইলিয়ামসন ১০২।
১৯৯৮ সালে প্রবর্তিত আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের আগের দলীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ ছিল ৩৪৭/৪Ñ ২০০৪ সালের চতুর্থ আসরে। এবারে প্রথমে সেটি কেড়ে নিয়েছিল ইংল্যান্ড, পরে অস্ট্রেলিয়া। দশ দিনের ব্যবধানে পুনরুদ্ধার করে সিংহাসনে বসল কিউইরা। ব্যক্তিগত রেকর্ডে অবশ্য আরও জ্বলজ্বলে রবীন্দ্র (১০১ বলে ১৩ চার ও ১ ছক্কায় ১০৮) আর উইলিয়ামসন (৯৪ বলে ১০ চার ও ২ ছক্কায় ১০২)।
দুজনের সেঞ্চুরির সুবাদে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে এক আসরে সর্বাধিক ৫ সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছে নিউজিল্যান্ড। দুই সেঞ্চুরিয়ান রবীন্দ্র ও উইলিয়ামসন দ্বিতীয় উইকেটে গড়েছেন ১৬৪ রানের জুটি, যা চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নিউজিল্যান্ডের সর্বোচ্চ (আগের সর্বোচ্চ ২০০৪ আসরে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে নাথান অ্যাস্টল ও স্কট স্টাইরিসের ১৬৩)। বাংলাদেশের বিপক্ষে ১১২ রানের ইনিংস খেলা রবীন্দ্র তিন অঙ্ক স্পর্শ করেন ৯৩ বলে।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারে এটি তার পঞ্চম সেঞ্চুরি, সব কটিই আইসিসি টুর্নামেন্টে। মাত্র ১৩ ইনিংসে ৫ সেঞ্চুরি করে ভারতের শিখর ধাওয়ানের দ্রুততম পাঁচ সেঞ্চুরির (১৫ ইনিংসে) রেকর্ডও ভেঙেছেন রবীন্দ্র। তবে নিউজিল্যান্ডের দলীয় রেকর্ড পুনরুদ্ধার হয়েছে উইলিয়ামসনের সেঞ্চুরিতে। আগের ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে ৮১ রান করে আউট হওয়া অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যান প্রোটিয়াদের বিপক্ষে তিন অঙ্ক ছুঁয়েছেন ৯১ বলে।
যা এবারের আসরে তার জন্য প্রথম হলেও নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানদের মধ্যে পঞ্চম। অন্য চারটির দুটি রবীন্দ্রর, একটি করে টম ল্যাথাম ও উইল ইয়াংয়ের। আইসিসি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আর কোনো আসরে কোনো দল এত বেশি সেঞ্চুরি করতে পারেনি। ২০০৬ আসরে ৪টি সেঞ্চুরি করেছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের ব্যাটসম্যানরা। রবীন্দ্র-উইলিয়ামসনের রেকর্ড জুটি ভাঙে রাবাদার বলে রবীন্দ্র ক্লাসেনের হাতে ক্যাচ দিলে।
সেঞ্চুরির পর উইলিয়ামসনও বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি। উইয়ান মুল্ডারের বলে এনগিডির হাতে ক্যাচ দেন তিনি। দুই ব্যাটসম্যানের সেঞ্চুরির সুবাদে ৪০ ওভার শেষে নিউজিল্যান্ডের রান ছিল ৩ উইকেটে ২৫২। শেষ ১০ ওভারে দক্ষিণ আফ্রিকার বোলারদের ওপর ঝড় তোলেন ড্যারিল মিচেল ও গ্লেন ফিলিপস। মিচেল ৩৭ বলে ৪৯ রান করে ফিরলেও ফিলিপস অপরাজিত থাকেন ২৭ বলে ৪৯ রান করে। তার ইনিংসে ছিল ৬টি চার ও ১টি ছয়। শেষ ১০ ওভারে নিউজিল্যান্ড তোলে ১১০ রান। প্রোটিয়াদের হয়ে লুঙ্গি এনগিদি ৩ ও কাগিসো রাবাদা নিয়েছেন ২ উইকেট।