
সেমিফাইনালে ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে আউট করে অস্ট্রেলিয়ান স্পিনার কুপার কনলির বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস
ওয়ানডেতে এখন হরহামেশাই তিনশ’ রানের স্কোর দেখা যায়। এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই ইংলিশদের সাড়ে তিনশ’ চেজ করে জিতেছিল অস্ট্রেলিয়া। সেই দলটাই ভারতের বিপক্ষে মেগা-সেমিতে ৩ বল বাকি থাকতে গুটিয়ে গেল ২৬৪ রানে। ইংলিস-ম্যাক্সওয়েলদের ব্যর্থতার দিনে প্রতিপক্ষের বৈচিত্র্যময় বোলিং সামলে ফিফটি তুলে নিয়েছেন অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথ (৯৬ বলে ৭৩) ও বিপদের ত্রাতা অ্যালেক্স ক্যারি (৫৭ বলে ৬১)।
মোহাম্মদ শামি ৩, বরুণ চক্রবর্তী ও রবীন্দ্র জাদেজা নিয়েছেন ২টি করে উইকেট। দুটি বিষয় অসিদের আশার সঞ্চার করতে পারে। লাহোর, করাচি কিংবা পিন্ডি নয়, ম্যাচটা দুবাইয়ের স্লো-কন্ডিশনে। তার ওপর আইসিসি ওয়ানডে টুর্নামেন্টের নকআউট ম্যাচে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে এত রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড নেই কোনো দলের। আগের রেকর্ডটি অবশ্য ভারতেরই। ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপের কোয়ার্টার-ফাইনালে ২৬১ রানের লক্ষ্যে জিতেছিল তারা।
২০২৩ সালের নভেম্বর বিশ্বকাপের ফাইনালের পর থেকে এ নিয়ে ওয়ানডেতে টানা ১১ ম্যাচে টসে হারলেন রোহিত শর্মা! ওয়েস্ট ইন্ডিজ কিংবদন্তি ব্রায়ান লারার বিশ্বরেকর্ড (টানা ১২ টস হার) ছোঁয়ার এক কদম দুরে দাঁড়িয়ে ভারত অধিনায়ক। মঙ্গলবার টস জিতে ব্যাটিংয়ে নামা অস্ট্রেলিয়াকে শুরুতে চেপে ধরেন শামি। ম্যাথু শর্ট ছিটকে পড়ায় সুযোগ পাওয়া কুপার কনোলিকে নাচিয়ে ছাড়েন ভারতীয় পেসার।
তৃতীয় ওভারের প্রথম ৫ বলে ব্যাটেই লাগাতে পারেননি কনোলি। শেষ বলে কট বিহাইন্ডের রিভিউ নিয়ে তাকে ফেরায় ভারত। ৯ বলে শূন্য হাতে ফেরেন তরুণ এ ওপেনার। শুরুতে অস্বস্তিতে ছিলেন ট্রাভিস হেড। প্রথম ১১ বলে ১ রান করেন তিনি। পরে পান্ডিয়াকে পরপর চার ও ছক্কা মেরে ডানা মেলেন। শামিকে টানা তিনটি চার মারেন বাঁহাতি ওপেনার। ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠা হেডকে আক্রমণে এসেই থামান বরুন চক্রবর্তী।
রহস্য স্পিনারের মুখোমুখি হওয়া প্রথম বলে ছক্কার চেষ্টায় লং-অফে ধরা পড়েন হেড। ২ ছক্কা ও পাঁচটি চারে করেন ৩৯ রান। ৫৪ রানে ২ উইকেট হারানো দলের হাল ধরেন স্মিথ। তাকে কিছুক্ষণ সঙ্গ দেন মার্নাস লাবুশেন। জমে ওঠে তাদের জুটি। কিন্তু জাদেজার বাঁহাতি স্পিনে এলবিডব্লিউয়ে শেষ হয় লাবুশেনের ২৯ রানের ইনিংস। ভাঙে ৫৬ রানের জুটি। জশ ইংলিসকেও টিকতে দেননি জাদেজা।
ক্যারিকে নিয়ে হাল ধরেন স্মিথ। ৬৮ বলে ফিফটি করা অভিজ্ঞ ব্যাটসম্যান ছিলেন আত্মবিশ্বাসী। কিন্তু বোল্ড হয়ে যান শামির ফুল টসে! পরের ওভারে অক্ষর প্যাটেলকে ছক্কা মারার পরের বলেই বোল্ড হয়ে যান গ্লেন ম্যাক্সওয়েল। এক প্রান্ত ধরে রাখা ক্যারি ৪৮ বলে ফিফটিতে পা রাখেন। দ্রুত রান তোলার চেষ্টায় শ্রেয়াস আইয়ারের সরাসরি থ্রোয়ে রানআউটে কাটা পড়েন। এরপর আর বেশিদূর যেতে পারেনি অস্ট্রেলিয়া।
নাথান এলিসের ক্যাচ নিয়ে দারুণ এক কীর্তি গড়েন বিারাট কোহলি। ওয়ানডেতে কোহলির ক্যাচ এখন ১৬১টি। ছাড়িয়ে যান সাবেক অস্ট্রেলিয়ান অধিনায়ক ও দুর্দান্ত ফিল্ডার রিকি পন্টিংকে (১৬০)। ২১৮ ক্যাচ নিয়ে কোহলির ওপরে কেবল মাহেলা জয়াবর্ধনে। ২০২৩ বিশ্বকাপের ফাইনালে ভারতের ঘরের মাঠ আহমেদাবাদে এক লাখ দর্শককে স্তব্ধ করে বিশ্বকাপ জয় করে অস্ট্রেলিয়া। ফলে দুবাইয়ের এই সেমিফাইনাল ঘিরে তৈরি হয়েছিল বাড়তি উন্মাদনা।