ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১

শান্তর ফিফটির পর পেসারদের ঝলক

শাকিল আহমেদ মিরাজ

প্রকাশিত: ২২:৪৪, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

শান্তর ফিফটির পর পেসারদের ঝলক

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে বাংলাদেশের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান তানজিদ তামিম ও নাজমুল  হোসেন শান্ত

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির সেমিফাইনালের রেসে টিকে থাকতে জিততেই হবে, এমন কঠিন ম্যাচে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৯ উইকেটে ২৩৬ রানের সাদামাটা স্কোর গড়েছে বাংলাদেশ। সোমবার রাওয়ালপিন্ডিতে সতীর্থদের ব্যর্থতার মাঝে ফর্মে ফেরার দিনে ১১০ বলে ৯ চারে ৭৭ রানের লড়াকু এক ইনিংস খেলেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে বাংলাদেশের কোনো অধিনায়কের প্রথম ফিফটি এটি।

দুবাইয়ে ভারতের বিপক্ষে আগের ম্যাচে হাফ সেঞ্চুরি হাঁকানো জাকের আলি ৫৫ বলে ৩ চার ও ১ ছক্কায় খেলেছেন ৪৫ রানের ইনিংস। তবে হতাশ করেছেন তাওহিদ হৃদয়, অভিজ্ঞ মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মুশফিকুর রহিমরা। ফলে বড় ম্যাচে বড় স্কোর পায়নি বাংলাদেশ। নিউজিল্যান্ডের হয়ে স্পিনার মাইকেল ব্রেসওয়েল একাই নিয়েছেন ৪ উইকেট।

পেসার উইল ও’রুর্কির শিকার ২টি। জবাবে রাতে এ রিপোর্ট লেখার সময় ২০ ওভারে ৩ উইকেটে নিউজিল্যান্ডের রান ছিল ৯৮। একটি করে উইকেট নিয়েছেন বাংলাদেশের তিন পেসার তাসকিন আহমেদ, নাহিদ রানা ও মুস্তাফিজুর রহমান।  
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশী অধিনায়ক হিসেবে ফিফটি পেলেন শান্ত। তবে সাকিব আল হাসান ২০১১ ওয়ানডে বিশ্বকাপে ভারতের বিপক্ষে মিরপুরে ৫৫ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। সর্বশেষ ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপেও অধিনায়কত্ব করেছেন সাকিব। যেখানে সাবেক এই বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার দিল্লিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮২ রান করেন। ওয়ানডেতে আইসিসির কোনো বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় যা বাংলাদেশী অধিনায়কের সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।

এক্ষেত্রে শান্ত ৭৭ রান করে তালিকার দুইয়ে আছেন। শান্ত ব্যাট হতে সাম্প্রতিক অতটা ধারাবাহিক হতে না পারলেও ২০২৩ সাল থেকে বাংলাদেশের হয়ে ওয়ানডেতে সবচেয়ে বেশি ফিফটি করেছেন (১৩টি)। একই সময়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮টি করে ফিফটি করেছেন মুশফি ও হৃদয়। কেবল ফিফটিতেই নয়, ২০২২ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ওয়ানডেতে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ রানের তালিকায়ও চূড়ায় আছেন শান্ত। ৪০ ইনিংসে তার রান ১৪৪০ রান।

পিন্ডিতে একাদশে দুটি পরিবর্তন এনে মাঠে নামে বাংলাদেশ। সৌম্য সরকার ও তানজিম সাকিবের জায়গায় আসেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও নাহিদ রানা। টসে হেরে কিউইদের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা মোটামুটি ভালোই হয় বাংলাদেশের। দুই ওপেনার তানজিদ ও শান্ত মিলে তোলেন ৪৫ রান। ২৪ বলে ২৪ রান করে কিউই ব্রেসওয়েলের বলে কেন উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ দিয়ে তানজিদ বিদায় নিলে প্রথম ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। 
এরপর তিনে নামা মিরাজ ১৪ বলে ১৩ রান করে বিদায় নিলে বিপদ বাড়ে। আগের ম্যাচের সেঞ্চুরিয়ান হৃদয়ও পারেননি হাল ধরতে। ২৪ বলের মোকাবিলায় ৭ রানে ব্রেসওয়েলের দ্বিতীয় শিকার হয়ে ফিরেছেন তিনি। উইকেট পতনের মিছিল সেখানেই থামেনি। রানের গতিও ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। প্রথম ২১ ওভারে ৮৬টি ডট দেন বাংলাদেশের ব্যাটাররা।

অর্থাৎ ৬৮.২৫ শতাংশ বলে কোনো রান নিতে পারেননি তারা। বিপদ বাড়িয়ে ২৩তম ওভারে ব্রেসওয়েলের বলে স্লগ-সুইপ খেলতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ তুলে দেন মুশফিক (২)। ২৪তম ওভারের প্রথম বলে সিঙ্গেল নিয়ে ফিফটি পূর্ণ করেন শান্ত। এজন্য তাকে খেলতে হয় ৭১ বল। ২৭তম ওভারে আসে আরও এক বড় ধাক্কা। এবার ব্রেসওয়েলের অফসাইডের বাইরের বল ডাউন দ্য ট্র্যাকে তুলে মারতে চেয়েছিলেন মাহমুদুল্লাহ।

কিন্তু বল তার ব্যাট ছুঁয়ে শর্ট থার্ডম্যানে থাকা উইলিয়াম ও’রুর্কির হাতে জমা হয়। দলীয় ১১৮ রানে পঞ্চম উইকেট হারায় বাংলাদেশ। একদিকে উইকেট পতনের মিছিল, আরেকদিকে মাটি কামড়ে পড়ে ছিলেন শান্ত। কিন্তু তিনিও হার মানেন ৩৮তম ওভারে। ও’রুর্কির বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরার আগে ১১০ বলে ৭৭ রান করেন শান্ত। এরপর জাকের আলি ও রিশাদ হোসেন মিলে ইনিংস মেরামতের চেষ্টা করেন।

তবে ২৫ বলে ২৬ রান করে রিশাদ বিদায় নিলে ভাঙে প্রতিরোধ। অন্যপ্রান্তে জাকের ধরে খেলেন। দলকে ২৩১ রানে রেখে রান আউট হয়ে ফেরার আগে ৫৫ বলে ৪৫ রান করেন তিনি। শেষ ওভারে তাসকিনের উইকেট হারায় বাংলাদেশ।

×