ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৯ ফাল্গুন ১৪৩১

তাওহিদ-জাকেরের রেকর্ড জুটিতেও অস্বস্তি

মো. মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ২৩:০২, ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

তাওহিদ-জাকেরের রেকর্ড জুটিতেও অস্বস্তি

দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুই টাইগার ব্যাটার জাকের আলী ও তাওহিদ হৃদয়

মাত্র ৩৫ রানের মধ্যে শীর্ষ ৫ ব্যাটার সাজঘরে ফিরেছেন। এমন অবস্থায় কিছু করার সুযোগ থাকে না। তবে তাওহিদ হৃদয় আর জাকের আলী অনিক যা করেছেন তা নয়া ইতিহাস। ষষ্ঠ উইকেটে দু’জন ১৫৪ রানের রেকর্ড জুটি গড়ার কারণেই সংকটাপন্ন পরিস্থিতি কাটিয়ে উঠেছে বাংলাদেশ দল। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পেয়ে যান তাওহিদ।

কিন্তু এর পরও স্বস্তি আসেনি বাংলাদেশ দলের তাঁবুতে। কারণ ঠিকঠাক ১০০ রানে তাওহিদ বিদায় নেওয়ার পরই ২ বল বাকি থাকতেই বাংলাদেশের ইনিংস থেমেছে ২২৮ রানে। বৃহস্পতিবার চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ভারতের বিপক্ষে এমন ব্যাটিং বিপর্যয় ঘটেছে বাংলাদেশ দলের। এর পেছনে মূল হন্তারকের ভূমিকায় ছিলেন অভিজ্ঞ পেসার মোহাম্মদ শামি। তাতেই অস্বস্তিতে পড়েছে বাংলাদেশ। তিনি একাই ৫ উইকেট নিয়েছেন ৫৩ রান দিয়ে। 
টস জিতে আগে ব্যাটিং নেয় বাংলাদেশ ২ স্পিনার, ৩ পেসার নিয়ে একাদশ সাজিয়ে। ভারত  নেমেছে ৩ স্পিনার ও ২ পেসার নিয়ে। যদিও অলরাউন্ডার হার্দিক পান্ডিয়া থাকার কারণে পেস বোলিংয়ে পেস বিভাগে আরেকটি বিকল্প থেকেছে ভারতের। অভিজ্ঞ শামির পেসে প্রথম ওভারের শেষ বলে কট বিহাইন্ড হন সৌম্য সরকার (০)। এর পর রীতিমতো মড়ক লেগেছে।

নাজমুল হোসেন শান্ত ০, মেহেদি হাসান মিরাজ ৫ ও মুশফিকুর রহিম ০ রানে সাজঘরে ফেরেন। অবশ্য ভালোই খেলছিলেন তানজিদ হাসান তামিম। তিনিও ২৫ বলে ৪ চারে ২৫ রানে বিদায় নিয়েছেন। ফলে দলীয় মাত্র ৩৫ রানেই ৫ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বাংলাদেশ। পাওয়ার প্লের ১০ ওভার শেষে মাত্র ৩৯ রান বাংলাদেশের বোর্ডে পাঁচ ব্যাটারকে হারিয়ে।  সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর লড়াই শুরু করেন তাওহিদ হৃদয় ও জাকের।

যদিও নবম ওভারে অক্ষর প্যাটেলের স্পিনে নিজের প্রথম বলেই ক্যাচ তুলে দিয়েছিলেন জাকের। তবে ভারতের অধিনায়ক রোহিত শর্মা সেই ক্যাচ ফেলে দিয়েছেন। এর পর আর সুযোগ দেননি জাকের এবং তাওহিদের সঙ্গে জুটি বড় করতে থাকেন। ২০তম ওভারে ক্যাচ দিয়েও বেঁচে যান তাওহিদ। তিনি ২৩ রানে থাকার সময় কুলদীপ যাদবের বলে ক্যাচ  ফেলেছেন হার্দিক।

দুই ব্যাটারই জীবন পাওয়াতে চরম বিপর্যয় থেকে বেঁচেছে বাংলাদেশ। তাওহিদ-জাকের দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন এর পর। তাদের দৃঢ়তায় ২৯তম ওভারে দলীয় শতরান করে বাংলাদেশ। জুটি বড় হতে থাকে। আক্রমণাত্মক মেজাজের হলেও দলের বিপদে জাকের ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ফিফটি করেন ৮৭ বলে। কিছুক্ষণ পর তাওহিদও হাফ সেঞ্চুরি পেয়েছেন ৮৫ বল থেকে। দেড়শ’ পেরিয়ে দুশ’ রানের দিকে এগোতে থাকে বাংলাদেশ দল।  

শেষ পর্যন্ত ৪৩তম ওভারে গিয়ে ১৫৪ রানের জুটি ভাঙে। এটি চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে ষষ্ঠ উইকেটে জুটির রেকর্ড। বাংলাদেশের পক্ষে ওয়ানডেতে এটিই সেরা জুটি ষষ্ঠ উইকেটে। গত বছর ডিসেম্বরে সেন্ট কিটসে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে অবিচ্ছিন্ন ১৫০ রানের জুটি গড়েন জাকের-মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। সেই রেকর্ড ভেঙেছেন জাকের-তাওহিদ। ১১৪ বলে ৪ চারে ৬৮ রানে জাকের বিদায় নেওয়ার পর রিশাদ হোসেন কিছুটা লড়াই করেছেন।

তিনি ১২ বলে  ১ চার, ১ ছয়ে ১৮ রান করলেও বাকিরা ব্যর্থ হওয়ায় খুব বেশিদূর যেতে পারেনি বাংলাদেশ। তাছাড়া পায়ে টান লাগার কারণে শেষদিকে স্বাভাবিক ছন্দে ব্যাট করতে পারেননি তাওহিদ। ৪৯তম ওভারে তিনি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ১ রান নিয়ে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন। শেষ ওভারের চতুর্থ বলে তাওহিদ স্জাঘরে ফিরতেই ২২৮ রানে থামে বাংলাদেশ। ৫ উইকেট নেন শামি, ৩টি উইকেট নেন হর্ষিত রানা ও ২ উইকেট শিকার করেন অক্ষর প্যাটেল।

×