
.
কোচ ও খেলোয়াড়দের মধ্যে দ্বন্দ্বের কারণে শঙ্কার কালো মেঘে ছেয়ে গিয়েছিল গর্বের নারী ফুটবল। পিটার বাটলার থাকলে খেলবেন না বলে গণ-অবসরের হুমকি দেওয়া ফুটবলাররা নিজেদের অবস্থান থেকে সরে এসেছেন। বিদ্রোহ করা সাফজয়ী ১৮ নারী ফুটবলার অনুশীলনে ফিরবেন, কেন্দ্রীয় চুক্তিতেও স্বাক্ষর করবেন বলে জানিয়েছেন বাফুফে নারী উইংসের প্রধান মাহফুজা আক্তার কিরণ। তবে সংযুক্ত আরব আমিরাত সফরে তারা যাচ্ছেন না। রবিবার বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে কিরণ জানান, অনুশীলন বয়কট করে বিদ্রোহ করা সাবিনা খাতুনদের সঙ্গে এদিনই আলোচনা করেছেন তিনি। আলোচনায় সংকট সমাধানের পথ বেরিয়ে এসেছে। মেয়েরা নিজেদের অনড় অবস্থান থেকে সরে ক্যাম্পে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। বাটলার অবশ্য ধাক্কাটা পুরোপুরি হজম করতে পারেননি। তাতে স্পষ্ট, ক্যাম্পে ফিরলেও সিনিয়রদের অনেকেই দলে জায়গা হারাতে পারেন।
সভাপতির পক্ষ থেকে, আমার পক্ষ থেকে মেয়েদের ফিরিয়ে আনার জন্য আমরা চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছি, তারই ধারাবাহিকতায় আজও তাদের সঙ্গে বসেছিলাম। মেয়েরা ট্রেনিংয়ে ফিরবে, তবে এখন নয়। আমাদের ক্যাম্প বন্ধ হয়ে যাবে ২৪ তারিখ। আপনারা জানেন আমরা সংযুক্ত আরব আমিরাত যাব একটা ফিফা উইন্ডোতে একটা ম্যাচ খেলতে। যেহেতু দল চলে যাবে তাই ক্যাম্প বন্ধ হয়ে যাবে। সিনিয়র মেয়েরাও একটা বিরতি চাচ্ছে। বিরতির পর ক্যাম্পে ফিরে অনুশীলন শুরু করবে। রবিবার বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনে (বাফুফে) সংবাদ মাধ্যমকে বলেন কিরণ। তিনি জানান, আমি ১৮ জনের সঙ্গেই বসেছি। এটা ১৮ জনেরই মুখের কথা। এমনি আমি ওদের বলেছি প্রেস মিট করব। বিদ্রোহী ফুটবলাররা ক্যাম্পে ফেরার পর তাদের সঙ্গে কোচকে নিয়ে আলোচনায় বসবে বাফুফে। সেখানে সংকট পুরোপুরি কেটে যাবে বলে বিশ্বাস কিরণের, অনুশীলন শুরুর সময় সভাপতি, কোচ, মেয়েদের নিয়ে সভা করে যে ভুল বোঝাবুঝি আছে সেটা মিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হবে। একসঙ্গে অনুশীলন করবে সবাই, কেউ কারো সঙ্গে অসন্তোষ থাকলে ভালো কিছু হবে না। আজ আমাকে বলেছে যোগ দিয়ে চুক্তিতে সই করবে। ২৬ ফেব্রুয়ারি ও ২ মার্চের প্রীতি ম্যাচ দুটি খেলতে ২৪ ফেব্রুয়ারি দুবাইয়ে রওনা দেবে বাংলাদেশ। ওই দিন ১৮ ফুটবলারও ছুটি পাবেন এবং ক্যাম্প ছাড়বেন। এরপর সাবিনা-মারিয়ারা ক্যাম্পে ফিরে বাফুফের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হবেন এবং পিটারের অধীনে অনুশীলন করবে বলে জানিয়েছেন কিরণ।
নিজেদের অবস্থান নিয়ে গণমাধ্যমে মুখ খুলতে রাজি হননি নারী ফুটবলাররা। মাশুরা পারভিন বলেন, এখন কোনো মন্তব্য করতে পারব না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরেক ফুটবলার বলেন, কিরণ ম্যাম আমাদের গার্ডিয়ান। তার সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরাও ফিরতে চাই, মানসিকভাবে আমরাও বিধ্বস্ত। তাকে সেই কথা বলেছি। এদিকে ‘বিদ্রোহ’ করা ফুটবলারের মধ্যে অনেকের জন্য দুয়ার খোলা রাখলেও বাংলাদেশ কোচ কারো কারো বিষয়ে নিজের আগের ভাবনাতেই অটল থাকছেন, এর মধ্যে কিছু খেলোয়াড় আছে, যাদের ফুটবল দক্ষতার প্রশংসা করি আমি। কিন্তু তারা দলের ভেতর-বাইরের কিছু মানুষ, পুরুষ এবং মহিলা দ্বারা জোরজবরদস্তির শিকার হয়েছিল। যেখানে আমাদের হাতে অনূর্ধ্ব-২০ বয়সী এমন কঠোর পরিশ্রমী এবং নম্র খেলোয়াড় আছে, সেখানে আশা করি, আমাকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী খেলোয়াড়দের সঙ্গে কাজ করতে বাধ্য করা হবে না, বলেন বাটলার।