ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৩০ মাঘ ১৪৩১

সেই প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেই এগিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ

জিএম মোস্তফা

প্রকাশিত: ০০:৩৭, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সেই প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখেই এগিয়ে রিয়াল মাদ্রিদ

শূন্যে লাফিয়ে সিটির জালে গোল করছেন কিলিয়ান এমবাপে

উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগে নকআউট পর্বের প্লে অফের প্রথম লেগে জয় পেয়েছে রিয়াল মাদ্রিদ। মঙ্গলবার রাতে ইউরোপ সেরার এই টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা দুই দুইবার পিছিয়ে পড়েও শেষ পর্যন্ত ৩-২ গোলে পরাজিত করেছে ইংলিশ জায়ান্ট ম্যানচেস্টার সিটিকে।

প্রতিপক্ষের মাঠ থেকে প্রথম লেগে জয়ের ফলে শেষ ষোলোর পথেও এগিয়ে গেল কার্লো আনচেলত্তির শিষ্যরা। শুধু তাই নয়? সিটিজেনদের হারিয়ে ইউরোপের শীর্ষ মহাদেশীয় প্রতিযোগিতায় ৩০০তম জয়েরও নজির গড়েছে লস ব্ল্যাঙ্কোসরা। ম্যাচ জয়ের এই তালিকায় দুই নম্বরে রয়েছে বায়ার্ন মিউনিখ। জার্মান ক্লাবটির জয় ২৪১ ম্যাচে।
রিয়াল মাদ্রিদ ছাড়াও প্লে অফের প্রথম লেগে জয় পেয়েছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই, বরুসিয়া ডর্টমুন্ড এবং জুভেন্টাস। তবে এদিন ফুটবলপ্রেমীদের বাড়তি নজর ছিল ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে। যেখানে টুর্নামেন্টের বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের আতিথ্য দেয় ম্যানচেস্টার সিটি। ফুটবলে রিয়াল মাদ্রিদ মানেই প্রত্যাবর্তনের এক জীবন্ত উদাহরণ।

হারার আগে হাল না ছাড়া দলটি মঙ্গলবার তার প্রমাণ দিল আরও একবার। ইত্তিহাদ স্টেডিয়ামে এদিন নিজেদের সমর্থকদের সামনে আক্রমণাত্মক ফুটবলের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ম্যাচের শুরুতেই এগিয়ে যায় পেপ গার্দিওলার দল। জোস্কো জিভার্দিওলের দুর্দান্ত চেস্ট পাস থেকে বল পেয়ে নিখুঁত ফিনিশিংয়ে তা রিয়ালের জালে জড়ান আর্লিং হালান্ড। তবে অফসাইড সন্দেহে সেই গোল যাচাই করতে লেগে যায় চার মিনিট।

শেষ পর্যন্ত এই গোলে এগিয়ে থেকেই বিরতিতে যায় ম্যানচেস্টার সিটি। ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধেই অবশ্য স্বরূপে ফিরে এমবাপে-বেলিংহ্যামরা। ৬০ মিনিটে দানি সেবায়োসের অসাধারণ ফ্লোটেড পাস থেকে রিয়ালকে সমতায় ফেরান কিলিয়ান এমবাপে। কিন্তু ৮০ মিনিটে আবারও এগিয়ে যায় স্বাগতিক দল। ফিল  ফোডেনের বুদ্ধিদীপ্ত মুভমেন্টে বাধা দিতে গিয়ে বক্সের মধ্যেই তাকে ফাউল করে বসেন সেবায়োস।

তাতেই পেনাল্টি পায় ম্যানসিটি। সেই পেনাল্টি থেকে গোল করতে মোটেও ভুল করেননি হালান্ড। ২-১ গোলে এগিয়ে যাওয়ার পর জয়ের স্বপ্নে বিভোর ছিল স্বাগতিক সমর্থকরা। কিন্তু দলটা যখন রিয়াল মাদ্রিদ তখনই গল্পটা ভিন্ন রকমের। সেটা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সমর্থকদের বেশ ভালোই জানা। কেননা, এখানে যে স্প্যানিশ জায়ান্টদের ফিরে আসার নজির একেবারেই চিরন্তন। এদিনও নিজেদের সেই রূপটাই প্রদর্শন করল আরও একবার।

ম্যাচের ৮৬ মিনিটে এডারসনের ভুল পাস ধরে বল পান ভিনিসিয়াস জুনিয়র। তার নেওয়া শট ঠেকালেও ফিরতি বলে গোল করে রিয়ালকে সমতায় ফেরান সিটিরই সাবেক তারকা ব্রাহিম দিয়াজ। ফলে ২-২ স্কোরলাইনে শেষ হয় ম্যাচের নির্ধারিত ৯০ মিনিটে। তবে ম্যাচের শেষ রোমাঞ্চটা যেন তখনো বাকি। যোগ করা সময়ের ৯২ মিনিটে ভিনিসিয়াস জুনিয়র ডানদিক দিয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে এসে বলটি এডারসনের মাথার ওপর দিয়ে তুলে দেন।

কিন্তু সেটি সরাসরি সিটির জালে প্রবেশ করছিল না, ঠিক তখনই সামনে এগিয়ে আসা জুড বেলিংহ্যাম নিখুঁত ট্যাপ-ইন করে রিয়াল মাদ্রিদের ৩-২ গোলের জয় নিশ্চিত করেন। সেই সঙ্গে ১-০ থেকে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে যাওয়া সিটির বিরুদ্ধে তাদেরই মাঠে এমনভাবে রিয়াল মাদ্রিদ ফিরে আসার গল্প রচনা করলে রীতিমতো স্তব্ধ হয়ে যায় পুরো ইত্তিহাদ স্টেডিয়াম। অন্যদিকে বাঁধভাঙ্গা উল্লাসে মেতে ওঠেন রিয়ালের খেলোয়াড়রা। এই জয়ে শেষ ষোলোর  পথে এক পা দিয়ে রাখার পাশাপাশি আনচেলত্তির শিষ্যরা প্রমাণ করল কেন তারা ইউরোপের রাজা। 
এদিন ম্যানচেস্টার সিটি বনাম রিয়াল মাদ্রিদের ম্যাচ অন্যরকম রোমাঞ্চ ছড়ালেও একপেশে জয় নিয়েই মাঠ ছেড়েছে প্যারিস সেইন্ট জার্মেই এবং বরুসিয়া ডর্টমুন্ড। প্যারিস জায়ান্ট পিএসজি এদিন ৩-০ গোলে হারিয়েছে ব্রেস্টকে। এই ম্যাচেও আলাদাভাবে নিজের জাত চিনিয়েছেন উসমান ডেম্বেলে।

ব্রেস্টের জালে দুইবার বল জড়িয়েছেন ফরাসি তারকা। ম্যাচের ৪৫ মিনিটে পিএসজির হয়ে দ্বিতীয় আর ৬৬ মিনিটে তৃতীয় গোলটি করেন তিনি। এর আগে ম্যাচের ২১ মিনিটে পেনাল্টির সৌজন্যে পিএসজিকে প্রথম এগিয়ে দিয়েছিলেন ভিতিনহা। পিএসজির মতো একই ব্যবধানে জয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছে বরুসিয়া ডর্টমুন্ডও।

×