ইয়াং টাইগার অনূর্ধ্ব-১৮ ন্যাশনাল ক্রিকেট টুর্নামেন্টে শিরোপা জয়ের উল্লাস রাজশাহী বিভাগের কিশোরদের
তবে কি সাবিনারা ‘হাতির পাঁচ পা’ দেখে ফেলেছেন? ধরাকে সরাজ্ঞান করছেন? চলে গেছেন সব নিয়ম-শৃঙ্খলার ঊর্ধ্বে? নিজেদের কি মনে করছেন ‘দলের চেয়ে ব্যক্তি বড়’? ফুটবলপ্রেমীদের প্রশ্ন, সাবিনাদের এই দম্ভের উৎস কি, কোথায় খুঁটির জোর? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তাদের অনেকেই বলছেন, তাহলে কি গোঁয়ার্তুমি করে নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারছেন সাবিনারা?
হেড কোচ পিটার বাটলারের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ করা হয়েছে, বাফুফের তদন্ত কমিটি তার কোনো সত্যতা খুঁজে পায়নি। বরং জিজ্ঞাসাবাদে ১৮ নারী ফুটবলারকে কিছু প্রশ্ন করেছে, সেগুলোর কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি মাসুরা-মারিয়ারা। বরং তারা নিজেদের অবস্থানে অটল। অর্থাৎ ব্রিটিশ কোচ দলে থাকলে তারা গণপদত্যাগ করবেন।
অনেক ফুটবলপ্রেমী ফেসবুকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এই বলে, সাবিনারা বিচার মানেন, কিন্তু তালগাছটা চাচ্ছেন। সবচেয়ে বড় কথা, বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়ালের অনুরোধ না মেনে তাকে একপ্রকার অপমানই করেছেন সাবিনা অ্যান্ড গং। এটা যেন চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে সাবিনাদের ঔদ্ধত্য।
ঘটনাটা অন্য কোনো দেশের ফুটবল ফেডারেশনে ঘটলে এতদিনে সেই বিদ্রোহী ফুটবলারদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করা হতো। কিন্তু বাফুফে এখানে ব্যতিক্রম। তারা পরিচয় দিচ্ছে ধৈর্য ও সহনশীলতার। তারা ‘ধীরে চলো নীতিতে বিশ্বাসী।’ অনেকেই বলছেন যেখানে বাফুফে বাটলারের সঙ্গে আরও দুই বছরের জন্য চুক্তির মেয়াদ বাড়িয়েছেন সেখানে এখন যদি তারা সাবিনাদের দাবি মেনে কোচকে বরখাস্ত করেন, তাহলে বাফুফের চুক্তি মেয়াদের সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রশ্ন উঠবে, হবে তীব্র সমালোচনা।
এক্ষেত্রে বিপাকেই পড়েছে দেশীয় ফুটবলের সর্বোচ্চ এই নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি। এজন্য শুরু থেকেই একটি ব্যাপারে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ; যা-ই ঘটুক না কেন, বাটলারই কোচ থাকবেন। সেক্ষেত্রে সাবিনারা সেটা মানলে তো ভালই, আর না মানলে তাদের মাইনাস করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।
ঘটনাপ্রবাহের আলোকে বাফুফে মোটামুটি একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে বলে প্রতীয়মান হচ্ছে। সেটা হচ্ছে জুনিয়র যে ১২ ফুটবলার বাটলারের অধীনে অনুশীলন করছে, তাদের সঙ্গে চুক্তি করেছে। যেখানে নেই বিদ্রোহী ১৮ ফুটবলার। তারা তাদের অবস্থান থেকে সরে না এলে চুক্তির তালিকায় যোগ হবে প্রায় সমসংখ্যক আরও জুনিয়র বাটলার, যারা হবে ভবিষ্যতের দলের অংশ। বাটলারেরও তেমনটাই চাওয়া। আর তার এই চাওয়ার সঙ্গে একমত বাফুফেও।
ফেসবুকে অনেকেই লিখেছেন, ১৮ জন নয়, মাত্র এক ফুটবলারকে বাদ দিলেই বাফুফে সব সমস্যার সমাধান করতে পারবে। ওই ‘এক’জনটা হচ্ছেন অধিনায়ক সাবিনা খাতুন। যাকে ফেসবুকে অনেকেই আখ্যায়িত করছেন ‘সব নষ্টের গোড়া’ হিসেবে। সাবিনা নাকি নিজেও ডুবছেন, অন্যদেরও ডোবাচ্ছেন। সেই সঙ্গে তার মাধ্যমেই নাকি অন্যরা শিখছেন বেয়াদবি, বিদ্রোহ ও উচ্ছৃঙ্খলতা, যা কিনা পরবর্তী প্রজন্মের ফুটবলারদের বিপথে নিয়ে যেতে পারে।
আরও অনেকেই লিখেছেন, যেসব নারী ফুটবলার দল থেকে বাদ পড়ে ক্যারিয়ারের সর্বনাশ করবেন, পরে তারা ঠিকই আফসোস করবেন- সাবিনার দ্বারা ‘ব্রেনওয়াশ’ হয়ে কি ভুলটাই না করেছেন তারা। এ যেন নিজেদের পায়ে নিজেরাই কুড়াল মারার মতো আত্মঘাতী হওয়া।