![জমজমাট লড়াইয়ে চিটাগংকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বরিশাল জমজমাট লড়াইয়ে চিটাগংকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন বরিশাল](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/pabna-78-2502071612.jpg)
অধিনায়ক তামিম ইকবালের ২৯ বলে ৫৪ রান শিরোপা জয়ের ভিত গড়ে দেয় ফরচুন বরিশালকে।
একাদশ বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ফরচুন বরিশাল। জমজমাট লড়াইয়ের পর শুক্রবার রাতে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত ফাইনালে ৩ উইকেটে চিটাগং কিংসকে হারিয়েছে তারা। টানা দ্বিতীয়বার শিরোপা জিতল বরিশাল। অধিনায়ক হিসেবে বিপিএলে টানা দুই ট্রফি হাতে তুললেন তামিম ইকবালও। অন্যদিকে ২০১৩ সালের পর দ্বিতীয়বার ফাইনালে উঠে আবারও রানার্সআপ হয়েছে চিটাগং। আগে ব্যাট করে এদিন ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯৪ রান তোলে চিটাগং কিংস। জবাবে ১৯.৩ ওভারে ৭ উইকেটে ১৯৫ রান করে জয় পায় বরিশাল।
টস জিতে আগে চিটাগংকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বরিশাল। ফর্মে থাকা খাজা নাফে ও পারভেজ হোসেন ইমন উড়ন্ত সূচনা এনে দেন চিটাগংকে। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারেই আসে ৫৭ রান। চতুর্থ ওভারে বাঁহাতি স্পিনার তানভীর ইসলাম ১৮ রান দেন। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক মেজাজে থাকা পারভেজ ৩০ বলেই চলতি আসরে নিজের দ্বিতীয় ফিফটি পেয়ে যান। আর নাফে কিছুটা দেখেশুনে খেললেও পরে দ্রুত রান তোলায় মনোযোগী হয়েছেন। তিনি ৩৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেন।
১১ ওভারেই শতরানে পৌঁছে চিটাগং বিনা উইকেটে। এতেই বিশাল সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় তারা। ১৩তম ওভারে ১২১ রানের জুটি গড়ে সাজঘরে ফেরেন নাফে। তিনি ৪৪ বলে ৭ চার, ৩ ছক্কায় ৬৬ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলেন তিনি। এরপর রানের গতি কিছুটা কমে যায়। কিন্তু ১৬তম ওভারে তানভীর বোলিংয়ে এসে আবার অগোছালো ডেলিভারি দিয়ে ২২ রান খরচা করেন। এতে আবার বড় সংগ্রহের দিকে এগিয়ে যায় চিটাগং।
গ্রাহাম ক্লার্ক ক্রিজে এসে ঝড় তোলেন। দ্বিতীয় উইকেটে তিনি আর পারভেজ ৪০ বল থেকে ৭০ রানের জুটি গড়েছেন। তবে শেষ ৪ ওভারে তাদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় দুশো পেরোতে পারেনি চিটাগং। ১৭তম ওভারে মোহাম্মদ আলী ৪, ১৮তম ওভারে কাইল মেয়ার্স ৯, ১৯তম ওভারে এবাদত হোসেন ১২ ও শেষ ওভারে মোহাম্মদ আলী একটি উইকেট নিয়ে ৬ রান দেন এবং একটি রানআউটও হয়।
অর্থাৎ সর্বশেষ ৪ ওভারে মাত্র ৩১ রান করেছে তারা আরও ২ উইকেট হারিয়ে। তাই ২০ ওভার শেষে ৩ উইকেটে ১৯৪ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে চিটাগং। ৪ ওভারে মাত্র ২১ রানে ১ উইকেট নেন মোহাম্মদ আলী।
জবাব দিতে নেমে ঝড়োগতির শুরু পায় বরিশাল অধিনায়ক তামিম ইকবালের তাণ্ডবে। তার সঙ্গী তাওহিদ হৃদয় অনেকখানিই নির্লিপ্ত ছিলেন। চিটাগংয়ের মতোই পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ৫৭ রান তোলে বরিশাল। ঝড়োগতিতে মাত্র ২৪ বলেই ফিফটি হাঁকান তামিম। নবম ওভারের প্রথম বলে তিনি সাজঘরে ফেরেন বাঁহাতি শরিফুল ইসলামের পেসে।
তামিম ২৯ বলে ৯ চার, ১ ছয়ে ৫৪ রান করেন। ৭৬ রানের উদ্বোধনী জুটিতে জয়ের ভিত পায় বরিশাল। তবে ফর্মে থাকা ডেভিড মালানও (২ বলে ১) শরিফুলের শিকার হন একই ওভারে। তাতে কিছুটা ধাক্কা খায় বরিশাল। এমনকি তাওহিদও ২৮ বলে ৩ চারে ৩২ রানে বিদায় নিলে সমস্যায় পড়ে তারা।
কিন্তু মুশফিকুর রহিম ৯ বলে ৩ চারে ১৬ রান করার পথে মেয়ার্সের সঙ্গে চতুর্থ উইকেটে ৩৪ রানের জুটি গড়েন। মুশফিক ফিরে যাওয়ার পর মেয়ার্স-মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ জুটি আরও ৪২ রান যোগ করেন। যদিও এই জুটিতে মেয়ার্সই বড় অবদান রাখেন।
তবে, ১৮তম ওভারে বোলিংয়ে ফিরে শরিফুল আবার জোড়া আঘাত হানেন। তিনি ২৮ বলে ৩ চার, ৩ ছক্কায় ৪৬ রান করা মেয়ার্স ও ১১ বলে ৭ রান করা মাহমুদুল্লাহকে সাজঘরে ফিরিয়ে চিটাগংকে স্বপ্ন দেখান জয়ের। কিন্তু বারবার মিস ফিল্ডিংয়ে বাড়তি কিছু রান দিয়েছে চিটাগং।
তাই ১৯তম ওভারে মোহাম্মদ নবি ৪ বলে ৪ রানে সাজঘরে ফিরলেও রিশাদ হোসেনের ৬ বলে ২ ছক্কায় করা ১৮ রানের সুবাদে ৩ বল হাতে রেখেই শিরোপা ছুঁয়ে ফেলার কাঙ্ক্ষিত জয় তুলে নেয় বরিশাল। ৭ উইকেটে ১৯৫ রান করে তারা। ৪ ওভারে ৩৪ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন শরিফুল। নাঈম ইসলাম নেন ২ ওভারে ১৮ রানে ২ উইকেট।
মামুন/তাবিব