![চিটাগংয়ের প্রথম না বরিশালের দ্বিতীয়? চিটাগংয়ের প্রথম না বরিশালের দ্বিতীয়?](https://www.dailyjanakantha.com/media/imgAll/2024April/70-2502061855.jpg)
.
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) জৌলুস আগের চেয়ে বাড়েনি। নানা বিতর্কে এবার প্রশ্ন তোলার মতো অনেক কিছুই আছে। সেসব সমালোচনাকে বাইরে রেখে একাদশ এই আসরে ক্রিকেটীয় লড়াইটা বেশ জমজমাট হয়েছে। আর মাত্র একটি ম্যাচ, তারপরেই পর্দা নামবে বিপিএলের। সবমিলিয়ে ৪৫টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সেই লড়াই শেষে ফাইনালে উঠেছে ফরচুন বরিশাল ও চিটাগং কিংস। আজ সন্ধ্যা ৬টায় শিরোপা লড়াইয়ে দু’দল মুখোমুখি হবে মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। বরিশালের টানা দ্বিতীয়বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার দারুণ সুযোগ এবার। শিরোপা ধরে রাখতে আত্মবিশ^াসী তারা। অপরদিকে, ১২ বছর পর আবার চিটাগং কিংস একই মালিকানা ও নামে ফাইনালে উঠেছে। ২০১৩ সালের আসরে শিরোপা জিততে পারেনি। চট্টগ্রামের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজিই আর ফাইনাল খেলতে পারেনি। এবার প্রথম শিরোপা জিততে মুখিয়ে আছে তারা। এই আসরে প্রাইজমানি বেড়েছে। চ্যাম্পিয়নরা পাবে আড়াই কোটি টাকা এবং রানার্সআপরা পাবে দেড় কোটি টাকা।
২০২২ সালের আসরে ফরচুন বরিশাল হিসেবে প্রথমবার বিপিএলে অংশ নেয় বরিশালের ফ্র্যাঞ্চাইজি। সেবারই ফাইনালে ওঠে। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি। গত আসরে কোচ মিজানুর রহমান বাবুল ও অধিনায়ক তামিম ইকবালের দারুণ রসায়নে প্রথমবার শিরোপা জেতে তারা। সেদিক থেকে এটি তৃতীয় ফাইনাল ফরচুন বরিশালের। তার আগে টানা ৩ আসরে বরিশালের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি খেলেনি। তবে ২০১২ ও ২০২৫ আসরে বরিশালের ভিন্ন দুটি দল রানার্সআপ হয়েছে। সবমিলিয়ে বরিশালের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজির এটি পঞ্চম ফাইনাল।
আবার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতোই দল গড়েছে তারা। কাগজে-কলমে দারুণ ব্যালান্সড একটি দল বরিশালের। দেশী-বিদেশী ক্রিকেটারের দারুণ সামঞ্জস্য রয়েছে। আফগানিস্তানের অলরাউন্ডার মোহাম্মদ নবি তেমন ফর্মে না থাকায় ফাইনালের জন্য নিউজিল্যান্ডের সাবেক পেস অলরাউন্ডার জিমি নিশামকে এনেছে ফ্র্যাঞ্চাইজিটি। এতে শক্তির ভারসাম্য আরও বেড়েছে। এছাড়াও অলরাউন্ডার রয়েছেন কয়েকজন যার কারণে ব্যাটিং গভীরতাও বেশ ভালো। দীর্ঘ ব্যাটিং লাইনআপের জন্য খুব সহজ উইকেট না থাকলেও বরিশালকে কম রানে গুটিয়ে দেওয়ার জন্য প্রতিপক্ষ দলের বোলিং শক্তি হতে হবে অনেক ভালো মানের। অবশ্য বরিশালেরই বোলিং শক্তি বেশ ভালো। যেকোনো প্রতিপক্ষের ব্যাটিং লাইনকে সমস্যায় ফেলতে পারেন লেগস্পিনে রিশাদ হোসেন, বাঁহাতি স্পিনে তানভীর ইসলাম এবং পেস বোলিংয়ে পেস অলরাউন্ডার নিশাম, কাইল মেয়ার্স, ডানহাতি পেসার মোহাম্মদ আলী ও এবাদত হোসেন চৌধুরী, রিপন ম-লরা আছেন। ব্যাটিংয়ের তালিকায় তামিম, তাওহিদ হৃদয়, মুশফিকুর রহিম, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ও ডেভিড মালান!
বরিশালের এমন শক্তিশালী লাইনআপের সঙ্গে এখন পর্যন্ত চলতি আসরে ৩ বার লড়াই হয়েছে চিটাগংয়ের। সর্বশেষ প্রথম কোয়ালিফায়ারে ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে বিধ্বস্ত হয়েছে। আর প্রাথমিক রাউন্ডে প্রথমবার ৬ উইকেটে হারলেও দ্বিতীয়বার জিতেছে ২৪ রানে। এখান থেকেই বোঝা যাচ্ছে যতই শক্তিধর হোক বরিশাল তাদের হারানোর সক্ষমতা আছে চিটাগংয়ের। কাগজে-কলমে হিসেব কষলে শক্তির বড় তারতম্যে পিছিয়ে চিটাগং। তবে প্রাথমিক পর্বের শেষ ম্যাচে জয়টা তাদের জন্য বড় অনুপ্রেরণা। তাছাড়া এই মুহূর্তে বেশ ফর্মে আছেন খাজা নাফে, পারভেজ হোসেন ইমন ও শামীম হোসেন পাটোয়ারি। যেকোনো একজনই ম্যাচের ফলাফল পাল্টে দিতে পারেন ব্যাট হাতে। এছাড়া পাকিস্তানের অলরাউন্ডার হুসেন তালাত যোগ দিয়ে ভারসাম্য তৈরি করেছেন। বোলিং লাইনে দুই দেশী পারফর্মার ডানহাতি পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ ও বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের সঙ্গে আছেন শ্রীলঙ্কার বিনুরা ফার্নান্দো। স্পিনের শক্তি অফস্পিনার আলিস আল ইসলাম ও বাঁহাতি স্পিনার আরাফাত সানি ব্যাট হাতেও শেষদিকে কার্যকর হতে পারেন সেটি তারা প্রমাণ করেছেন দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে। অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পেসার শন টেইটের কোচিংয়ে এবং মোহাম্মদ মিঠুনের নেতৃত্বে সর্বশেষ কয়েকটি ম্যাচে দুর্দান্ত খেলেছে চিটাগং। আর সে কারণেই তারা এখন ফাইনালে উঠেছে। প্রাথমিক রাউন্ডে দ্বিতীয় স্থান অর্জন করে প্লে-অফে ওঠে তারা। অর্থাৎ প্রাথমিক পর্বের শীর্ষ দুই দলের মধ্যেই হতে যাচ্ছে আজকের ফাইনালটি। এবার উইকেট বেশ ভালো থাকার কারণে ব্যাটিং-বোলিংয়ে প্রায় সব ম্যাচেই ভালো লড়াই হয়েছে। তাই সুযোগ রয়েছে উভয় দলেরই। ২০১৩ সালের দ্বিতীয় আসরে বিপিএল ফাইনাল খেলে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি। সেবারও একই মালিকানায় চিটাগং কিংস হিসেবেই খেলেছে। ১২ বছর পর আবার সেই নামে এবং সেই মালিকানায় ফিরে বিপিএল ফাইনালে উঠে এবার শিরোপা জিততে মরিয়া তারা।