ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৩ মাঘ ১৪৩১

শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে খুলনাকে হারিয়ে ফাইনালে চিটাগং

মোঃ মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ২৩:৩৬, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ে খুলনাকে হারিয়ে ফাইনালে চিটাগং

শ্বাসরুদ্ধকর এক পরিস্থিতি। শেষ কয়েকটি ওভার ম্যাচের ভাগ্য বারবার দিক পাল্টেছে। কখনও মনে হয়েছে চিটাগং কিংস জিতবে, কখনও আবার খুলনা টাইগার্স। হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে তা বোঝাই যাচ্ছিল। কিন্তু সেই লড়াইটা গড়িয়েছে একেবারে শেষ বল পর্যন্ত। নাটকীয়ভোবে শেষ বলে মুশফিক হাসানকে চার হাঁকিয়ে আলিস আল ইসলাম চিটাগং কিংসকে ২ উইকেটের জয় এনে দিয়ে তুলেছেন ফাইনালে। বিদায় নিয়েছে খুলনা টাইগার্স। শুক্রবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি২০ ১১তম আসরের ফাইনালে ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে শিরোপা লড়াইয়ে নামবে চিটাগং। 

২০১৩ সালের দ্বিতীয় আসরে বিপিএল ফাইনাল খেলে বন্দর নগরী চট্টগ্রামের কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি। সেবারও একই মালিকানায় চিটাগং কিংস হিসেবেই খেলেছে। ১২ বছর পর আবার সেই নামে এবং সেই মালিকানায় ফিরে বিপিএল ফাইনালে উঠল।

বুধবার রাতে বিপিএলের দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে এমন রুদ্ধশ্বাস লড়াই হয়েছে। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৬৩ রান তোলে খুলনা। জবাবে শেষ বলে ৪ রানের প্রয়োজন পড়লে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে আলিস চিটাগংয়ের জয় নিশ্চিত করেন। ২০ ওভার শেষে ৮ উইকেটে ১৬৪ রান তোলে চিটাগং। 

টস হেরে আগে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতেই বিপর্যয়ে পড়ে খুলনা। প্রথম থেকে শুধু উইকেটই হারায়নি তারা, পাশাপাশি রানও তুলতে পারেনি। ৮.৫ ওভারে ৪২ রান করতেই ৪ উইকেট খুইয়ে চরম বিপদে পড়ে খুলনা। সেখান থেকে দলকে ভালো অবস্থানে নিয়ে যান শিমরন হেটমায়ার ও মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। 

পঞ্চম উইকেটে অঙ্কন-হেটমায়ার ৭৩ রান যোগ করেন মাত্র ৫০ বল থেকে। এতেই চ্যালেঞ্জিং একটি সংগ্রহের সুযোগ তৈরি হয়। বিপর্যয়ের মুখে আক্রমণাত্মক অঙ্কন দেখেশুনে খেলে ৩২ বলে ১ চার, ৩ ছক্কায় ৪১ রানে বিদায় নেন। 

হেটমায়ার ১৯তম ওভারের শেষ বলে হেটমায়ার ফিরেছেন। তিনি ৩৩ বলে ৬ চার, ৪ ছক্কায় ৬৩ রান করেন। শেষ ওভারে ১৭ রান তুলে ৬ উইকেটে ১৬৩ রানের লড়াকু পুঁজি পায় খুলনা। বিনুরা ফার্নান্দো নেন ২ উইকেট। আলিস আল ইসলাম ৪ ওভারে মাত্র ১৪ রান দিয়ে নেন ১ উইকেট। 

জবাব দিতে নেমে বেশ ভালোভাবেই এগিয়ে যেতে থাকে চিটাগং। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ২ উইকেটে ৪৬ রান তোলে তারা। দুটি উইকেটই নেন ডানহাতি পেসার হাসান মাহমুদ। তবু ১১.৪ ওভারেই চিটাগং করে ফেলে ১০০! 

তৃতীয় উইকেটে খাজা নাফে ও হুসেন তালাত মাত্র ৪৮ বল থেকে ৭৩ রানের জুটি গড়েন। তখন মনে হয়েছে সহজ একটি জয় পেতে চলেছে চিটাগং। কিন্তু নাসুম আহমেদ সাজঘরে ফেরান ২৫ বলে ৫ চার, ১ ছয়ে ৪০ রান করা তালাতকে। 

এরপর দ্রুত সময়ের মধ্যে শামীম হোসেন পাটোয়ারি ৭ বলে ৫, মোহাম্মদ মিঠুন ৮ বলে ৭ ও খালেদ আহমেদ ০ রানে সাজঘরে ফেরেন। এমনকি নাফে ৪৬ বলে ৪ চার, ৩ ছক্কায় ৫৭ রানে সাজঘরে ফিরলে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ পেয়ে যায় খুলনা। কারণ ১১৭ রানেই ৬ উইকেট হারিয়েছে চিটাগং, তখনও ২৭ বলে ৪৮ রান প্রয়োজন তাদের জিততে। 

আর মিঠুন যখন সাজঘরে ফিরেছেন ১৩০ রানে ৭ উইকেট হারানো দলটির দরকার ১৮ বলে ৩৪। সেখান থেকে আরাফাত সানি ১৩ বলে ২ চারে ১৮ এবং আলিস ৭ বলে ২ চার, ১ ছয়ে অপরাজিত ১৭ রান করে দলকে জিতিয়েছেন। 

শেষ ওভারে ১৫ রানের দরকার ছিল। মুশফিক হাসানের প্রথম বলে আরাফাত ও চতুর্থ বলে শরিফুল ইসলাম চার হাঁকিয়েছেন। পঞ্চম বলে শরিফুলকে সাজঘরে ফেরান মুশফিক। তাই শেষ বলে জেতার জন্য ৪ রানের প্রয়োজন হয়। 

এর আগেই আঘাত পেয়ে ব্যাটিংয়ের মাঝে মাঠ ছেড়ে যাওয়া আলিস আবার নেমেছেন শরিফুল আউট হওয়াতে। তিনিই বাউন্ডারি হাঁকিয়ে দলকে অবিশ্বাস্য এক জয় উপহার দেন। হাসান ৪ ওভারে ৩৪ রানে ৩টি, মুশফিক ৩ ওভারে ৩২ রানে ৩টি এবং নাসুম ৪ ওভারে ২১ রানে ২টি উইকেট নেন। তবে তারা খুলনার হার ঠেকাতে পারেননি। বিদায় নিয়েছে তারা কোয়ালিফায়ার থেকে।

নুসরাত

×