বিপিএল প্রাথমিক রাউন্ডের শেষ ম্যাচে বরিশালকে হারিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থেকে শেষ করেছে চিটাগং কিংস
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগে (বিপিএল) ১১তম আসরের প্রাথমিক পর্ব শেষ হয়েছে শনিবার। সন্ধ্যায় ফরচুন বরিশাল ও চিটাগং কিংসের ম্যাচ দিয়ে চূড়ান্ত হয়েছে প্লে-অফ পর্বের সূচি। প্লে-অফ পর্বের প্রথম কোয়ালিফায়ারে শীর্ষে থাকা বরিশাল খেলবে। ৮ জয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থাকায় তাদের প্রতিপক্ষ হবে চিটাগং। অর্থাৎ দুই দলের ফিরতি ম্যাচটি হবে সরাসরি ফাইনালে ওঠার জন্য সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে। আর সেদিনই দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে এলিমিনেটর ম্যাচে পয়েন্ট টেবিলের তিনে থাকা রংপুর রাইডার্স মুখোমুখি হবে খুলনা টাইগার্সের।
শনিবার বরিশালকে ২৪ রানে হারিয়ে দ্বিতীয় স্থানে থেকে লিগ পর্ব শেষ করেছে চিটাগং। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২০৬ রান করে চিটাগং। জবাবে ৭ উইকেটে ১৮২ রান তুলে ২০ ওভার শেষ করে বরিশাল। এই হারের পরও ১২ ম্যাচে ৯ জয়ে ১৮ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষস্থানে থেকেই লিগ পর্ব শেষ করেছে তারা। এদিন দুপুরে খুলনা ৬ উইকেটে ঢাকা ক্যাপিটালসকে হারিয়ে চতুর্থ দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত করে। ছিটকে পড়ে দুর্বার রাজশাহী।
আগে ব্যাট করে ঢাকা ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৩ রান করে। তানজিদ হাসান তামিম ৩৭ বলে ১ চার, ৭ ছক্কায় ৫৮ রান করেন। হাসান মাহমুদ ও উইলিয়াম বোসিস্টো ২টি করে উইকেট নেন। জবাবে ১৬.৫ ওভারে ৪ উইকেটে ১২৮ রান তুলে সহজ জয় পায় চিটাগং। অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ ওপেনিংয়ে নেমে ৫৫ বলে ৫ চার, ৪ ছক্কায় অপরাজিত ৭৪ রানের ইনিংস খেলে দলকে জিতিয়েছেন।
এই জয়ে ১২ পয়েন্ট চারে উঠে আসে খুলনা। রাজশাহী সমান ১২ পয়েন্ট অর্জন করলেও নেট রানরেটে (-১.০৩০) তারা পিছিয়ে পড়ে খুলনার (০.১৮৪) চেয়ে। নিয়ম অনুসারে তাই চতুর্থ স্থানে থাকা খুলনা খেলবে এলিমিনেটর ম্যাচ।
এদিন সন্ধ্যায় বিপিএল রাউন্ড রবিন লিগ পর্বের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয় বরিশাল-চিটাগং। টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২০৬ রানের বিশাল সংগ্রহ গড়ে চিটাগং। ওপেনিং জুটিতেই খাজা নাফে ও পারভেজ হোসেন ইমন ৫৮ রানের জুটি গড়েন। এতেই বড় সংগ্রহের ভিত পেয়ে যায় দলটি। ১৯ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ২২ রানে নাফে বিদায় নেন।
নাফের বিদায়ের পর দ্বিতীয় উইকেটে পারভেজ ও গ্রাহাম ক্লার্ক মাত্র ৩৬ বলে ৭০ রানের জুটি গড়ে চিটাগংকে রকেটের গতি দিয়েছেন। পারভেজ ৪১ বলে ১ চার, ৮ ছক্কায় ৭৫ রান করে সাজঘরে ফেরেন। ক্লার্কও অবশ্য ২১ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় ২৬ রানে আউট হয়েছেন। কিন্তু হায়দার আলী ২৩ বলে ৩ চার, ৩ ছক্কায় অপরাজিত ৪২ এবং শামীম হোসেন পাটোয়ারি ১২ বলে ৩ চার, ২ ছয়ে ৩০ রানের ঝড়ো ইনিংস খেলে অপরাজিত থাকেন। শেষ ৫ ওভারেই আসে ৬০ রান। এতেই বিশাল এই সংগ্রহ দাঁড় করায় চিটাগং। বাঁহাতি স্পিনার তাইজুল ইসলাম ৪ ওভারে ৪৬ রান দিয়ে ২ উইকেট নেন।
জবাব দিতে নেমে ১৩ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বরিশাল। মুশফিকুর রহিমও ২২ বলে ২ চার, ১ ছয়ে ২৪ রানে বিদায় নেন। তখন ৯.৪ ওভারে বরিশালের রান মাত্র ৬৬! চতুর্থ উইকেটে ডেভিড মালান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ মাত্র ২৪ বলে ৫৬ রানের জুটি গড়ে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটিয়েছেন।
মালান ৩৪ বলে ৫ চার, ৬ ছক্কায় ৬৭ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে বিদায় নেন। তখনও জিততে ৩৬ বলে ৮৪ রান দরকার বরিশালের। কিন্তু মাহমুদুল্লাহ শেষ পর্যন্ত টিকে থাকলেও জয় ছিনিয়ে আনতে পারেননি। তিনি ২৬ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ৪১ রান করে অপরাজিত থাকেন। জেমস ফুলার ১১ বলে ২ চার, ১ ছক্কায় ১৮, রিশাদ হোসেন ১০ বলে ১ ছক্কায় ১১ রান করলেও শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেটে ১৮২ রানই করতে পেরেছে বরিশাল।
তাই হার দিয়েই লিগ পর্ব শেষ করে গত আসরের চ্যাম্পিয়নরা। তবে শীর্ষে থেকেই প্রথম কোয়ালিফায়ার খেলার যোগ্যতা অর্জন করেছে তারা। সেখানে আবার তাদের প্রতিপক্ষ থাকবে চিটাগং কিংসই। বিজয়ীরা যাবে সরাসরি ফাইনালে আর পরাজিতরা সুযোগ পাবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ার খেলার। সেখানে তাদের লড়াই হবে রংপুর-খুলনার মধ্যে হওয়া এলিমিনেটর ম্যাচের বিজয়ীদের সঙ্গে।
মামুন/শহীদ