বিপিএলে লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে ঢাকার বিপক্ষে উইকেট লাভের পর বোসিস্টো-মিরাজদের উদযাপন
শেষ পর্যন্ত খুলনা টাইগার্স বড় চ্যালেঞ্জ জয় করল। টানা দুই জয়ে এবার বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি২০ শুরু করে তারা। কিন্তু পরে টানা ৪ ম্যাচ হেরে বিপাকে পড়ে দলটি। সেই ছন্দপতনের পর পারফর্ম্যান্সের ধারাবাহিকতা থাকেনি খুলনা টাইগার্সের। এ কারণে প্লে-অফে ওঠার সমীকরণ কঠিন হয়ে পড়ে তাদের জন্য। শেষ দুটি ম্যাচ না জিতলে কোনোভাবেই সেটি সম্ভব হতো না। সেই চ্যালেঞ্জে জিতেছে খুলনা।
আগের ম্যাচে শক্তিশালী রংপুর রাইডার্সকে হারানোর পর শনিবার দুপুরে ঢাকা ক্যাপিটালসকে ৬ উইকেটে হারিয়ে চতুর্থ দল হিসেবে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে তারা। এদিন মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিজেদের শেষ ম্যাচে মুখোমুখি হয় উভয় দল। প্রাথমিক পর্ব থেকে আগেই ছিটকে যাওয়া নিশ্চিত হওয়া ঢাকা প্রথম ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে মাত্র ১২৩ রান তুলতে সক্ষম হয়।
জবাবে খুলনা ১৬.৫ ওভারে ৪ উইকেট হারিয়ে ১২৮ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয়। এই জয়ে ১২ ম্যাচে ১২ পয়েন্ট নিয়ে নেট রানরেটে (+০.১৮৪) এগিয়ে থাকার সুবাদে দুর্বার রাজশাহীকে পেছনে ফেলে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে খুলনা। রাজশাহী সমান ১২ পয়েন্ট অর্জন করলেও নেট রানরেটে (-১.০৩০) পিছিয়ে থেকে প্রাথমিক পর্ব থেকেই বাদ পড়ল।
বাঁচা-মরার লড়াইয়ে ঢাকার মুখোমুখি হয় খুলনা। টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে ঢাকা। প্রথম থেকেই দুই ওপেনার লিটন কুমার দাস ও তানজিদ হাসান তামিম বেশ দ্রুতগতিতে শুরু করেন। তবে তৃতীয় ওভারেই দলীয় ২৯ রানের সময় বিদায় নেন লিটন (১০ বলে ১০)। তানজিদ দুর্দান্ত ব্যাটিং করলেও অন্যপ্রান্তে ব্যর্থ ছিলেন ব্যাটাররা। হাবিবুর রহমান সোহান (২) দ্রুত আউট হলেও পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে ৫৪ রান তোলে ঢাকা তানজিদের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে।
কিন্তু ১৩তম ওভারে উইলিয়াম বোসিস্টো জোড়া আঘাত হানেন। প্রথম বলেই ফরমানউল্লাহ (৭) সাজঘরে ফেরেন। আর ষষ্ঠ বলে তানজিদ ফিরে যান। তিনি ৩৭ বলে ১ চার, ৭ ছক্কায় ৫৮ রান করেন। এরপরই ধস নামে ঢাকার ইনিংসে। একের পর এক সাজঘরের পথে মিছিল শুরু হয় ঢাকার ব্যাটারদের। ১৩ রানের মধ্যে ৫ উইকেট হারিয়ে চরম বিপাকে পড়ে তারা। শেষদিকে সাব্বির রহমান ও মেহেদি হাসান রানার ২৬ রানের জুটিতে একশ’ পেরিয়েছে ঢাকা। সাব্বির ১৭ বলে ২ চার, ১ ছয়ে ২০ রান করেন।
আর মেহেদি রানা ১১ বলে ১ চার, ১ ছয়ে ১৩ রান করেন। শেষ পর্যন্ত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২৩ রান করতে সক্ষম হয় ঢাকা। ডানহাতি পেসার হাসান মাহমুদ ৪ ওভারে ১ মেডেনে মাত্র ৫ রান দিয়ে এবং বোসিস্টো ৪ ওভারে ১০ রানে ২টি করে উইকেট নেন।
জবাব দিতে নেমে ১৪ রানেই দুই উইকেট হারায় খুলনা। মোহাম্মদ নাইম শেখ ও আফিফ হোসেন ধ্রুব উভয়ে শূন্য রানে সাজঘরে ফেরেন। আরেক ওপেনার মেহেদি হাসান মিরাজ অধিনায়কোচিত ইনিংস উপহার দিয়েছেন। তিনি তৃতীয় উইকেটে মাত্র ৪২ বল থেকে ৬৮ রানের জুটি গড়েন অ্যালেক্স রসের সঙ্গে। এই জুটিতেই জয়ের ভিত পেয়ে যায় খুলনা। তবে রসও ১৯ বলে ৩ চারে ২২ রানে সাজঘরে ফেরেন।
বোসিস্টোর সঙ্গে মিরাজ চতুর্থ উইকেটে ৩৮ রানের আরেকটি জুটি গড়ে দলকে জয়ের কাছে নিয়ে যান। মিরাজ ৩৩ বলে ফিফটির পরও থামেননি। তবে বোসিস্টো ২০ বলে ১ চারে ১৮ রানে আউট হয়ে যান। মিরাজের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ১৯ বল বাকি থাকতেই জিতে যায় খুলনা ৪ উইকেটে ১২৮ রান তুলে। মিরাজ ৫৫ বলে ৫ চার, ৪ ছক্কায় ৭৪ রানে অপরাজিত থাকেন।
ঢাকার হয়ে বাঁহাতি পেসার মুস্তাফিজুর রহমান ৪ ওভারে ১৬ রান দিয়ে নেন ৩ উইকেট। এই জয়ে সর্বশেষ দল হিসেবে বিপিএলের প্লে-অফ নিশ্চিত করে খুলনা। আর সে কারণে ছিটকে যায় রাজশাহী। ঢাকাও শেষ করেছে এবারের মতো বিপিএল অভিযান। ১২ ম্যাচে ৯ হারে ৬ পয়েন্ট নিয়ে ষষ্ঠ স্থানে থেকে প্রাথমিক পর্ব থেকেই বিদায় নিয়েছে দলটি।