ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১

সেরা চারের স্বপ্ন বুনছে খুলনা টাইগার্স, টানা চার হার রংপুর রাইডার্সের

নাঈমের সেঞ্চুরি, জমে উঠেছে প্লে-অফের সমীকরণ

মো. মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ০০:১৬, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫

নাঈমের সেঞ্চুরি, জমে উঠেছে প্লে-অফের সমীকরণ

বিপিএলে নিজের প্রথম সেঞ্চুরি উদযাপন খুলনার ওপেনার মোহাম্মদ নাঈম শেখের

আগেই প্লে-অফ লড়াই থেকে ছিটকে গেছে সিলেট স্ট্রাইকার্স ও ঢাকা ক্যাপিটালস। পেন্ডুলামে ঝুলছে খুলনা টাইগার্সের ভাগ্য। সেজন্য বৃহস্পতিবার শক্তিশালী রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে জিততেই হতো তাদের। সেই কাক্সিক্ষত জয় পেয়েছে তারা চলতি আসরের দ্বিতীয় সর্বাধিক সংগ্রহ গড়ে। মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠিত দুপুরের ম্যাচে তারা ৪৬ রানের বড় ব্যবধানে হারিয়েছে রংপুরকে। আগে ব্যাট করে নাইম শেখের করা ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরিতে ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ২২০ রান তোলে খুলনা। নাইম করেন ৬২ বলে ৭ চার, ৮ ছক্কায় ১১১ রান।

জবাবে রংপুর নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭৪ রান করতে পেরেছে। এই জয়ের ফলে ১১ ম্যাচে ১০ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফ রেসে ভালোভাবেই টিকে আছে খুলনা। শেষ ম্যাচে ঢাকা ক্যাপিটালসকে হারাতে পারলেই সমান ১২ পয়েন্ট অর্জন করা দুর্বার রাজশাহীকে পেছনে ফেলে প্লে-অফ নিশ্চিত করবে তারা। এদিন রাতের ম্যাচে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে হারাতে পারলে তৃতীয় দল হিসেবে প্লে-অফে উঠবে।
বাঁচা-মরার লড়াইয়ে রংপুরের বিপক্ষে টস জিতে আগে ব্যাটিংয়ে নামে খুলনা। নাইম শেখের সঙ্গে অধিনায়ক মেহেদি হাসান মিরাজ বেশ দ্রুতগতিতেই শুরু করেন। তবে ১২ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় ২১ রানে বিদায় নেন মিরাজ উদ্বোধনী জুটিতে ৩২ রান যোগ করে। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ১ উইকেটে ৫১ রান তুলে ভালো সূচনাই পায় খুলনা। দ্বিতীয় উইকেটে নাইমের সঙ্গে আরও ২৯ রান যোগ করে সাজঘরে ফেরেন অ্যালেক্স রস (১২)। তবে থামেননি নাইম। এদিন দুর্দান্ত ব্যাটিং করছিলেন তিনি।

তৃতীয় উইকেটে উইলিয়াম বোসিস্টোর সঙ্গে ৪৫ বলে ৮৮ রানের জুটি গড়েছেন নাইম। ৩৩ বলে ফিফটি পেয়ে যান এ বাঁহাতি ওপেনার। বোসিস্টো ২১ বলে ৩ চার, ২ ছয়ে ৩৬ রানে সাজঘরে ফেরেন। তখনো নাইম দ্রুতবেগে ব্যাট চালিয়েছেন। পরবর্তী ২২ বলেই তিনি আরও ৫০ রান করেছেন। শেষ পর্যন্ত স্বীকৃত টি২০ ক্যারিয়ারে দ্বিতীয় সেঞ্চুরির দেখা পেয়ে যান নাইম মাত্র ৫৫ বলে। এর আগে বঙ্গবন্ধু টি২০ আসরেও সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি।

তবে বিপিএলে করলে প্রথম শতক। এই সেঞ্চুরিতে এবারের আসরে সর্বাধিক ৪৪৪ রান করে সবার ওপরে নাইম। চলতি আসরে এটি অষ্টম সেঞ্চুরি, যার মধ্যে ৪টিই কোনো বাংলাদেশী ক্রিকেটারের। তার সঙ্গে মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ঝড় তোলেন। এতেই শেষ ৫ ওভারে ৭১ রান যোগ করেছে খুলনা। 
২০ ওভার শেষে ৪ উইকেটে ২২০ রান তোলে খুলনা। ৬২ বলে ক্যারিয়ারসেরা ১১১ রানে অপরাজিত থাকেন নাইম। অঙ্কন ১৫ বলে ৩ চার, ১ ছয়ে করেন হার  না মানা ২৯ রান। এটি চলতি আসরে কোনো দলের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ দলীয় সংগ্রহ। ঢাকা ক্যাপিটালস ১ উইকেটে ২৫৪ রান করে দুর্বার রাজশাহীর বিপক্ষে যা বিপিএল ইতিহাসেই আজ পর্যন্ত সর্বোচ্চ দলীয় রান। রংপুরের হয়ে শেখ মেহেদি হাসান, আকিফ জাভেদ ইফতিখার আহমেদ ১টি করে উইকেট নেন।

জবাব দিতে নেমে রংপুর ৫ ওভারে ৩৬ রানেই ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে। তবে সৌম্য সরকার দুর্দান্ত ব্যাটিং করছিলেন। খুলনার বোলারদের বিপক্ষে একাই লড়াই চালিয়ে গেছেন তিনি। অপরপ্রান্তে তাকে সেভাবে কেউ সহায়তা দিতে পারেননি। ১৪ বলে ২ চার, ২ ছক্কায় ২৭ রান করে কিছুটা সঙ্গ দিতে পেরেছেন শেখ মেহেদি। তবে তা যথেষ্ট হয়নি অন্যদের ব্যর্থতায়। সৌম্যও ৪৮ বলে ৬ চার, ৫ ছক্কায় ৭৪ রানে সাজঘরে ফিরলে রংপুরের জয়ের আশা শেষ হয়ে যায়।

শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭৪ রান করতে পেরেছে রংপুর। হুট করে দল পাওয়া ডানহাতি পেসার মুশফিক হাসানই খুলনার হয়ে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন। ৪ ওভারে মাত্র ২৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন তিনি। মোহাম্মদ নওয়াজ ১ ওভারে ৮ রান দিয়ে নেন ২ উইকেট। এ ছাড়া দারুণ মিতব্যয়ী বোলিং করেছেন ডানহাতি পেসার হাসান মাহমুদ। ৪ ওভারে ২০ রান দিয়ে ১ উইকেট নেন তিনি। ফলে রংপুর টানা ৪ ম্যাচে হার দেখল। আর খুলনা বাঁচিয়ে রাখল প্লে-অফে ওঠার আশা।

×