ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ৩১ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১

বাটলারকে নিয়ে নারী ফুটবলারদের বিস্ফোরক মন্তব্য

স্পোর্টস রিপোর্টার 

প্রকাশিত: ২১:৫১, ৩০ জানুয়ারি ২০২৫

বাটলারকে নিয়ে নারী ফুটবলারদের বিস্ফোরক মন্তব্য

সংবাদ সম্মেলনে কথা বলছেন জাতীয় নারী ফুটবল দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন (মাঝে)। ছবি : সংগৃহীত

ইংলিশ কোচ পিটার বাটলার বহাল তবিয়তে থাকলে অনুশীলন বয়কট তো বটেই, এমনকি গণপদত্যাগ করবেন বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের ১৭ সিনিয়র ফুটবলার। আজ বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকেলে সাফজয়ী এই ফুটবলাররা বাফুফে ভবনের নিচে এসে নিজেদের কথা মিডিয়ার কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে তুলে ধরেন। 

 

মারিয়া মান্দা: আমরা যদি শৃঙ্খলাভঙ্গ করতাম তাহলে এত বছর ধরে বয়সভিত্তিক, জাতীয় দলে খেলে আসতে পারতাম না। 

কৃষ্ণা রানী সরকার: আমরা মাঠে খুবই মানসিক চাপে থাকি। বিশেষ করে উনি হচ্ছে আমাদের অঙ্গভঙ্গি ... খুব সকালে উঠতে হয় আমাদের, একটু ক্যাজুয়াল থাকতেই পারি। কিন্তু উনি আমাদের নিয়ে কটূক্তি করেন। যেটার কারণে আমরা আপসেট হয়ে যাই। এখন আমরা সভাপতির সঙ্গে বসতে চাই। আমাদের সমস্যা কিন্তু সাফের আগেই থেকে চলছিল। এটা নিয়ে আমাদের কিরণ আপা ও সাবেক প্রেসিডেন্টকে বলা হয়েছে। সাফে যাওয়ার আগে বলেছিল, কোচ চেঞ্জ করা হবে। এখানকার স্থানীয় কোচেরা সবই জানে, কিন্তু এখন মুখ খুলছে না। এখন আমাদের যদি খেলা ধরে রাখতে হয় তাহলে এই কাজ ছাড়া উপায় নেই।

ঋতুপর্ণা চাকমা: আমরা এখন বড় হয়েছি। ছুটির দিনে ঘুরতে যেতেই পারি। কোথায় গেলাম, কার সঙ্গে কফি খেলাম এসব নিয়েও সে আমাদের চাপে রাখে।

সাবিনা খাতুন: একটা বিষয়ই বলার, নিজেদের প্রমাণের কিছু নেই। ব্যাপারটা আত্মসম্মানের। আমরা দেশের জন্য খেলি। সেই তাদের নিয়ে কটূক্তি করছে, মেয়েদের জন্য এটা অসম্ভব। পেশাদারিত্ব আমাদের ধর্ম। এটা আমাদের মেনে চলতেই হবে। ব্যাপার হচ্ছে, মেয়েদের প্রমাণ করার কিছু নেই। সবকিছু বলে বলে বোঝানো যায় না। আমরা কিছু একটা নিয়ে বারবার অভিযোগ করছি বিধায় কিছু একটা আছে সেখানে। আমরা এই জায়গায় কমফোর্টেবল না। উনি প্রোফাইল ভারি কোচ সেটা নিয়ে সন্দেহ নেই। খেলোয়াড়ি জীবন লম্বা। সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ৮-৬ গোলে জিতলাম তখন দেশের কোচকে সেরা বলা হয়নি। আমি বিগত কোচদের নিয়ে বলবো না কারণ উনাদের নিয়ে অনেক কন্ট্রোভার্সি। মেয়েরা এখন যে অবস্থায় আছে সেটার সবচেয়ে বড় অবদান ফেডারেশনের। দশ বছর একসঙ্গে রাখার কারণেই সাফল্য এসেছে।

এতটুকু বলতে পারি, দক্ষিণ এশিয়ায় যে কাউকে ডাগআউটে বসিয়ে দিলে মেয়েরা রেজাল্ট নিয়ে আসবে। আমাদের একটা জিনিস বোঝা উচিত, এই মেয়েরা দেশের সম্পদ। এখন গণমাধ্যম, সামাজিক মাধ্যমে যা লেখা হচ্ছে সেটা আমরা ডিজার্ভ করি কিনা তা আমি জানি না। এরপরও দেশের মানুষ সবার আগে। তারা যদি মনে করে, আমরা সিন্ডিকেট করছি, দেশের ফুটবল নষ্ট করছি তাহলে আমরা দেশের মানুষের জন্য তারা যা চায় আমরা সেটাই করবো।
অবশ্যই ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির সঙ্গে বসতে চাই। এই একটা বিষয় নিয়ে ফেডারেশনে হট্টগোল হোক সেটা চাই না। ফুটবল হচ্ছে সবার প্রাণের খেলা, সবাই ভালবাসে। আমরা চাই না এটার ওপর সমস্যা আসুক, আমরা চাই সুস্থ সমাধান। কারণ দুইবার সাফ এসেছে এটার মানে যদি মনে হয় ফানি কিছু, তাহলে বলার কিছু নেই। এটা আসলে আমাদের স্বপ্ন। দেশবাসীর কাছে আমরা কৃতজ্ঞ যে তারা আমাদের সমর্থন দেয়। 

আপনাদের কাছে কী মনে হয়, কোচ এবং আমাদের উভয় দিকে কি সফট কর্নার থাকবে? অবশ্যই থাকবে না। আমরা কোচকে সম্মান জানিয়ে নিজেদের সম্মান নিয়ে এখান থেকে যেতে চাই।

মাসুরা পারভীন: আমরা একবারও বলিনি অনুশীলন করবো না। আমরা বলেছি, ওই কোচের (বাটলার) সঙ্গে অনুশীলন করবো না। আমরা বলেছিলাম, ওনার শিডিউলে অনুশীলনটা দেশি কোচরা করাক। উনি যেহেতু আসছে, বিশ্রামে থাকুক। সভাপতি ফিরলে আমরা আলোচনায় বসবো। 

আমরা যেহেতু ফেসবুকে অ্যাক্টিভ থাকি, আমাদের কাছে ফোন থাকে। আমাদের কারও কাছে প্রমাণের, বলার কিছু নেই। আমরা ইতোমধ্যে সিদ্ধান্ত জানিয়েছি, এই কোচের অধীনে অনুশীলন করবো না। এতকিছু ভেঙে বলা সম্ভব না। এই কোচের সঙ্গে কাজ করবো না। কোচ বদলালে আমরা অনুশীলন করবো।  
 

রুমেল খান/ তাবিব

×