ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ৩০ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭ মাঘ ১৪৩১

সুমাইয়াদের সান্ত¡নার জয় জ্বলতে পারেননি জ্যোতিরা

শাকিল আহমেদ মিরাজ

প্রকাশিত: ০০:২৩, ২৯ জানুয়ারি ২০২৫

সুমাইয়াদের সান্ত¡নার জয় জ্বলতে পারেননি জ্যোতিরা

নারী টি২০ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে সাফল্যের উচ্ছ্বাস বাংলাদেশের মেয়েদের

গ্রুপ পর্বে দারুণ ক্রিকেট খেলে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি২০ বিশ্বকাপের সুপার সিক্সে জায়গা করে নিয়েছিল বাংলাদেশ। সেখানে প্রথম ম্যাচেই পরাশক্তি ভারতের কাছে বড় হারে শুরুতেই সেমির স্বপ্ন শেষ হয়ে যায় কিশোরীদের। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ম্যাচটা হয়ে ওঠে কেবলই আনুষ্ঠানিকতার। যেখানে ১০ উইকেটের সান্ত¡নার জয়ে অভিযান শেষ করল সুমাইয়া আক্তারের দল।

মঙ্গলবার দুপুরে কুয়ালালামপুরে ১৩ ওভারে ৬ উইকেটে মাত্র ৫৪ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ অনূর্ধ্ব-১৯ দল। জবাবে ৮.৫ ওভারে কোনো উইকেট না হারিয়ে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ (৫৫/০)। ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা নিশিতা আক্তার নিশি। আর সকালে সেন্ট কিটসে সিরিজের প্রথম টি২০তে ৮ উইকেটে হারে বড়রা।

অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতির (৪০ বলে অপরাজিত ৫৩) হাফ সেঞ্চুরিতে ৩ উইকেটে ১৪৪ রান করে বাংলাদেশ। জবাবে হেইলি ম্যাথুস (৫৪ বলে অপরাজিত ৬০) ও ম্যাচসেরা দিয়েন্দ্রা দোতিনের (২২ বলে অপরাজিত ৫১) ঝড়ো দুই ফিফটিতে ১৬.৫ ওভারে ২ উইকেট হারিয়ে জয় তুলে নেয় উইন্ডিজ। 
কুয়ালালামপুরে বৃষ্টিতে ১৩ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে বোলাররাই বাংলাদেশের জয়ের ভিত গড়ে দেয়। নতুন বলে ৩ উইকেট নিয়ে ক্যারিবিয়ানদর বড় স্কোরের সম্ভাবনা শেষ করে দেন অফ স্পিনার নিশি। ছয়ে নেমে ২৩ বলে ১৬ রান করে দলকে কোনোরকমে পঞ্চাশ পার করান আমৃতা রামতাহাল।  ছোটদের ব্যাটিংয়ের যে দুর্দশা, এই লক্ষ্য তাড়া করা নিয়েও সংশয়ের জায়গা ছিল। তবে এ দিন আর ভুগতে হয়নি।

বরং উদ্বোধনী জুটিই দলকে জিতিয়ে দেয় ২৫ বল বাকি রেখে। টুর্নামেন্টে প্রথমবার ওপেন করে ২৮ বলে ২৫ রানে অপরাজিত থাকেন কিপার-ব্যাটার জুয়াইরিয়া ফেরদৌস। সেমিতে উঠতে না পারলেও বিশ্বকাপে আশাজাগানিয়া ক্রিকেট খেলে সুমাইয়ারা। গ্রুপ পর্ব ও সুপার সিক্স মিলিয়ে পাঁচ ম্যাচের তিনটিতেই জয় পায় তারা। হারে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে।

ওদিকে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে প্রথম ওয়ানডেতে হারলেও দ্বিতীয় ম্যাচে জিতে সিরিজ জয়  এবং সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা তৈরি করেও পারেনি জাতীয় দল। ব্যাটিং ব্যর্থতায় জ্যোতিরা হারে ২-১ ব্যবধানে। এদিন প্রথম টি২০তে উল্লেখযোগ্য স্কোর গড়ে প্রতিপক্ষকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে  দিতে পেরেছিল বাংলাদেশ।

সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে ২০ ওভারে তোলে ১৪৪ রান। ৪০ বলে ৫ চার ও ২ ছক্কায় ৫৩ রানে অপরাজিত থাকেন অধিনায়ক জ্যোতি। কিন্তু হেইলি ম্যাথিউসের ফিফটি ও ডটিনের রেকর্ড-গড়া ফিফটিতে ক্যারিবিয়ানরা স্রেফ তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছে চ্যালেঞ্জ। 
ব্যাটিং সহায়ক উইকেটে রান তাড়ায় ক্যারিবিয়ানরা জিতে যায় ১৯ বল বাকি রেখে। অধিনায়ক ম্যাথুস অপরাজিত থাকেন ৬০ রানে। তবে বাংলাদেশের বোলিং পিষ্ট করেন দোতিন। ২২ বলে ৫১ রানে অপরাজিত থাকেন অভিজ্ঞ অলরাউন্ডার। কোনো বাউন্ডারি মারেননি তিনি, কিনতু ছক্কা হাঁকিয়েছেন ৭টি! নিজের রেকর্ড ছাড়িয়ে ফিফটিতে পা রাখেন তিনি ২১ বলে।

উইমেন’স টি২০তে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড এটি। ২২ ও ২৫ বলের ফিফটিতে রেকর্ডের পরের দুটি নামও তারই। ৩৩ বছর বয়সী অলরাউন্ডার বল হাতে উইকেট না পেলেও ৪ ওভারে রান দেন মাত্র ১৩। এদিকে ওয়ানডে সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে উইকেট নিয়ে র‌্যাঙ্কিংয়ে উন্নতি করেছেন নাহিদা আক্তার। ওয়ানডেতে বোলারদের তালিকায় সেরা দশে ফিরেছেন বাঁহাতি স্পিনার।

যেখানে ওয়ানডে বোলারদের মধ্যে ১০ নম্বরে আছেন নাহিদা। ক্যারিবিয়ানদের বিপক্ষে দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ৩১ রানে ৩ উইকেট নেন তিনি। তৃতীয় ও শেষ ম্যাচে ২৫ রানে তার শিকার একটি। 
এই পারফরম্যান্সে এক ধাপ উন্নতি করেছেন তিনি। ব্যাটারদের মধ্যে অগ্রগতি হয়েছে জ্যোতি ও শারমিন আক্তারের। ওয়ানডে সিরিজের শেষ দুই ম্যাচে ৬৮ ও ১১ রান করেন। তাতে ৪ ধাপ এগিয়ে ব্যাটারদের মধ্যে ৩২ নম্বরে বাংলাদেশ অধিনায়ক।

×