হ্যাটট্রিকসহ ৬ উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মুলতানে দ্বিতীয় টেস্টের প্রথম দিনের নায়ককে ঘিরে সতীর্থদের এমন উদযাপন
মাত্র আড়াই দিনেই প্রথম টেস্ট জয়ের পর মুলতানে ফয়সালার দ্বিতীয় টেস্টেও স্পিনের ফাঁদ পেতে মাঠে নামে পাকিস্তান। ইতিহাস গড়া হ্যাটট্রিকে ক্যারিবীয়দের নাড়িয়ে দেন নুমান আলি। টেল-এন্ডারদের দৃঢ়তায় সেই ধাক্কা সামলে প্রথম ইনিংসে গুটিয়ে যাওয়ার আগে ৪১.১ ওভারে ১৬৩ রান করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কে ভেবেছিল দিনটা শেষ পর্যন্ত তাদেরই হবে? নিজেদের ফাঁদেই ফেসে গেছে পাকিস্তান! ৪৭ ওভারে ১৫৪ রানে অলআউট স্বাগতিকরা শনিবার প্রথম দিন শেষে পিছিয়ে ৯ রানে।
শান মাসুদের দল আজ দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করবে। প্রথমে ব্যাটিং করে দুইশর আগে অলআউট হওয়ার পরও নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এনিয়ে চতুর্থবার লিড নিতে পারল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সবশেষটি ২৭ বছর আগে, ১৯৯৮ সালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। মুলতান ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এদিন পড়া ২০ উইকেটও একটি রেকর্ড। এশিয়ার কোনো দেশে এর আগে কখনো টেস্টের প্রথম দিনে এত উইকেট পড়েনি।
লাঞ্চের আগেই ১২তম ওভারের প্রথম তিন বলে জাস্টিন গ্রেভস, টেভলিন ইমলাস ও কেভিন সিনক্লেয়ারকে আউট করে হ্যাটট্রিক পূর্ণ করেন বাঁহাতি নুমান। পঞ্চম পাকিস্তানি এবং দেশটির প্রথম স্পিনার হিসেবে ৩৮ বছর বয়সী নুমান এ কীর্তি গড়লেন। আগের চারজনই ছিলেন পেসার। পাকিস্তানের মাটিতে সর্বশেষ হ্যাটট্রিক দেখা গিয়েছিল ২০২০ সালে।
পিন্ডিতে বাংলাদেশের বিপক্ষে টানা তিন বলে উইকেট নিয়েছিলেন নাসিম শাহ। অন্য চার হ্যাটট্রিকের দুটিই গ্রেট ওয়াসিম আকরামের, দুটিই ১৯৯৯ সালে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। এশিয়ান টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে ৬ মার্চ লাহোরের পর ১৪ মার্চ ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে হ্যাটট্রিক করেন তিনি। অন্য দুটি আবদুর রাজ্জাক (২০০০) ও মোহাম্মদ সামির (২০০২)। এ দুটি ম্যাচের প্রতিপক্ষও ছিল শ্রীলঙ্কা।
একটুর জন্য আরেকটি বিশ্বরেকর্ড হয়নি নুমানের। ৩৮ বছর ১১০ দিন বয়সে হ্যাটট্রিক করলেন তিনি। তার চেয়ে বেশি বয়সে এই কীর্তি আছে টেস্ট ইতিহাসে কেবল একজনেরই। ২০১৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে শ্রীলঙ্কার বাঁহাতি স্পিন গ্রেট রঙ্গানা হেরাথ হ্যাটট্রিক করেছিলেন ৩৮ বছর ১৩৯ দিন বয়সে। ক্যারিবিয়ান ব্যাটিং ধসিয়ে দেওয়ার পথে এদিন ৪১ রানে ৬ উইকেট নেন নুমান।
টেস্টে এনিয়ে অষ্টমবার ইনিংসে পাঁচ শিকার ধরলেন তিনি। টানা ৫ টেস্টে দেখালেন ৫ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব। সাজিদ খান নিয়েছেন ২ উইকেট। ৩৮ রানে ৭ নউইকেট হারানোর পরও উইন্ডিজের দেড়শ’ ছাড়ানো স্কোরের রূপকার তিন টেল এন্ডার গুদাকেশ মোতি (৮৭ বলে ৫৫) কেমার রোচ ( ৪৫ বলে ২৫) ও জোমেল ওয়ারিক্যান (৪০ বলে অপরাজিত ৩৬)।
টেস্টে কোনো দলের ইনিংসে সর্বোচ্চ তিনটি স্কোরই শেষের তিন ব্যাটসম্যানেরÑএটি একটি রেকর্ড। তবে প্রথম নয়, দ্বিতীয়। আগের রেকর্ডটিও ওয়েস্ট ইন্ডিজেরই। মুলতানে সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে দলের সর্বোচ্চ তিনটি ইনিংস ছিল ৯, ১০ ও ১১ নম্বরে নামা মোতি, ওয়ারিক্যান ও জেডন সিলসের।
পরে ক্যারিবিয়ান তিন বোলার মিলে পাকিস্তানের ব্যাটিংয়ে ধস নামান। মোহাম্মদ রিজওয়ান ৪৯, সাউদ শাকিল ৩২ ও কামরান গুলাম করেন ১৬ রান। ৪৩ রানে ৪ উইকেট নিয়ে উইন্ডিজের সেরা বোলার বাঁহাতি স্পিনার জোমেল ওয়ারিক্যান। গুদাকেশ মোতি নেন ৩ উইকেট।