দীর্ঘ অপেক্ষার পর জীবনের প্রথম কোনো গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট জয়। স্বপ্নের সেই ট্রফিতে চুমো এঁকেই ফ্রেমবন্দি করে রাখলেন ম্যাডিসন কিস
পারলেন না এরিনা সাবালেঙ্কা। বেলারুশ সুন্দরীকে হতাশায় ডুবিয়ে জীবনের প্রথম গ্র্যান্ডস্লাম টুর্নামেন্ট জয়ের স্বাদ পেলেন ম্যাডিসন কিস। শনিবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ফাইনালে আমেরিকার ম্যাডিসন কিস ৬-৩, ২-৬ এবং ৭-৫ গেমে পরাজিত করেন এরিনা সাবালেঙ্কাকে। আর তাতেই অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের নতুন রানীর মুকুট পরেন কিস। সেইসঙ্গে ১৪ বছরের চেষ্টায় প্রথম মেজর শিরোপায় চুমো আঁকলেন ২৯ বছর বয়সী এই তারকা।
অথচ, এবার মেয়েদের এককে হট ফেভারিটের ট্যাগ গায়ে মাখানো ছিল এরিনা সাবালেঙ্কার। কেননা, গত দুই বছরই যে মেলবোর্নের শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়েছিলেন তিনি। এবার জিতলে নতুন মাইলফলকের হাতছানি ছিল তার। দীর্ঘ ২৬ বছরের মধ্যে প্রথম খেলোয়াড় হিসেবে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে টানা হ্যাটট্রিক শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়ার সুযোগ ছিল তার। কিন্তু কিসের কাছে হেরে মার্টিনা হিঙ্গিসের সেই কীর্তি ছোঁয়ার সুযোগ হারান সাবালেঙ্কা। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের নারী এককে সর্বশেষ হ্যাটট্রিক শিরোপা জিতেছিলেন সুইস তারকা হিঙ্গিস।
তবে সাবালেঙ্কাকে হারানোটা মোটেও সহজ ছিল না সাবালেঙ্কার। ২ ঘণ্টা ২ মিনিটের লড়াইয়ের পরই মেলবোর্নের হাসি হাসেন কিস। শীর্ষ বাছাই সাবালেঙ্কাকে হারানো কিস ছিলেন এবারের অস্ট্রেলিয়ান ওপেনের ১৯তম বাছাই। শুরু থেকেই দুর্দান্ত খেলেন তিনি। সেমিফাইনালে দ্বিতীয় বাছাই ইগা সুইয়াটেককে হারিয়ে ফাইনালে ওঠা কিস প্রথম সেটটি জিতেন ৬-৩ গেমে।
তথাপি হাল ছাড়েননি বেলারুশ সুন্দরী। টানা দুবারের চ্যাম্পিয়ন সাবালেঙ্কা দ্বিতীয় সেটেই দুর্দান্তভাবে ঘুরে দাঁড়ান। কিসকে ৬-২ গেমে গুঁড়িয়ে দিয়ে হ্যাটট্রিকের স্বপ্নে রং চড়ান তিনি। কিন্তু রোমাঞ্চকর তৃতীয় সেট শেষে শেষ হাসিটা হাসলেন কিসই। শেষ পয়েন্টটা পেয়েই মুখ ঢেকে ফেলা কিস একটু পরেই ছুটে গেলেন তার স্বামী বিওর্ন ফ্রাতাঞ্জেলোর কাছে। ২০২৩ সাল থেকে যিনি কিনা আবার কিসের কোচও।
অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে ১৯তম বাছাই হলেও ডব্লিউটিএ র্যাঙ্কিংয়ে কিস বিশ্বের ১৪ নম্বর খেলোয়াড়। এর আগে ২০১৭ সালে ইউএস ওপেনের ফাইনাল খেলেছিলেন তিনি। কিন্তু সেবার ঘরের মাঠে স্বদেশী স্লোয়ানে স্টিফেন্সের কাছে হেরে স্বপ্নভঙ্গের বেদনা নিয়ে কোর্ট ছেড়েছিলেন। সেই কিস এবার সেমিফাইনালে দ্বিতীয় বাছাই আর ফাইনালে শীর্ষ বাছাইকে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেন। সেইসঙ্গে ২০০৫ সালের পর অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে শীর্ষ দুই বাছাইকে হারানোর কীর্তিও গড়েন কিস।
প্রথম মেজর শিরোপা জয়ের আনন্দে উদ্বেলিত আমেরিকান তারকা। ম্যাচের শেষে ম্যাডিসন কিস বলেন, ‘দীর্ঘ সময় ধরেই এটা চেয়েছিলাম আমি। যদিওবা আমি কখনোই জানতাম না যে আবারও এই অবস্থানে আসতে পারবো।’
এদিকে, হ্যাটট্রিকের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হয়ে গেলেও প্রতিপক্ষকে কৃতিত্ব দিতে মোটেও ভুল করেননি সাবালেঙ্কা। তিনি বলেন, ‘অবিশ্বাস্য খেলেছে ম্যাডিসন। তার বিপক্ষে আসলে আমি কিছুই করতে পারিনি। তবে পরেরবার যখন আমি ম্যাডিসনের বিপক্ষে খেলব তখন অবশ্যই আরও ভালো টেনিস খেলার চেষ্টা করব।’