.
বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএলে) চট্টগ্রাম পর্ব শেষে জমে উঠেছে প্লে-অফে ওঠার লড়াই। ‘নাম্বার ওয়ান’ রংপুর রাইডার্স বাদে শীর্ষ চারের বাকি তিনটি পজিশনের দৌড়ে থাকছে পাঁচটি দল। যেখানে সবচেয়ে এগিয়ে ফরচুন বরিশাল এবং চিটাগং কিংস, খুলনা টাইগার্স আর দুর্বার রাজশাহীও খুব একটা পিছিয়ে নেই। এমনকি ঢাকাও আশা ছাড়ছে না। ৯ ম্যাচে ৮ জয়ে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে সবার আগে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে নুরুল হাসান সোহানের রংপুর। ৮ ম্যাচে ৬ জয়ে ১২ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দুইয়ে তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল। ৯ ম্যাচে ৫ জয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তিনে মোহাম্মদ মিথুনের চিটাগং কিংস। সমান ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট মেহেদি হাসান মিরাজের খুলনার। ১০ ম্যাচে ৮ পয়েন্ট নিয়ে পাঁচে রাজশাহী। দুর্দমনীয় রংপুরকে প্রথম হারের স্বাদ উপহার দিয়েছে তাসকিন আহমেদের দল। ৬ পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে ঢাকা ক্যাপিটালস। ২ জয়ে তলানিতে সিলেট স্ট্রাইকার্স।
রবিবার বরিশাল-সিলেট ম্যাচ দিয়ে ঢাকায় শুরু শেষ পর্বের চূড়ান্ত লড়াই। দিনের দ্বিতীয় ম্যাচে মুখোমুখি হবে রাজশাহী ও রংপুর। শীর্ষে থাকা রংপুর নিশ্চিত করেছে প্লে-অফ। বাকি ৩ ম্যাচের একটিতে জিতলে নিশ্চিত হবে শীর্ষ দুইয়ে থাকা। অর্থাৎ, আর একটি জয় পেলেই কোয়ালিফায়ার খেলবে সোহানের দল। সেক্ষেত্রে প্রথমটায় হারলেও থাকবে দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারের সুযোগ। দুইয়ে থাকা বরিশালের জন্য এখনো নিশ্চিত নয় প্লে-অফের জায়গা। তবে সবচেয়ে কম ম্যাচ খেলা তামিম ইকবালদের দরকার ৪ ম্যাচে মাত্র এক জয়। টপ ফোরের সমীকরণে তিন নম্বরে থাকা চিটাগং কিংসের সুযোগ সবচেয়ে বেশি। দুটি জয়ে মোহাম্মদ মিথুনদের নিশ্চিত হবে প্লে-অফ। এক জয়েও সুযোগ থাকবে, তবে দেখতে হবে হিসাব-নিকাশ। তাদের পরের তিন ম্যাচ রংপুর, সিলেট আর বরিশালের বিপক্ষে। চট্টগ্রাম পর্বের শেষদিনে রাজশাহী আর খুলনার জয় বিপদে ফেলে দিয়েছে ঢাকাকে। ঐ দুই দলই যেন পরের তিন ম্যাচ হারে, এমনটা প্রত্যাশা করবে শাকিব খানের দল। তবে প্রতিপক্ষ হারলেই হবে না, শেষ দুই ম্যাচের দুটিতেই জিততে হবে লিটন দাস-মুস্তাফিজুর রহমানদের। ৯ ম্যাচের ৭টিতে হেরে তলানিতে থাকা সিলেটের বিদায় অনেকটাই নিশ্চিত। সিলেটকে হারিয়ে শীর্ষ চারে জায়গা ফিরে পাওয়ার পর প্লে-অফের স্বপ্ন দৃঢ় হয়েছে খুলনার। অধিনায়ক মিরাজের কণ্ঠে প্রত্যয় জানান,‘তারপরও শীর্ষ চারে আছি। ঢাকায় যেহেতু তিনটা ম্যাচ আছে, এর মধ্যে দুটি ম্যাচ খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই দুটি ম্যাচ জিতলে কোয়ালিফাই করা সহজ হয়ে যাবে।’
কাগজে-কলমে আগে থেকেই তুলনামূলক কিছুটা খর্ব শক্তির দল সিলেট। তার ওপর চোটের হানায় যেন তাদের মাঠে নামায় দায়, ‘নিজেদের দুর্ভাগা মনে হচ্ছে। রাকিমের (কর্নওয়াল) পুরো মৌসুম খেলার কথা ছিল। সেও এসে চোট পেয়ে চলে গেল। এখন দলের সবাই মনে হয় ইনজুরড। ব্যাক-আপ ক্রিকেটার বলতে কেউ নেই। ভাঙাচোরা (দল) নিয়েই খেলতে হচ্ছে। পেসার তানজিম হাসান সাকিবের হাঁটুতে লাগছে, আমরা চট্টগ্রামে ওকে পাইনি। আমাদের বোলিং শক্তিও কমে গেছে। যত কিছু আছে, আমাদের দলে সব একসঙ্গে শুরু হয়ে গেছে। আমাদের এখন ১১ জন করাই কঠিন হয়ে যাচ্ছে!’ বলছিলেন অধিনায়ক আরিফুল হক। এদিকে, মানহীন বিদেশীদের ভিড়ে ব্যাটে-বলে এগিয়ে স্থানীয় ক্রিকেটাররা। চট্টগ্রামে আলোচনায় ছিল খেলোয়াড়দের পারিশ্রমিক ইস্যু। বন্দরনগরীতে বরাবরই মাঠের ক্রিকেট হিট। ধারাবাহিকতা ছিল এবারও। সাগরিকায় ব্যাটে-বলে মারকাটারি টি২০ আমেজ। ৮ দিনে ১২ ম্যাচ। যাতে ৬ ইনিংসেই রান ১৯০ প্লাস। থেমেছে রংপুর রাইডার্সের জয়রথ। পয়েন্ট টেবিলের হিসাব-নিকাশও জমিয়ে দিয়েছে চিটাগং। এদিকে মানহীন বিদেশীদের ভিড়ে ব্যাটে-বলে আধিপত্য লোকাল ক্রিকেটারদের। রানের হিসাবে টপ ফাইভে চারজন বাংলাদেশী। উড়তে থাকা তানজিদ তামিম (৪২০ রান) আছেন শীর্ষে। তালিকার একমাত্র বিদেশী চিটাগংয়ের গ্রাহাম ক্লার্ক। বোলিংয়ে সেরা পাঁচের তিনজন বাংলাদেশী। ঢাকা-সিলেটের পর চট্টগ্রাম পর্ব শেষেও টপ উইকেটটেকার ঢাকা এক্সপ্রেস তাসকিন (২২টি)।