প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ফিফা সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনো (ডানে)
একটা সময় মহান শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত ছিলেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সেখান থেকে তিনি প্রতিষ্ঠা করেন গ্রামীণ ব্যাংক। গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে নিয়ে অসাধারণ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ গ্রামীণ ব্যাংককে সঙ্গে নিয়ে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন তিনি। তিনি আবার দারুণ খেলাপ্রমীও। সেই মানুষটি এখন বাংলাদেশ সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ক্রীড়াপ্রেমী মানুষটি আরেকবার নিজের খেলাপ্রেমের স্বাক্ষর রেখেছেন।
এবার প্রধান উপদেষ্টা বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফার সভাপতি জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বৈঠকে ফিফা সভাপতি বাংলাদেশের ফুটবল উন্নয়নে পাশে থাকার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন। সুইজারল্যান্ডের ডাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের বার্ষিক সম্মেলনের এক ফাঁকে বুধবার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে ফিফা প্রধান এ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বাংলাদেশ সরকারের এসডিজি বিষয়ক সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ ও জেনেভায় বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারেক আরিফুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন। প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ক্রীড়াঙ্গনকে কার্বন নিরপেক্ষ করার উদ্যোগের জন্য মুহাম্মদ ইউনূসের প্রশংসা করেন ইনফান্টিনো। দক্ষিণ এশিয়ায় ফুটবলের বিকাশে সহযোগিতারও আশ্বাস দেন তিনি। ফিফা সভাপতি প্রধান উপদেষ্টাকে বলেন, ‘আগামী দুই মাসের মধ্যে আমি বাংলাদেশ সফরে যেতে চাই।’
ড. ইউনূস বাংলাদেশের নারী ফুটবলের জন্য আবাসন ও অন্যান্য অবকাঠামো তৈরিতে সহায়তা চাইলে ফিফা সভাপতি তহবিল যোগানোর আশ্বাস দেন। এ প্রসঙ্গে ইনফান্তিনো বলেন, ফিফা সৌদি আরবেও নারী ফুটবলের উন্নয়নে সহায়তা করবে। সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশীরাও ফিফার এ উদ্যোগে উপকৃত হবে।
বাংলাদেশে চলমান তারুণ্যের উৎসবে যোগ দেওয়ার আমন্ত্রণ পেয়েও আসতে না পারায় দুঃখ প্রকাশ করেন ফিফা সভাপতি।
ক্রীড়াঙ্গনের সঙ্গে আগে থেকেই সম্পৃক্ততা আছে ড. ইউনূসের। ২০২৪ প্যারিস অলিম্পিকের শুভেচ্ছা দূত ছিলেন তিনি। শুধু তাই নয়, শান্তিতে নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০২১ সালের জুলাই মাসে অলিম্পিক লরেল অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত হন। সে সময় জাপানের রাজধানী টোকিওতে অলিম্পিক গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাকে এ অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করা হয়।
তখন পর্যন্ত অলিম্পিক লরেল অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত দ্বিতীয় ব্যক্তিত্ব ড. ইউনূস। খেলাধুলার মাধ্যমে শিক্ষা, সংস্কৃতি ও শান্তিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বীকৃতি দিতে ২০১৬ সালে এই অ্যাওয়ার্ডের প্রবর্তন করা হয়। ২০০৬ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পান ড. ইউনূস। অলিম্পিক লরেল ট্রফি পাওয়ার পর ড. ইউনূস বলেছিলেন, অলিম্পিক লরেল পেয়ে আমি সত্যি সম্মানিত ও অভিভূত।