ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

তানজিদ ঝড়ে প্লে-অফ রেসে ঢাকা

মো. মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ০০:১৮, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

তানজিদ ঝড়ে প্লে-অফ রেসে ঢাকা

বিপিএলে ছক্কায় বাংলাদেশের সবাইকে ছাড়িয়ে গেছেন তানজিদ হাসান তামিম

অবশেষে আরেকটি জয় পেয়েছে ঢাকা ক্যাপিটালস। দশম ম্যাচে মাত্র তৃতীয় জয়। আরেকটি ম্যাচ হারলেই প্লে-অফ রেস থেকে ছিটকে যাবে তারা। কিন্তু নিভে যাওয়ার আগে ফুঁস করে জ¦লে উঠেছে দলটি। টানা দ্বিতীয় জয় তুলে নিয়ে এখন পর্যন্ত রেসে নিজেদের টিকিয়ে রেখেছে ঢাকা। বুধবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে স্বাগতিক চিটাগং কিংসকে ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। আগে ব্যাট করে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান তোলে চিটাগং।

জবাবে তানজিদ হাসান তামিমের ৫৪ বলে অপরাজিত ৯০ রানের ইনিংসে ভর দিয়ে ১৮.১ ওভারে ২ উইকেটে ১৪৯ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় ঢাকা। এর ফলে ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে অবস্থানের উন্নতি ঘটিয়েছে তারা। যদিও ঘরের মাঠে আরেকটি হার দেখেছে চিটাগং, কিন্তু নবম ম্যাচে চতুর্থ হারে ১০ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানেই আছে দলটি। 
টস জিতে চিটাগং কিংস আগে ব্যাটিংয়ে নামে। ধীরগতির ব্যাটিংয়ে ৪০ রানের ওপেনিং জুটি গড়েন নাঈম ইসলাম ও জুবাইদ আকবরী। ১৯ বলে ৩ চার, ১ ছয়ে ২৩ রানে সাজঘরে ফেরেন জুবাইদ। দ্বিতীয় উইকেটে নাঈম ও গ্রাহাম ক্লার্ক ৩১ বলে ৪৯ রানের দ্রুতগতির জুটিতে দলের অবস্থান কিছুটা ভালো করেছেন। ১৮ বলে ২ চারে ১৯ রানে সাজঘরে ফেরার পর আর বড় কোনো ইনিংস খেলতে পারেননি কেউ। নাঈমও ৪০ বলে ৫ চার, ২ ছক্কায় ৪৪ রান করে আউট হন।

শামীম হোসেন পাটোয়ারী ১৬ বলে ১৫, হায়দার আলী ১১ বলে ১ চার ও ১ ছয়ে ১৬ এবং মোহাম্মদ মিঠুন ৮ বলে ১ চার, ১ ছয়ে অপরাজিত ১২ রান করেন। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেটে ১৪৮ রান তোলে চিটাগং কিংস। মুস্তাফিজুর রহমান কোনো উইকেট নিতে না পারলেও ৪ ওভারে ১ মেডেনে মাত্র ১৮ রান দিয়েছেন। মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ৩ ওভারে মাত্র ১৩ রানে এবং নাজমুল ইসলাম অপু ৩ ওভারে ২৭ রান দিয়ে ২টি করে উইকেট নেন। জবাব দিতে নেমে বেশ সতর্ক শুরু করে ঢাকা।

তানজিদ অবশ্য আক্রমণাত্মক মেজাজেই ছিলেন, কিন্তু লিটন কুমার দাস ছিলেন ধীরস্থির। বাঁহাতি পেসার শরিফুল ইসলামের করা চতুর্থ ওভারে টানা দুই ছক্কা হাঁকিয়ে তানজিদ রানের গতি বাড়িয়ে দেন। পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ৫৭ রান তোলে তারা বিনা উইকেটে। এতেই লক্ষ্য অর্জনের ভিত পেয়ে যায় ঢাকা। নবম ওভারের শেষ বলে লিটন বিদায় নেন ২৮ বলে ৩ চারে ২৫ রান করে। ততক্ষণে উদ্বোধনী জুটিতে উঠেছে ৭৫ রান।

লিটন সাজঘরে ফিরলেও তানজিদ দুর্দান্ত ব্যাটিং করছিলেন। মাত্র ২৮ বলেই ফিফটি পেয়ে যান তিনি। এটি চলতি আসরে একটি সেঞ্চুরির পাশাপাশি তৃতীয় হাফ সেঞ্চুরি তানজিদের। দ্বিতীয় উইকেটে মুনিম শাহরিয়ারের সঙ্গে আরও ৩৬ রানের জুটি গড়ে ঢাকাকে জয়ের পথে তুলে দিয়েছেন তানজিদ। মুনিম অবশ্য ১৮ বলে ১ চারে ১২ রান করে আলিস আল ইসলামের অফস্পিনে সাজঘরে ফিরেছেন। এরপর আর কোনো উইকেট হারায়নি ঢাকা। শেষ পর্যন্ত তানজিদের সঙ্গে থেকে সাব্বির রহমান ১১ বল বাকি থাকতেই দলকে জিতিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। তারা ২১ বলে ৩৮ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়েন। 
তানজিদ ৫৪ বলে ৩ চার ও ৭ ছক্কায় ৯০ রানের অপরাজিত থাকেন। দল জিতে যাওয়ায় আরেকটি সেঞ্চুরি বঞ্চিত হয়েছেন তিনি। সাব্বির অপরাজিত ছিলেন ৯ বলে ১ ছক্কায় ১৪ রানে। ১৮.১ ওভারে ২ উইকেটে ১৪৯ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় ঢাকা। আলিস ৪ ওভারে ১৮ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন। অপর উইকেট নেন হুসেইন তালাত। এ নিয়ে দশম ম্যাচে তৃতীয় জয় পেয়ে প্লে-অফের আশা জিইয়ে রেখেছে দলটি। আরও দুই ম্যাচ বাকি তাদের। সেগুলোতেও জয় তুলে নিতে পারলে প্লে-অফ যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে ঢাকারও।

×