ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

উইন্ডিজকে উড়িয়ে বিশ্বকাপের দৌড়ে জ্যোতিরা

স্পোর্টস রিপোর্টার

প্রকাশিত: ০০:১৫, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

উইন্ডিজকে উড়িয়ে বিশ্বকাপের দৌড়ে জ্যোতিরা

সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে ৬৮ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পথে শট খেলছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি

প্রথমবারের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে পূর্ণাঙ্গ দ্বিপক্ষীয় সিরিজ- সফরটা এমনিতেই বাংলাদেশের মেয়েদের জন্য ঐতিহাসিক। তাতে বাড়তি মাত্রা যোগ করে আইসিসি ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপের পয়েন্ট টেবিল। তিন ওয়ানডের দুটিতে জিতলে সরাসরি মিলবে ২০২৫ বিশ্বকাপের টিকিট; দুই লক্ষ্য সামনে রেখে প্রথম ম্যাচে ৯ উইকেটের বড় ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ।

কাজটা হয়ে ওঠে আরও ‘চ্যালেঞ্জিং’। কঠিন সময়েই দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়াল টাইগ্রেসরা। দ্বিতীয় ম্যাচে ৬০ রানের দাপুটে জয়ে সম্ভাবনা বাঁচিয়ে রাখল নিগার সুলতানা জ্যোতির দল। বুধবার সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে অধিনায়ক জ্যোতির (১২০ বলে ৬৮) ব্যাটিং দৃঢ়তায় ৪৮.৫ ওভারে ১৮৪ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। এরপর দুরন্ত বোলিংয়ে ৩৫ ওভারেই প্রতিপক্ষকে গুটিয়ে দেয় ১২৪ রানে। ৩ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা স্পিনার নাহিদা আক্তার। একই ভেন্যুতে তৃতীয় ম্যাচ শুক্রবার দিবাগত রাত ১২টায়।

আয়োজক ভারতসহ টেবিলের শীর্ষ ছয় দল সরাসরি আসন্ন নারী ওয়ানডে বিশ্বকাপে খেলবে। ওডিআই ওমেন্স চ্যাম্পিয়নশিপে ২৩ ম্যাচে ২১ পয়েন্ট নিয়ে বাংলাদেশ অবস্থান ৭ নম্বরে। সিরিজের শেষ ম্যাচ জিততে পারলে জ্যোতিরাও সরাসরি পৌঁছে যাবে বিশ্বমঞ্চে। আর হেরে গেলে সমান পয়েন্ট নিয়েও রান রেটে বিশ্বকাপে জায়গা করে নেবে নিউজিল্যান্ড। সেক্ষেত্রে টিকিটের জন্য বাছাই পর্বে খেলতে হবে বাংলাদেশকে।

আগামী আগস্ট- সেপ্টেম্বরে ৮ দল নিয়ে ভারতে হবে নারী বিশ্বকাপের ১৩তম আসর। আগের ম্যাচে ১৯৮ রানের পুঁজি নিয়ে ৯ উইকেটের হার। এবার তো পুঁজি আরও কম। তবে বিশ্বকাপের আশা জিইয়ে রাখার তীব্র তাড়নায় দারুণ পারফরম্যান্স মেলে ধরলেন বাংলাদেশের বোলাররা। বাংলাদেশের স্পিনত্রয়ী নাহিদা আক্তার, রাবেয়া খান ও ফাহিমা খাতুন মিলে শিকার করেন ৭ উইকেট। পেস বোলিংয়ের ভরসা মারফা আক্তারও অবদান রাখেন দুই উইকেট নিয়ে।

বোলার-ফিল্ডারদের ‘১১০ ভাগ’ প্রচেষ্টায় উচ্ছ্বসিত অধিনায়ক, ‘প্রথমত, আমি মনে করি যে, দলের বিশ্বাস ছিল। যদিও রানটা অনেক কম ছিল। এসব উইকেটে দুইশ’র বেশি রান না করলে বোলারদের জন্য কাজটা অনেক কঠিন। তবে আমরা যখন মাঠে নামি, এর আগেই বলছিলাম যে, সবাই যেন জয়ের বিশ্বাস রাখি। কারণ আমরা যদি জায়গায় বল রাখতে পারি, পরিকল্পনা অনুযায়ী সময়মতো উইকেট নিতে পারি, তাহলে (জেতা) সম্ভব।’ ম্যাচ শেষে বলেন জ্যোতি।  
নিজের ৬৮ রানের মহাগুরুত্বপূর্ণ ইনিংসটি নিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য ছিল দুইশ’র বেশি রান। সেটা আমরা পারিনি। আমি চেষ্টা করেছি, নিজের ধরনের বাইরে গিয়ে অনেক বেশি বল খেলতে এবং থিতু হতে। সবার চেষ্টায় এরকম একটা জয় সম্ভব হয়েছে। সমীকরণের চিন্তা এখনো করছি না। দুটি পয়েন্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল। মোমেন্টামও সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। দল সেটা পেয়েছে। শেষ ম্যাচে আমাদের চেষ্টা এটাই থাকবে। সিরিজ জয়ের একটা চেষ্টা থাকবে। তাহলে বাকি লক্ষ্যটাও পূরণ হয়ে যাবে।’ যোগ করেন তিনি। 
সংক্ষিপ্ত স্কোর : বাংলাদেশ : ১৮৪/১০ (৪৮.৫ ওভার; ফারজানা ১৮, মুর্শিদা ১২, শারমিন ১১, জ্যোতি ৬৮, সোবহানা ২৩, ফাহিমা ৪, স্বর্ণা ২১, রাবেয়া ১, নাহিদা ৯, মারুফা ১*, তৃষ্ণা ০; ডটিন ১/৮, ফ্রেজার ১/২৫, অ্যালেইন ৩/২৪, রামহারাক ৪/৩৩)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ১২৪/১০ (৩৫ ওভার; ম্যাথুস ১৬, জোসেফ ৬, ক্যাম্পবেল ২৮, ডটিন ২, গ্লাসগো ৭, অ্যালেইন ১৫, মাংরু ৬, জেমস ১, ফ্লেচার ৭, ফ্রেজার ১৮*, রামহারাক ১৩; মারুফা ২/৩৫, নাহিদা ৩/৩১, রাবেয়া ২/১৯, ফাহিমা ২/১৭)।
ফল : বাংলাদেশ ৬০ রানে জয়ী। সিরিজ : তিন ম্যাচ সিরিজ ১-১ সমতা।
ম্যাচসেরা : নাহিদা (বাংলাদেশ)।

×