ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৩ জানুয়ারি ২০২৫, ৯ মাঘ ১৪৩১

বিশ্বকাপের সুপার সিক্সে বাংলাদেশ

শাকিল আহমেদ মিরাজ

প্রকাশিত: ০০:১৪, ২৩ জানুয়ারি ২০২৫

বিশ্বকাপের সুপার সিক্সে বাংলাদেশ

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ নারী দলের ক্রিকেটারদের উদ্যাপন, ডানে ম্যাচসেরা আনিসা আক্তার সোবা

জিতলেই সুপার সিক্স নিশ্চিত, হারলে ঝুলে যাবে ভাগ্য, পড়তে হবে রান রেটের মার প্যাঁচে- এমন কঠিন সমীকরণের ম্যাচে স্কটল্যান্ডকে ১৭ রানে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি২০ বিশ্বকাপের সেরা ছয়ে (কার্যত ১২) জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশ। বুধবার মালয়েশিয়ার বাঙ্গিতে টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামা সুমাইয়া আক্তারের দল নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১২০ রানের ‘ফাইটিং’ স্কোর গড়ে। এরপর দুরন্ত বোলিংয়ে ৮ উইকেটে ১০৩ রানে থামিয়ে দেয় প্রতিপক্ষকে। 
৪ ওভারে ১ মেডেন, ২৫ রানের বিনিময়ে ৪ উইকেট নিয়ে ম্যাচসেরা লেগস্পিনার আনিসা আক্তার সোবা। ডিÑ গ্রুপ থেকে তিন ম্যাচের দুটিতে জিতে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয়সেরা দল হিসেবে সুপার সিক্সে উঠল ইয়াং টাইগ্রেসরা। এর আগে নেপালের বিপক্ষে ৫ উইকেটের জয়ে মিশন শুরু করা মেয়েরা পরাশক্তি অজিদের কাঁপিয়ে দিয়ে হারে ২ উইকেটে। ৩ জয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে অস্ট্রেলিয়া।

শুধু নেপালের বিপক্ষে ১ উইকেটের নাটকীয় জয়ে তৃতীয় দল হিসেবে স্কটিশরাও উঠে গেছে সুপার সিক্সে।  চ্যালেঞ্জিং স্কোর তাড়ায় এক পর্যায়ে ২ উইকেটে ৬৯ রান তুলে নিয়েছিল স্কটিশ মেয়েরা। তবে ওভারপ্রতি রানের সমীকরণ ততক্ষণে তাদের জন্য হয়ে ওঠে অনেক কঠিন। বাংলাদেশের বোলার-ফিল্ডাররাও জ্বলে ওঠে ওই সময়ে। ৩৪ রানের মধ্যে প্রতিপক্ষের ৬ উইকেট তুলে নিয়ে তারা নিশ্চিত করে জয়।

শুরুর ধাক্কা সামলে তৃতীয় উইকেটে অর্ধশত রানের জুটি গড়েন পিপা স্প্রাউল ও নিয়াম মুইর। তবে রান রেটের দাবি পুরোপুরি মেটাতে পারেননি কেউই। বিশেষ করে মুইর দুটি ছক্কা মারার পরও ২২ রান করতে বল খেলেন ৩২টি। এই জুটি ভাঙার পর দ্রুত একের পর এক উইকেট হারাতে থাকে স্কটিশরা। ভরসা হয়ে থাকা স্প্রাউলকে বোল্ড করে দেন আনিসা আক্তার সোবা। চারটি চার ও এক ছক্কায় ৪১ বলে ৪৩ রান করেন এই কিপার-ব্যাটার।

স্কটিশদের পরের ছয় ব্যাটারের কেউ পাঁচ রানের বেশি করতে পারেননি। সোবা ৪টি এবং একটি করে উইকেট নিয়েছেন নিশিতা আক্তার নিশি ও হাবিবা ইসলাম। টুর্নামেন্টের আগের দুই ম্যাচে ব্যাটিংয়ে ব্যর্থ বাংলাদেশ এ দিন একটু উন্নতির ছাপ রাখে। যদিও টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে ধাক্কা খায় ম্যাচের দ্বিতীয় বলেই। শূন্য রানে আউট হন সুমাইয়া আক্তার সুবর্ণা। আরেক ওপেনার ফাহমিদা ছোঁয়া রান আউট হন ১২ বলে ১৪ করে।

টিকতে পারেননি সাদিয়া ইসলামও (৬)। তিনে নামা জুয়াইরিয়া ফেরদৌস কিছুটা টেনে নেন দলকে। একটি করে ছক্কা ও চারে ২০ রান করেন এই কিপার-ব্যাটার। আগের ম্যাচে ২৯ রান করা আফিয়া আশিমা এবার একটি করে ছক্কা ও চারে ১৯ বলে করেন ২১। তবু একশ রানের নিচে গুটিয়ে যাওয়ার শঙ্কায় ছিল দল। ৭ উইকেট পড়েছিল ৮৮ রানে। সুমাইয়া আক্তার এ দিন ব্যাটিং অর্ডারে একটু নিচে নেমে খেলেন সাত নম্বরে। ২ চারে ৩৬ বলে অপরাজিত ২৮ রানের দারুণ ইনিংস দলকে ১২০ রানের পুঁজি এনে দেন অধিনায়ক। 
অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি২০ বিশ্বকাপের দ্বিতীয় আসর এটি। ২০২৩ আসরের চ্যাম্পিয়ন ভারত। দক্ষিণ আফ্রিকায় সেবার গ্রুপ-পর্ব ও সুপার সিক্সে দুরন্ত নৈপুণ্যে সত্ত্বেও ¯্রফে রান রেটের কারণে সেমিতে খেলা হয়নি বাংলাদেশের। সম্প্রতি মালয়েশিয়ায় এশিয়া কাপের ফাইনালে উঠেও জেতা হয়নি শিরোপা। এরপর শ্রীলঙ্কায় পিছিয়ে পড়া সিরিজ ২-২এ ড্র করে মেয়েরা। মালয়েশিয়ায় বিশ্বমঞ্চে পা-রাখার আগে দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে সুমাইয়ারা হারায় শ্রীলঙ্কা ও গতবারের রানার্সআপ ইংল্যান্ডকে।

ভরপুর আত্মবিশ্বাস নিয়ে এবার ঠিকই সুপর সিক্সে উঠে গেল সুমাইয়া, নিশি, আনিসারা। এবারও চারটি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলছে ১৬টি দল। প্রতিটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ তিনটি করে দল উঠবে সুপার সিক্সে। ১২ দলের সুপার সিক্স পর্বকে আবার দুটি ভাগে ভাগ (গ্রুপ-১ ও গ্রুপ ২) করা হয়েছে, ছয়টি করে দল নিয়ে। সুপার সিক্সের দুটি গ্রুপ থেকে শীর্ষ চার দল উঠবে সেমিফাইনালে। ফাইনাল ২ ফেব্রুয়ারি।

×