.
ওয়েস্ট ইন্ডিজকে স্পিনের ফাঁদে আটকে মাত্র আড়াই দিনেই মুলতান টেস্টে বড় জয় তুলে নিল পাকিস্তান। ১২৭ রানের জয়ের পথে ক্যারিবীয়দের রীতিমতো উড়িয়ে দিয়ে দুই টেস্টের সিরিজে ১-০ ব্যবধানে এগিয়ে গেল শান মাসুদের দল। ২৫১ রানের জয়ের লক্ষ্যে রবিবার তৃতীয় দিনে ৩৬.৩ ওভারে মাত্র ১২৩ রানে গুটিয়ে যায় ক্রেইগ ব্রেথওয়েটের উইন্ডিজ। প্রথম ইনিংসে তাদের সংগ্রহ ছিল ১৩৭। পাকিস্তান ২৩০ ও ১৫৭। দুর্দান্ত বোলিংয়ে ৯ উইকেট (৪/৬৫ ও ৫/৫০) নিয়ে ম্যাচসেরা অফস্পিনার সাজিদ খান। বাঁহাতি স্পিনে ৬ উইকেট নিয়েছেন নুমান আলি। আবরার ৫। এ নিয়ে টেস্টে পঞ্চমবার প্রতিপক্ষের ২০ উইকেটই নিলেন পাকিস্তানের স্পিনাররা। এই টেস্টে দুই দলের চার ইনিংস মিলিয়ে মোট খেলা হয়েছে ১৭৭.২ ওভার, যা পাকিস্তানের মাটিতে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত টেস্ট ম্যাচের রেকর্ড। একই ভেন্যুতে আগামী শনিবার শুরু ফয়সালার দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট।
দিনের শুরুতে অবশ্য দাপট দেখান জোমেল ওয়ারিক্যান। ক্যারিয়ারসেরা বোলিংয়ে মাত্র ৩২ রানে ৭ উইকেট নিয়েছেন বাঁহাতি এই স্পিনার। পাকিস্তানের মাটিতে কোনো উইন্ডিজ বোলারের সেরা বোলিং এটিই। মুলতানের উইকেট ব্যাটসম্যানদের জন্য হয়ে উঠেছিল বধ্যভূমি। ৩ উইকেটে ১০৯ রান নিয়ে তৃতীয় দিন শুরু করা পাকিস্তানকে বেশিদূর যেতে দেননি ওয়ারিক্যান। দিনের প্রথম বলেই সাউদ শাকিলকে (২) ফিরিয়ে দেন ওয়ারিক্যান। এই স্পিনারের পরের ওভারে লেগ স্লিপে ধরা পড়েন রিজওয়ান (২)। কামরান গুলামকে (২৭) বিদায় করে টেস্টে নিজের প্রথম পাঁচ উইকেটের স্বাদ নেন ওয়ারিক্যান। নুমানের (৯) পর সাজিদকেও (৫) দ্রুত ড্রেসিং রুমে পাঠিয়ে দেন ওয়ারিক্যান। আরেকটি উইকেটেও তিনি রাখেন অবদান। তার সরাসরি থ্রোয়ে রান আউট হন খুররাম শাহজাদ (০)। সালমান আগাকে (১৪) ফিরিয়ে পাকিস্তানের ইনিংস গুটিয়ে দেন গুদাকেশ মোতি। ৪৮ রানের মধ্যে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে ৪৬.৪ ওভারে ১৫৭ রানে গুটিয়ে যায় পাকিস্তান। প্রথম ইনিংসের ৯৩ রানের লিডের সুবাদে প্রতিপক্ষকে ছুড়ে দেয় আড়াইশ’ রানের চ্যালেঞ্জ। সহায়ক উইকেটে এই রানই দলের জন্য যথেষ্ট করে তোলেন সাজিদ।
মাত্র ৩৭ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে ফেলে ক্যারিবিয়ানরা। ব্রেথওয়েটকে (১২) ফিরিয়ে শুরু করেন সাজিদ। তার পরের ওভারে কট বিহাইন্ড হন কেসি কার্টি (৬)। একটু দুই ওভারে চমৎকার দুই ডেলিভারিতে কাভেম হজ (০) ও মিকাইল লুইকে (১৩) বোল্ড করে দেন। নুমানের বলে এলবিডব্লিউর বিপক্ষে রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান জাস্টিন গ্রিভস (৯)। তাকে নিজের পরের ওভারে এলবিডব্লিউ করেই ফেরান নুমান। বড় ব্যাটিং ধসে ৫৪ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে তখন ভীষণ চাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। সেখান থেকে আর তাদের ঘুরে দাঁড়াতে দেননি আবরার। টেভিন ইমলাককে (১৪) কট বিহাইন্ড করার কয়েক ওভার পর এই লেগ স্পিনার পর পর দুই বলে বিদায় করেন কেভিন সিক্লেয়ার (১০) ও মোতিকে (০)। সতীর্থদের ব্যর্থতার দিনে একপ্রান্তে লড়াই চালিয়ে ৪৮ বলে ফিফটি করেন আলিক আথানেজ (৫৫)। তাকে এলবিডব্লিউ করে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন সাজিদ। ওয়ারিক্যানকে বোল্ড করে পাকিস্তানকে জয়ের উল্লাসে ভাসান আবরার। ১২৩ রানে দাঁড়িয়েই শেষ ৪ উইকেট হারিয়ে গুটিয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।