.
চলমান ১১তম বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি২০ আসরে সবার আগে প্লে-অফ নিশ্চিত করেছে রংপুর রাইডার্স। দলটির ধারেকাছে কেউ নেই। তবে রবিবার বেশ ভালো অবস্থানে উঠে এসেছে ফরচুন বরিশাল। এদিন জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে তামিম ইকবালের দল ৬ উইকেটে হারিয়েছে স্বাগতিক চিটাগং কিংসকে। এর ফলে ৭ ম্যাচে পঞ্চম জয় পেয়ে ১০ পয়েন্ট নিয়ে এককভাবে দ্বিতীয় স্থানে এখন গত আসরের চ্যাম্পিয়ন বরিশাল। আগে ব্যাট করে চিটাগং নির্ধারিত ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২১ রানের মামুলি সংগ্রহ গড়ে। জবাবে ডেভিড মালানের অর্ধশতকে ১৬.৫ ওভারে ৪ উইকেটে ১২২ রান তুলে জয় ছিনিয়ে নেয় বরিশাল। ফলে প্লে-অফের পথে অনেকখানি এগিয়ে গেছে তারা। আর এ নিয়ে ঘরের মাঠে টানা দুই ম্যাচ হেরে পিছিয়ে পড়েছে চিটাগং। ৭ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট দলটির।
টস জিতে এদিন চিটাগংকে আগে ব্যাটিংয়ে পাঠায় বরিশাল। শুরুতেই বরিশালের বোলারদের দাপটে বিপর্যস্ত হয়েছে চিটাগং। নিয়মিত বিরতিতে উইকেট হারিয়ে পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ৫ উইকেটে মাত্র ৩৯ রান তুলতে পেরেছে তারা। দুই পেসার রিপন মণ্ডল ও ফাহিম আশরাম রীতিমতো ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছেন। তাই ভালো খেলতে থাকা ওপেনার উসমান খানও ১৩ বলে ৩ চার, ১ ছক্কায় ১৯ রান করে বিদায় নিয়েছেন রিপনের বলে। তিনি ৪ বলে ৮ রান করা গ্রাহাম ক্লার্ককেও সাজঘরে ফিরিয়েছেন। আর ফাহিম শিকার করেছেন পারভেজ হোসেন ইমন (১), হায়দার আলী (১) ও শামীম হোসেন পাটোয়ারিকে (৫)। এরপর অধিনায়ক মোহাম্মদ মিঠুন ছাড়া আর কেউ বেশিক্ষণ উইকেটে থাকতে পারেননি। তানভীর ইসলামের বাঁহাতি স্পিনে আলিস আল ইসলাম (০) রানে সাজঘরে ফিরেছেন। তিনি পরবর্তীতে মিঠুনকেও শিকার করেন। তবে মিঠুন ৩৪ বলে ১ চার, ২ ছক্কায় ৩৯ রানে বিদায় নেন। তখন চিটাগংয়ের রান ৭ উইকেটে ৮৭। আটে নেমে আরাফাত সানি ৩৪ বলে ২ চারে ২৭ রানে অপরাজিত থাকেন। তার এমন ব্যাটিংয়েই চিটাগং সম্মানজনক একটা পুঁজি পেয়েছে। ২০ ওভারে ৮ উইকেটে ১২১ রানের মামুলি সংগ্রহ পায় তারা। ৩টি করে উইকেট নেন রিপন ও ফাহিম। এছাড়া তানভীর নেন ২ উইকেট।
জবাব দিতে নেমে বরিশালেরও শুরুটা ভালো হয়নি। দলীয় ১৬ রানের মধ্যে সাজঘরে ফেরেন অধিনায়ক তামিম (৮) ও তাওহিদ হৃদয় (১)। ফলে পাওয়ার প্লে’র ৬ ওভারে ২ উইকেটে মাত্র ২৮ রান করতে পেরেছে বরিশাল। পরবর্তীতে মুশফিকুর রহিম ১০ বলে ১ চারে ১১ এবং মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ১১ বলে ২ চারে ১৬ রানে সাজঘরে ফেরেন। ফলে ৫৩ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে বিপাকে পড়ে বরিশাল। ততক্ষণে ৯.৩ ওভার পেরিয়েছে। তবে এমন চাপের মুখে ওপেনিংয়ে নেমে মালান দুর্দান্ত ব্যাটিং করেছেন। তিনি মোহাম্মদ নবির সঙ্গে পঞ্চম উইকেটে অবিচ্ছিন্ন থেকে ৬৯ রানের জুটি গড়েছেন মাত্র ৪৪ বল থেকে। এতেই ১৯ বল হাতে রেখে জয় ছিনিয়ে নিয়েছে বরিশাল। মালান ৪১ বলে ৩ চার, ২ ছক্কায় ৫৬ রানে অপরাজিত থেকে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন। সঙ্গে ছিলেন নবি ২১ বলে ৩ চারে ২৬ রানে অপরাজিত। ১৬.৫ ওভারে ৪ উইকেটে ১২২ রান করে বরিশাল। ডানহাতি পেসার সৈয়দ খালেদ আহমেদ ৩.৫ ওভারে ২৭ রানে ২ উইকেট নেন। এই জয়ে প্লে-অফে ওঠার রেসে বেশ ভালো অবস্থানেই পৌঁছে গেল বরিশাল। তবে নিজেদের মাঠে পরপর দুটি বড় ম্যাচেই হেরে কিছুটা পিছিয়ে পড়েছে চিটাগং। আরও দুই ম্যাচ তারা সাগরিকায় খেলার সুযোগ পাবে দুর্বলতর দুর্বার রাজশাহী ও ঢাকা ক্যাপিটালসের বিপক্ষে। সেই ম্যাচ দুটি জিতে প্লে-অফের রাস্তায় এগিয়ে যেতে উন্মুখ তারা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর ॥ চিটাগং কিংস ইনিংস- ১২১/৮; ২০ ওভার (মিঠুন ৩৫, আরাফাত ২৭*, উসমান ১৯; ফাহিম ৩/১২, রিপন ৩/২৩, তানভীর ২/১৪)।
ফরচুন বরিশাল ইনিংস- ১২২/৪; ১৬.৫ ওভার (মালান ৫৬*, নবি ২৬*, মাহমুদুল্লাহ ১৬, মুশফিক ১১; খালেদ ২/২৭,আরাফাত ১/৩৩)।
ফল ॥ ফরচুন বরিশাল ৬ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা ॥ ডেভিড মালান (ফরচুন বরিশাল)।