ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ১৫ জানুয়ারি ২০২৫, ২ মাঘ ১৪৩১

বিপিএল মাতাচ্ছেন দেশীয় তারকারা

মো. মামুন রশীদ

প্রকাশিত: ০০:০৭, ১৫ জানুয়ারি ২০২৫

বিপিএল মাতাচ্ছেন দেশীয় তারকারা

.

চলমান ১১তম বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি২০ আসরে ঢাকায় হওয়া প্রথম পর্ব ও সিলেটে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় পর্ব শেষ হয়েছে। আর এ দুই পর্ব শেষে সিলেট স্ট্রাইকার্স নিজেদের কিছুটা উন্নতি করতে পারলেও ঢাকা ক্যাপিটালস ও দুরন্ত রাজশাহী অবস্থান হয়েছে নড়বড়ে। সর্বাধিক ৭ ম্যাচ খেলে অপরাজিত রংপুর রাইডার্স সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে। ১৪ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফ পর্বে এক পা দিয়েই রেখেছে। চিটাগং কিংস ৪ ম্যাচে আর গত আসরের চ্যাম্পিয়ন ফরচুন বরিশাল ৫ ম্যাচে ৬ পয়েন্ট করে নিয়ে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থানে থেকে কিছুটা সুবিধাজনক পর্যায়ে আছে। তবে সমান ৪ পয়েন্ট করে নিয়ে ৫ ম্যাচ খেলা খুলনা টাইগার্স এবং ৬ ম্যাচ করে খেলা সিলেট ও রাজশাহী এখন পর্যন্ত সঠিক নিশানা খুঁজে পায়নি। আর ঢাকা ৭ ম্যাচে একমাত্র জয় পেয়ে ছিটকে পড়ার শঙ্কায় আছে। বৃহস্পতিবার তৃতীয় পর্যায়ে চট্টগ্রামে শুরু হচ্ছে আবার লড়াই। এই পর্বে ১২টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে এবং এখানেই দলগুলোর ভাগ্য অনেকখানি নির্ধারিত হয়ে যাবে। এখন পর্যন্ত ব্যক্তিগত নৈপুণ্যে ব্যাটিংয়ে সিলেটের জাকির হাসান ২৫১ রান নিয়ে সবার ওপরে এবং ১৪ উইকেট নিয়ে শীর্ষে রাজশাহীর পেসার জাকির হাসান।
বিপিএলের সিলেট পর্ব চলার সময়েই দলগুলোর বিদেশী তারকাদের একটা অংশ ফিরে গেছেন।

আরব আমিরাতের ইন্টারন্যাশনাল লিগ টি২০ (আইএল টি২০), দক্ষিণ আফ্রিকা এসএ টি২০ খেলার জন্য দেশ বিপিএল ছেড়েছেন কয়েকজন তারকা। টানা ৭ জয়ে একমাত্র অপরাজিত রংপুরের ইংলিশ তারকা ওপেনার অ্যালেক্স হেলস, বরিশালের পাকিস্তানি পেসার শাহীন শাহ আফ্রিদি আইএল টি২০ খেলতে চলে গেছেন। বরিশালের আরেক পারফর্মার উইন্ডিজ অলরাউন্ডার কাইল মেয়ার্স এসএ টি২০ খেলতে বিপিএল ছেড়েছেন। বিশ^ব্যাপী প্রায় একই সময়ে বেশ কিছু ফ্র্যাঞ্চাইজি টি২০ আসরের জন্য অনেক বড় তারকাকেই টানতে পারেনি বিপিএল। এর মধ্যে এই তারকারা যাওয়াতে আরও রং হারিয়েছে আসরটি। দলগুলো তাই ঘাটতি পূরণে দ্বিতীয় সারির পুরনো তারকাদের দলে টানছে। এ কারণে গত দুই পর্বে দুর্বলতর দলগুলোর জন্য একটি সুযোগ তৈরি হয়েছে চট্টগ্রামে ভালো কিছু করার। নিজেদের মাঠে ৫ ম্যাচ খেলবে চিটাগং কিংস। বৃহস্পতিবার শুরু হতে যাওয়া চট্টগ্রাম পর্বে এই ৫ ম্যাচে চিটাগংয়ের ভাগ্য অনেকটাই নির্ধারিত হয়ে যাবে। সবচেয়ে কম ৪ ম্যাচ খেলে তিনটিই জিতে নিজেদের শক্তির প্রমাণ দিয়েছে তারা। নিজেদের মাঠে এবার আর অন্তত ৩ ম্যাচ জিততে পারলেই প্লে-অফ পর্বে খেলার মতো দৃঢ় অবস্থান তৈরি হয়ে যাবে চিটাগংয়ের। 
গত আসরের চ্যাম্পিয়ন বরিশাল ৫ ম্যাচ খেলে ৩টি জিতেছে, চট্টগ্রামে খেলবে আরও ৩ ম্যাচ। এই ম্যাচগুলোর ফল তাদেরও পরিস্থিতি পরিষ্কার করে দেবে। খুলনা টাইগার্স খুব ভালোভাবে বিপিএল শুরু করে এবং টানা দুই জয় পায়। কিন্তু সিলেট পর্বে তারা পরাজয়ের হ্যাটট্রিক করে পিছিয়ে পড়েছে। চট্টগ্রামে তাদের ম্যাচ আছে ৪টি। নিশ্চিতভাবেই মহা গুরুত্বপূর্ণ তাদের জন্য এই ম্যাচগুলো। প্লে-অফ রেসে টিকে থাকার জন্য রেড লাইনে আছে বাকি তিনটি দল- সিলেট স্ট্রাইকার্স, দুর্বার রাজশাহী ও ঢাকা। আরেকটি ম্যাচ হারলেই ঢাকার প্লে-অফ স্বপ্ন ধূলিসাৎ হয়ে যাবে। কারণ ৭ ম্যাচে মাত্র একটি জয়ে ২ পয়েন্ট নিয়ে সবার নিচে অবস্থান দলটির। চট্টগ্রাম পর্বে বরিশাল, সিলেট ও চিটাগংয়ের বিপক্ষে অগ্নিপরীক্ষা তাদের। এই পর্বে প্রথম ম্যাচেই শক্তিশালী বরিশালের মুখোমুখি হবে দলটি। সেই ম্যাচসহ বাকিগুলোও জেতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঢাকার জন্য রেসে থাকতে হলে।

বাকি ৫ ম্যাচেই সবই জিততে হবে যা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ তাদের জন্য। রাজশাহীর ৪টি এবং সিলেটের ৩টি ম্যাচ আছে এই পর্বে। প্লে-অফ রেসে টিকে থাকার জন্য উভয় দলকে অন্তত দুটি করে ম্যাচ জিততে হবে। এ কারণে চট্টগ্রাম পর্বই হতে যাচ্ছে এবার বিপিএলের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পর্যায়। সিলেট পর্বের ১২ ম্যাচ বেশ জমজমাট হয়েছে। 
অন্তত ৪ ইনিংস ব্যাট করেছেন এমন ব্যাটারদের মধ্যে সর্বাধিক ২৩০.২৩ স্ট্রাইকরেট নিয়ে রংপুরের অধিনায়ক নুরুল হাসান সোহান সবার ওপরে। ঢাকার সাব্বির রহমান ২১৯.২৩ ও রংপুরে খুশদিল শাহ ১৯৩.৬৯ স্ট্রাইকরেট নিয়ে তার পরে। চিটাগংয়ের উসমান খান ৪ ইনিংসে ১ সেঞ্চুরি, ২ ফিফটিতে ২৪৯ এবং ঢাকার তানজিদ হাসান ৭ ইনিংসে ১টি করে ফিফটি ও সেঞ্চুরিতে ২৪৬ রান করে যথাক্রমে দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থানে। বোলিংয়ে ৬ ম্যাচে রাজশাহীর পেসার তাসকিন ১৪, খুলনার বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার রনি ৫ ইনিংসে ও সিলেটের তানজিম হাসান সাকিব ৬ ইনিংসে ১১ উইকেট করে নিয়ে শীর্ষ তিনে।

×